Pages

Wednesday, June 15, 2011

আমার মন খারাপ

আমার মন খারাপ। ভীষণ মন খারপ। 

[ ক. ] 
মনে করো যেন বিদেশ ঘুরে 
মাকে নিয়ে যাচ্ছি অনেক দূরে। 
তুমি যাচ্ছ পালকিতে মা, চড়ে 
দরজা দুটো একটুকু ফাঁক করে, 
আমি যাচ্ছি রাঙা ঘোড়ার পরে 
টগবগিয়ে তোমার পাশে পাশে। 
রাস্তা থেকে ঘোড়ার খুরে খুরে 
রাঙা ধুলোয় মেঘ উড়িয়ে আসে। 

গত কয়েকদিন হলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই বীরপুরুষ কবিতাটি ঘুমানোর সময় বার বার মনে পড়ছে। অবশ্য আমার মনে পড়ার কারণও আছে। 

[ খ. ] 
গত কয়েক বছর পূর্বে আমার মা ইন্তেকাল করেছেন। ইদানীং অফিস থেকে বাসায় যখন ফিরি তখন দেখি আমার রুমমেট ফয়সাল দিব্যি ওর মায়ের সাথে ফোনে কথা বলে। প্রায় নিয়মিতই আধা ঘন্টা, এক ঘন্টা, কথা বলে। এই কথা সেই কথা নানা কথা। মাংস তরকারী রান্নার সময় বলে, মরিচ কতটুকু দিব ? পায়েস কীভাবে রান্না করবো ? ইত্যাদি ইত্যাদি...। 

[ গ. ] 
ইদানীং ব্যাপারটা আমায় চরম পেইন দিচ্ছে। সারাদিনের ক্লান্তি নিয়ে যখন বাসায় ফিরি তখন এরকম ঘটনা। কোন কিছু ভাল লাগছেনা ইদানীং। এইতো সেদিন এসবির এক বিখ্যাত ব্লগার আমার অসুস্থতার কথা শুনে মেইলে জানতে চেয়েছে, কেন আমি বারবার অসুস্থ হচ্ছি ? আসলে কী আর বলবো ! বলার কিছু খুঁজে পাইনা। 

[ ঘ. ] 
এক সময় প্রচুর লিখতাম। ল্যাপটপ নিয়ে কিংবা কলম আর ডায়েরী নিয়ে বসলেই লেখা হয়ে যেতো। ইদানীং লিখতেও ইচ্ছে করেনা। লিখতে বসলেই দুনিয়ার ঘুম চোখে এসে হামলা চালায়। গত পাঁচ বৎসরের মধ্যে রাত দুইটার আগে ঘুমানোর কথা ভাবতেই পারিনী। আর এখন মেজাজটাই বিগড়ে যায়। 

[ ঙ, ] 
নিত্যদিন সকালে অফিসে যাবার সময় আরেক যন্ত্রণা এখন শুরু হয়েছে। বাসে উঠলেই অতিরিক্ত বাস ভাড়া নিয়ে গন্ডোগোল। পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য সিটিং বাসে উঠলেও শান্তি পাইনা। যাত্রীদের সাথে হেলপারদের বাকবিতন্ডতা নিত্যদিনের সঙ্গী। 

[ চ. ] 
কী আর করা। কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়-এর নন্দলাল-- কবিতার দুটো লাইন দিয়ে শেষ করছি.... 
তাই শুয়ে শুয়ে কষ্টে বাঁচিয়া রহিল নন্দলাল.... 
সকলে বলিল--ভালো রে নন্দ, বেঁচে থাক চিরকাল...।

No comments:

Post a Comment