Pages

Sunday, May 30, 2010

৭৩৬ জন বন্ধুর সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলাম


গতরাতে শুয়ে শুয়ে ভাবতেছিলাম। হঠাৎ আমার মুঠোফোনে একটা মেসেজ আসল। খুলে দেখি ব্রেকিং নিউজ। তাতে লেখা ফেসবুক ব্লকড ইন বাংলাদেশ। মুহূর্তেই মনটা বিষণ্ণ হয়ে গেল। খবরটা নিষ্চিত হবার জন্য রেড়িও এবিসির রাতের শো ক্যাফে ৮৯.২ তে আরজে কিবরিয়াকে মেসেজ দিলাম। উত্তরে বলল, ফেসবুক হেচ বিন শার্ট ডাউন।
হায় আল্লাহ। এটা কী হল। প্রতিদিনের নিত্য যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল ফেসবুক। বিশেষ করে আমার প্রিয় আপু মুক্তি [ বর্তমানে লন্ডনে বসবাসরত ] । তার সাথে আমি ২/৩ দিন পরপরই ফেসবুকে যোগাযোগ করতাম। জাতিসংঘে কর্মরত ভাইয়া জহির [বর্তমানে সুদানে আছেন ] । তার সাথে একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম ছিল ফেসবুক। কানাডা, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ প্রায় ৩০টিরও অধিক দেশে আমার সংবাদিক-লেখক-সাহিত্যিক বন্ধু আছে যাদের সাথে আর যোগাযোগ করতে পারবনা ভাবতেই অবাক লাগে।

Thursday, May 13, 2010

সম্ভাবনার বাংলাদেশ [৮ম কিস্তি ]




[সুজলা সুফলা শষ্য শ্যামল আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ। এ দেশে রয়েছে অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদ। এ সম্পদ সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক সমৃদ্ধশালী দেশ। এসব সম্ভাবনার কথা নিয়ে এই বিশেষ রচনাটি আরটিএনএন এর পাঠকদের জন্য ধারাবাহিকভাবে লিখছেন সাইফ বরকতুল্লাহ । আজ প্রকাশিত হল এর ৮ম কিস্তি।]

১. গারোর বুকে মধুটিলা হতে পারে কোটি টাকার রাজস্ব
শেরপুরের সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড় এলাকায় নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক নৈস্বর্গ মধুটিলা ইকোপার্ক এখন হাজারো ভ্রমণপিপাসুর পথ চারণায় মুখর। ময়মনসিংহ বন বিভাগ ১৯৯৯ সাল থেকে নালিতাবাড়ী উপজেলার সমশ্চূড়া ইউনিয়নের ২৯০ একর এবং পোড়াগাঁও ইউনিয়নের ৯০ একরসহ মোট ৩৮০ একর পাহাড়ি টিলার ওপর মধুটিলা ইকোপার্কে এর প্রাথমিক অবকাঠামো ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ দুই দফায় প্রায় ৪কোটি টাকা ব্যয়ে শেষ করে। এরপর ২০০৬-০৭ অর্থ বছর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইকো পার্কের যাত্রা শুরু হয়।
শুরুর বছরেই ইকোপার্কের বিভিন্ন খাত থেকে সরকারের রাজস্ব খাতে জমা হয় ৫২ হাজার ৮৩১ টাকা। এরপর ২০০৭-০৮ অর্থ বছরে ১৩ লাখ ৬৯ হাজার ৬৫৮ টাকা এবং ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে আয় হয় ২৮ লাখ ৩৯ হাজার ৩০৬ টাকা।
চলতি অর্থ বছরে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা আয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
প্রতি বছর এই পার্কে বিশেষ করে শীত মওসুমে প্রতিদিন শ’ শ” বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, মটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে শেরপুরসহ দেশের প্রান্ত থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থী পিকনিক, শিা সফর ও ভ্রমণে আসে।
সূত্র জানায়, এই ইকোপার্কে বর্তমানে সুদৃশ্য প্রধান ফটক, ডিসপ্লে মডেল, তথ্য কেন্দ্র, গাড়ি পার্কিং জোন, ক্যান্টিন, ওয়াচ টাওয়ার, মিনি চিড়িয়াখানা, মনোরম লেক ও বোটিং, স্টার ব্রিজ, স্ট্রেম্পিং রোড বা সুউচ্চ পাহাড়ে উঠার জন্য ধাপ রাস্তা (সিঁড়ি), মিনি শিশু পার্ক, মহুয়া রেস্টহাউজ, স্টিলের ছাতা, ইকো ফ্রেন্ডলি ব্রেঞ্চ, আধুনিক পাবলিক টয়লেট, পার্কের প্রবেশ পথ ধরে যাওয়া বিভিন্ন সড়কের পার্শ্বে স্থাপন করা হয়েছে হাতি, হরিণ, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, সিংহ, বানর, কুমির, ক্যাঙ্গারু, মৎস্য কন্যা, মাছ, ব্যাঙসহ বিভিন্ন জীব জন্তুর ভাস্কর্য।
এছাড়া বিরল প্রজাতি, পশু পাখি আকৃষ্ট, ও সৌন্দর্য বর্ধক প্রজাতির গাছের বাগান, মৌসুমী ফুলের বাগান এবং সাত রঙের গোলাপ বাগান রয়েছে।
এসব উপভোগের জন্য ইকোপার্কে ঢুকতে প্রবেশ মূল্য ধরা হয়েছে প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিজন ৫ টাকা এবং শিশু কিশোরদের জন্য ২ টাকা। বাস, ট্রাক ও মিনিবাস ৫০ টাকা, মাইক্রোবাস ও জিপ ৩০ টাকা, বেবি ট্যাক্সি বা অটো রিক্সা ১৫ টাকা,
এছাড়া ইকোপার্কের ভেতরে পেডেল বোট ১২ টাকা, নৌকা চালানো ৬ টাকা, ওয়াচ টাওয়ারে উঠা প্রতিজন ২ টাকা, নাটক বা চলচ্চিত্রের শুটিং (৮ ঘন্টা) ১০০০ টাকা, রেস্টহাউজ ভাড়া (শুধুমাত্র দিনের বেলা) ৪৫০০ টাকা, শিশু পার্কে ২ টাকা এবং টয়লেটসহ গোল ঘরের (রান্না-বান্না ও খাওয়া-দাওয়া জন্য সুব্যবস্থা) প্রতিদিন ৬০০ টাকা।
মধুটিলা ইকোপার্ক ঘিরে শেরপুরের পরিচিতি দ্রুত প্রসার ঘটায় জেলার সচেতন মহল মনে করছে, সরকারের উচিত এই ইকোপার্ককে পর্যটন খাতে নিয়ে দেশের অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্র করা হলে সীমান্তবর্তী এই গারো পাহাড় এলাকার অবহেলিত পাহাড়ি জনসাধারণের ভাগ্যের উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও বেকার সমস্যার সমাধান হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের রাজস্ব খাতেও যোগ হবে বাড়তি আয়।

২. ব্যাঙ ও ফড়িং দিয়ে মশক নিধন
[ মাত্র কয়েক হাজার টাকায় উৎপাদন করা যাবে লাখ লাখ ব্যাঙাচি ও নিম্ফ ]

ব্যাঙ এবং ফড়িং দিয়ে সহজেই মশা নিধন সম্ভব। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কবিরুল বাশার পরিবেশবান্ধব এই সহজ পদ্ধতিটি উদ্ভাবন করেছেন। যেকোনো ধরনের মশা জন্মলগ্নেই নিধন করবে ব্যাঙ এবং ফড়িং। তিকর রাসায়নিক মশা নাশকের প্রাকৃতিক বিকল্প হিসেবে শতভাগ সফলতার সঙ্গে এদের ব্যবহার করা যাবে। এতে সাশ্রয় হবে সরকারের কোটি কোটি টাকা। তবে এ জন্য সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি দরকার মানুষের সচেতনতা। ব্যাঙ এবং ফড়িং না মেরে তাদের নিরাপদ আবাস গড়ে তুলতে হবে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কবিরুল বাশার ব্যাঙ এবং ফড়িং দিয়ে মশা দমনের এ পরিবেশবান্ধব ও সহজ পদ্ধতিটি উদ্ভাবন করেছেন।
জানা গেছে, ব্যাঙ, ফড়িং এবং মশা এ তিনটি প্রাণীই তাদের জীবনের প্রথম দশায় পানিতে বাস করে। ব্যাঙের ব্যাঙাচি, ফড়িংয়ের নিম্ফ (অপূর্ণাঙ্গ দশা) এবং মশার লার্ভা (শুককীট) একই ধরনের পানিতে জন্মগ্রহণ করে। জীবনকালের শুরুর এ সহাবস্থানের কারণেই কবিরুল বাশার মশা দমনে ব্যাঙ এবং ফড়িংকে কাজে লাগানোর চিন্তা করেন। পরবর্তীকালে গবেষণাগার এবং উন্মুক্ত জলাশয় উভয় েেত্রই তিনি ব্যাঙাচি ও নিম্ফ দিয়ে মশা দমনে চমৎকার ফল পান। ব্যাঙাচি ও ফড়িংয়ের নিম্ফ মশার লার্ভাকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে।
তিনি জানান, ব্যাঙাচি ও ফড়িংয়ের নিম্ফ দিয়ে মশা দমন সাশ্রয়ী, সহজ প্রয়োগযোগ্য, পরিবেশবান্ধব, প্রাণী তথা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্যও নিরাপদ। একই সঙ্গে এ পদ্ধতি মানুষকে রাসায়নিক মশানাশকের ব্যবহার থেকে সরে আসতে সাহায্য করবে। ফলে রাসায়নিক মশানাশকের তিকর প্রভাব থেকে রা পাবে মানুষ।

কবিরুল বাশার জানান, জলাশয়ে স্বাভাবিকভাবে জন্মগ্রহণ ছাড়াও গবেষণাগারে খুব সহজেই ব্যাঙাচি বা নিম্ফ উৎপাদন করা যায়। নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রার কন্ট্রোল ইনসেক্ট রিআরিং হাউস স্থাপন করে বছরজুড়ে ব্যাঙাচি ও নিম্ফ উৎপাদন করা যাবে। হাউসটি স্থাপন করতে খরচ পড়বে প্রায় সত্তর লাখ টাকা। কিন্তু মাত্র কয়েক হাজার টাকায় উৎপাদন করা যাবে লাখ লাখ ব্যাঙাচি ও নিম্ফ। হাউসটিও ব্যবহারযোগ্য থাকবে আজীবন। হাউনে ব্যাঙাচি ও নিম্ফ উৎপাদন করে ঢাকাসহ দেশের মশাপ্রবণ এলাকাগুলোর জলাশয়ে ছেড়ে দিলে মশা প্রাকৃতিকভাবেই প্রায় শতভাগ দমন করা সম্ভব হবে। ব্যাঙ শুধু ব্যাঙাচি দশায় মশা ভণ করলেও ফড়িং নিম্ফ দশা ও পূর্ণবয়স্ক উভয় দশাতেই মশা খেয়ে থাকে।
কবিরুল বাশার ফাইলেরিয়া বা গোঁদ রোগের বিস্তারে কিউলেক্স মশার ভ‚মিকা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে মশাটি দমনের পদ্ধতিগুলো উদ্ভাবন করেন। কিউলেক্স কুইনকুইফেসিয়েটাস মশা ফাইলেরিয়া রোগের বিস্তার ঘটায়। ঢাকার মশার মধ্যে প্রায় ৯০ ভাগই হচ্ছে এই কিউলেক্স মশা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৯৯৭ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী বছরে বিশ্বের ৭৩টি দেশের বারো কোটি লোক ফাইলেরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। বাংলাদেশের ৩৪টি জেলায় ফাইলেরিয়ার প্রাদুর্ভাব রয়েছে। এর মধ্যে ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও মেহেরপুর জেলায় এ রোগের প্রাদুর্ভাব তুলনামূলকভাবে বেশি। রোগটি দমনে ওইসব অঞ্চলে সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁচ বছর মেয়াদি ডোজ বিলিয়ে থাকে। এ প্রজাতির মশা ডোবা, নর্দমা, নালা, ড্রেন, পচা পুকুর ও জমে থাকা ময়লাপানিতে বংশবিস্তুার করে। এসব পানিতেই জন্মে ব্যাঙাচি ও নিম্ফ।
তিনি জানান, নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রার জন্য কন্ট্রোল ইনসেক্ট রিআরিং হাউস স্থাপন করতে হবে। এজন্য তিনি এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বরাবর সত্তর লাখ টাকার একটি প্রজেক্ট দাখিল করেছেন। প্রজেক্ট পাস হলে বছরজুড়ে সারা দেশের মশা নিধনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ নিম্ফ ও ব্যাঙাচি উৎপাদন করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন মশাপ্রবণ এলাকার জলাশয়গুলোতে নিম্ফ ও ব্যাঙাচি ছেড়ে দিলে মশা নিধনে সরকারকে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে রাসায়নিক মশানাশক ব্যবহার করতে হবে না। বরং প্রাকৃতিক উপায়েই মশা প্রায় শতভাগ দমন করা সম্ভব হবে। তবে এর জন্য সরকারের উদ্যোগের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের সচেতনতাও দরকার। ব্যাঙ এবং ফড়িং না মেরে তাদের নিরাপদ আবাস গড়ে তুলতে হবে। ব্যাঙাচি ও নিম্ফ দিয়ে একমাত্র এডিস মশা নিধন করা সম্ভব হবে না। এছাড়া অন্যান্য সকল প্রকারের মশাই নিধন করা যাবে।
৩. আলু রফতানির অপার সম্ভাবনা
বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব, দুবাই, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও শ্রীলঙ্কায় আলু রফতানির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। ভারত উল্লেখিত দেশগুলোতে কমবেশি প্রায় ২শ মার্কিন ডলারে প্রতিটন আলু রফতানি করছে। অপরদিকে পাকিস্তান রফতানি করছে প্রতিটন প্রায় ১শ ৯০ মার্কিন ডলারে।
ইতিপূর্বে বাংলাদেশ থেকে দুবাই আলু রফতানি করা হয়েছে টন প্রতি প্রায় ২শ ২০ মার্কিন ডলারে। বাংলাদেশকে ভারত ও পাকিস্তানের সাথে প্রতিযোগিতা করে বিশ্ববাজারে আলু রফতানি করতে হলে তাদের কাছাকাছি দামে আলু রফতানি করতে হবে অথবা আলু রফতানির অনুক‚লে নগদ সহায়তার পরিমাণ বাড়াতে হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়া গেলে দুবাই, সৌদি আরব, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বে আলু রফতানির সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যাবে বলে রফতানিকারকরা জানান। উল্লেখ্য, সারাদেশে এ মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। সরকার আলু বীজ, সার ও কীটনাশক ওষুধের মূল্য হ্রাস করায় এবং আবহাওয়া অনুক‚লে থাকার কারণেই এবার আলু উৎপাদনের ল্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।

চলতি বছর দেশে প্রায় ৭৫ লাখ টন আলু উৎপাদনের ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। উৎপাদন ল্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গিয়ে কমবেশি ১ কোটি টনে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।
সুতরাং উপরের বিষয় সমূহ যদি প্রপারলি ইম্পি­মেনটেশন করা যায় তবে বাংলাদেশ আরো এগিয়ে যাবে।
[ চলবে ]

তথ্যসূত্র : ১.দৈনিক ইত্তেফাক ২. দৈনিক নয়াদিগন্ত ৩. আরটিএনএন ৪.দৈনিক সমকাল

Wednesday, May 5, 2010

উপন্যাসের উপাত্ত প্রয়োজন শুধু প্রেম উপজীব্য নয়


সাইফ বরকতুল্লাহ : লেখালেখির শুরু কবে থেকে?
তাহমিনা কোরাইশী : ছোট বেলা থেকে সাহিত্য পরিমন্ডলে বেড়ে ওঠা। শানি-নগর নানা বাড়ির শেষ মাথায় প্রফেসর মনসুর উদ্দীনের বাড়ি। তিনি আমার নানীর বড় ভাই। আমার খালা লেখিকা হাজেরা নজরুল। এ বাড়িতে অনেকেই আসতেন কবি, কথাসাহিত্যিক, সাংবাদিক তাঁদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছি। প্রথম লেখার হাতেখড়ি ১৯৬৬ সালে স্কুলের দেওয়াল পত্রিকায়। তখন থেকে জাতীয় দৈনিকে লিখেছি ছোটদের পাতায়। গল্প, কবিতা, ছড়া। দৈনিক আজাদের মুকুলের মহফিল, ইত্তেফাকের কচিকাঁচার আসর, পাকজমাহুরিয়াত, বাংলার বাণীর সাত ভাই চম্পা, পূর্বদেশের চাঁদের হাট, দৈনিক জনকণ্ঠ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লিখেছি।
ছোটদের পাতায় লিখতে লিখতে আমার বেড়ে ওঠা। ঐ সময় যারা আমার সাথে লিখেছে সেই বন্ধুরা আজ প্রত্যেকেই প্রতিষ্ঠিত লেখক। অনেকেই এক নামে পরিচিত। সুখ্যাতির শীর্ষে তারা। আমি ওদের সঙ্গে চড়তে পারিনি সিঁড়ি। কিন' আমি খুশি কারণ ওরা আমার বন্ধু।

আমরা জানি আপনি বিমান বাংলাদেশে এয়ারলাইন্সে দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন। এইযে সাহিত্যচর্চা, চাকরি, সংসার, সন-ান, লেখাপড়া একসাথে কি ভাবে করলেন? ১৯৭৬ সাল পর্যন- লেখালেখির মধ্যে ছিলাম। আমার অবশ্য বেশ অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যায়। যখন রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অর্নাস প্রথম বর্ষের ছাত্রী। ১৯৭৩ জানুয়ারিতে বিয়ে হয় মুক্তিযোদ্ধা ওমর কোরাইশীর সাথে। সেই নতুন পথে যদিও বাধা ছিল না। তবুও ঘর-সংসার-সন-ান-লেখাপড়া তার সাথে লেখালিখি। বেশ কষ্ট হয়েছে। তবুও আনন্দের সঙ্গে চাকরিও নিয়েছি বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইসেন্স বিভাগে। তখন চাকরির জন্য চট্টগ্রামেই থেকেছি। আমার স্বামীর ব্যবসার কাজে সুবিধার জন্য চট্টগ্রামে প্রায়ই থেকেছি। সব কিছু মিলিয়ে একেবারে নাকাল অবস'া। তাই কিছুকাল বিরতি আমার লেখালিখির। শুরু হয় তিনটা পুত্রসন-ানকে বড় করার যুদ্ধ। স্বামী ব্যবসায়ী কখনও দেশের বাইরে কখনও দেশেই অবস'ান এক এক সময় এক এক জায়গায়। চাকরিতে আমি বিদেশ বা স্বদেশ কোথায়ও স্পোর্টিং-এ যাইনি শুধু সন-ানদের কারণে।

এভাবেই চাকরি জীবনের ২৭ বছর পার করেছি। কমার্শিয়াল কর্মকর্তা হিসেবে ২৩ বছর চট্টগ্রাম এবং ৪ বছর ঢাকায়। ব্যবসায়ী স্বামী চট্টগ্রামেই তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান।

কি লিখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন? মনে যখন যে বিষয় অনুরণন তোলে তাই লেখার চেষ্টা করি। মনে করেন যখন কোন গল্প লিখি তার ফাঁকে ফাঁকে ছড়া লিখতে পছন্দ করি। এর মানেই এই নয় যে ছড়া লিখতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। গল্প, কবিতা, ছড়া, উপন্যাস সবই লেখার চেষ্টা করি। উপন্যাসের উপাত্ত প্রয়োজন, শুধু প্রেম উপজীব্য নয়। প্রেম বিরহ তো আছেই আঞ্চলিক উপাখ্যান, তথ্য-উপাত্তভিত্তিক, সৃষ্টিধর্মী এসবও ভীষণ প্রয়োজন। উপন্যাস বড় ক্যানভাসের বিষয়। তাই সময় নিয়ে লিখবো। একটা উপন্যাস অবশ্য লিখেছি।

আপনার একটা ছড়ার বই এর নাম ‘হৈলুল্লোড়’। এ নাম সম্পর্কে যদি কিছু বলেন ? আমার নাতনির বয়স যখন এক বছর তখন ওর জন্য একটা ছড়ার বই লিখি। বেশির ভাগ ছড়াগুলোই ওর নামে বইটির নাম “হৈলুল্লোড়”। সে এখন সাড়ে চার বছরে। বলে দাদী ঐ বই এর ছড়া সব আমার মুখস-। পড়া শেষ। আরো বই লিখো আমার জন্য। ইচ্ছে আছে আরো লিখার।
আপনার লেখার মধ্যে বারবার মুক্তিযুদ্ধ উঠে আসছে এর কারণ কি? আমি তো একজন মনে-প্রাণে মুক্তিযোদ্ধা। একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী। সেই রাতে মানে ২৫ শে মার্চের রাতে আমার হাতধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল নরপশু পাকিস-ানী সৈন্যরা। আল্লাহ্র অশেষ রহমত বেঁচে গেছি। মিরাকেল ঐ রাতে যে বাড়িতে ওরা গেছে সে বাড়িতে কেউ কি বেঁচেছে? সেই আতঙ্কিত মুহূর্ত আমার পিছু ছাড়েনি বহু বছর। সেই উত্তাল মাচের্র দিন। চারদিকে রাজনীতির লু হাওয়া। আমার নানী বাড়িতে বেড়াতে গেছি। আমার বয়সী আমার ছোটখালা ওর পিড়াপিড়িতে রয়ে গেলাম। ছোটমামা তখন সবুজবাগে থাকতেন। মেজখালা খালু তার ছেলেমেয়ে এ বাড়িতেই। বিকেল থেকে অবস'া ভালো না। রাত যত বাড়ছে থমথম পরিবেশ। খালা বললেন ক্যু হয়ে যাবে। আর্মি নামলে কি হয় বলা যায় না। পুলিশ লাইন পাশেই। তোরা খাটের নিচে চুপ করে থাক। রাত ১২ টার পর থেকে গোলাগুলির আওয়াজ। রাত যত বাড়ছে ততই কাছে আসছে বীভৎস শব্দ। পাশের বড় রাস-ায় ট্যাঙ্কের আওয়াজ, ভারি যানবাহনের আওয়াজ, গোলাগুলির আওয়াজ তীব্র হলো। রঙ্গীন তীব্র আলোর ঝলকানি দরজা জানালার ফাঁক দিয়ে ঠিকরে আসছে। আগুনের পোড়া গন্ধ। পুলিশ লাইন পুড়ছে গোলা বারুদের তীব্র গন্ধ বাতাসে। রাত তিনটা কি সাড়ে তিনটা বাজে। বাইরে আমাদের বিশাল টিনের গেটে বুটের লাথি এবং রাইফেলের বাটের বেদম শব্দ। গেট ভেঙ্গে তারপর ঐ একই ভাবে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ওরা ভেতরে। ভাঙ্গা দরজার পাল্লা দিয়ে পাকহানাদার বাহিনীর ৬/৭ জন ভেতরে। মিশক্রিয়েন্ট কাঁহা? মিশক্রিয়েন্ট!
খালাখালু আমরা সবই সামনে দাঁড়িয়ে আয়তুল কুরশি, কালেমা তৈয়ব, সুরা ফাতেহা, সুরা এখলাস সব গড়গড় করে পড়তে লাগলাম। তোদের বিশ্বাস করাতে মরিয়া হয়ে উঠিলাম। আমরা মুসলমান। এদের মধ্যে একজন সিপাহী আমার হাত ধরে হেচকা টান দেয়। আমি ভয়ে চিৎকার করি। খালা হাত জোড় করে প্রাণ ভিক্ষা চায়। বলে আপকা লারকি কা মাফিক। প্লিজ উসকো ছোড় দিয়ে। উসকো ছোড় দিয়ে। কান্নার রোল ঘরময়। কি জানি কি হলো। আল্লাহর রহমতে নাজির হলো ঐ মুহূর্তে ওখানে । ওদের মধ্যে ছিল এই সৈন্যদের কমান্ডার সে বললো, ছোড় দি জিয়ে....
বলে গটগট করে বেড়িয়ে গেলো।
আমি তো কিংকর্তব্যবিমূঢ়! হার্ট বিট উচ্চ মাত্রায় ছিল। খালা বললেন। এখন রাত চারটা বাজে ওরা আবার আসবে। তোদের দুইজন মেয়েকে দেখে গেছে। এর পরে আসলে সোজা ভেতরের দরজা দিয়ে বাগানে চলে যাবি। সেই আতংক কাটেনি। যদি মরে যেতাম, যদি ধরে নিয়ে যেত। কত কিছুই তো হতে পারতো। অনেক কাল কাউকেই বলিনি নিজের মধ্যে নিজেই জ্বলেছি।
মূলত এটাই কারণ।

এছাড়া লেখার মধ্যে আর কোন্ কোন্ বিষয় এসে যায় আপনার? মুক্তিযুদ্ধ ছাড়াও বিভিন্ন বিষয় তো আছেই। মানুষের জীবন, তাদের দু:খ-কষ্ট, অধিকার, নারীর চাওয়া-পাওয়ার ইচ্ছে কত কি তুলে নিয়ে আসি বন্ধ্যা জীবন থেকে উত্তরণ। শুধু নারী কেন, সমাজের অবক্ষয়। এ যুগের ছেলেমেয়েরা যুযোপযোগী হয়ে বেড়ে ওঠা। আলোর নিচে আঁধারকে চিহ্নিত করা। বহুমাত্রিক উপাদান থাকতে হয় লেখায়। আমি যখন ছোটদের জন্য লিখি অর্থাৎ শিশুতোষ তখন আমার মধ্যে ঘুমিয়ে থাকা শিশুমনটি নড়েচড়ে বসে। ভালোলাগে ওদের জন্য কিছু লিখতে। ছড়ার-ছন্দে কবিতায় সুবাসে গদ্যের বিশ্লেষণে বড় ক্যানভাসে উপন্যাস লেখার ইচ্ছে অবশ্যই আছে।

আমরা জানি আপনার কোন ভাই ছিল না। সেক্ষেত্রে ভাইয়ের অনুপসি'তি অনুভব করতেন ? মা নূরজাহান খান। আমরা ছয় বোন। ছয় বোনই চাকরি করি। কেই ডাক্তার কেউ ইঞ্জিনিয়ার কেউ সরকারি কর্মকর্তা। স্ব স্ব ক্ষেত্রে সবাই
প্রতিষ্ঠিত। ভাই নেই বলে আমাদের বাবা মায়ের কোন দু:খ ছিল না। ছেলেদের মতো করেই তারা আমাদের মানুষ করেছেন। মেয়েরাও বাবা-মাকে সুখের চাদরে জড়িয়ে রেখেছে। ছয় মেয়ের স্বামীরা খুবই ভালো। আমার মা বাবা চাইতেন আমরা লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হয়ে গড়ে উঠি। আমার বাবা খুব শানি- মাটির মানুষ ছিলেন। আমরা মাকে ভয় পেতাম।

এই যে আপনার সাহিত্যচর্চা এতে কার উৎসাহ বেশি ছিল? প্রথমত নিজের মধ্যে কিছু থাকাটাই বেশি প্রয়োজন। সেই ইচ্ছের প্রতিফলন ঘটে লিখনিতে। জীবনের প্রথম শব্দটি মা। ছোটবেলা মায়ের উৎসাহই বেশি প্রয়োজন। মা সবসময়ই বলতেন লেখার অভ্যাসটা যেন না ছাড়ি। আমার আবার সেলাই, রান্না, গাছ-পালা অনেক ধরনের শখই ছিল। মা বলতেন অন্য কিছু কিনতে পাওয়া যাবে কিন' প্রতিভা নিজের ওটাকে লালন করতে হয়। চর্চা করতে হয়। পরবর্তীতে স্বামী সব ব্যাপারেই উৎসাহিত করতেন। লেখালেখি, চাকরি, সেলাই, রান্না আমাকে একজন বায়োনিক ওম্যান হিসেবেই চাইতেন। সব ব্যাপারেই আমি সবার ওপরে থাকি। কিন' তা কি সম্ভব। নিজের সীমাবদ্ধতাও তো আছে।

আপনার বই এর সংখ্যা কত? এ যাবৎ মাত্র ১৮টি বই আমার বেরিয়েছে। শিশুতোষ বই, ছড়া আমার খেলার সাথী, টুপুর টাপুর মিষ্টি দুপুর, হৈলুল্লোড়, ছড়ার বনে হারিয়ে যাবো কিশোর গল্পের বই, বামন মামা, পল্টুর কাঁঠাল চুরি গল্প গ্রন', হলদে পাতার গুঞ্জন, অমানিশার আগুন, কুয়াশার দেওয়ালে যে সূর্য, উপন্যাস, যে জলে চন্দন ঘ্রাণ কাব্যগ্রন', খোলা চিঠি, তখন এখন, হঠাৎ তোমাকে দেখা, ফিরে কি আসা যায়, দিনের পরে বেঁধেছি নূপুর।

আপনার চাকরি জীবন কেমন কেটেছে? এয়ার লাইন্স এর জব চার্মিং জব। সুযোগ-সুবিধা এবং স্যালারি সবই ভালো। বিশেষ করে দেশ ভ্রমণের সুবিধা। ফ্রি টিকেটে অনেক দেশ ঘুরেছি। লন্ডন, আমেরিকা, নেপাল, মালয়েশিয়া, হংকং, ব্যাঙ্কক, সিঙ্গাপুর, দুবাই, সৌদি আরব, ভারতের বিভিন্ন স'ানে।

আপনার শৈশব সম্পর্কে অথবা বেড়ে ওঠার গল্পটা যদি বলেন? পিছনে ফিরে তাকাতে ভালোলাগে। হাতছানিতে ডাকে বর্ণীল সেই শৈশব। বলে আয় ফিরে আয় কাঁচা-মিঠে স্বাদে। সত্যি ছিল মধুর সেই ছোট বেলা। ভাবুক মন তখন থেকেই ভাবনার দোল খেতো। চুরি করে কাঁঠালের মোচা মরিচ-বাটা-লবনের যৌথস্বাদে কী যে উপভোগ্য ছিল! যদিও শহরেই মানুষ হই তবুও পেয়েছি গ্রাম বাংলার স্বাদ।
জন্ম নানার বাড়ি শানি-নগরে। ১৯৫৪ সালের ১৪ই নভেম্বর। বাবা রেলওয়ের কর্মকর্তা ছিলেন। ফলে ঢাকার বাইরেও কাটাতে হয় কিছুু সময়। কিন' লেখার শৈশব-কৈশোর বেড়ে ওঠা ঢাকাতেই। শানি-নগরের তেঁতুলতলার বাড়িতে শৈশব কেটেছে। তারপর বাবা বাড়ি করে এলেন সবুজ বাগ বৌদ্ধ মন্দিরের পাশে। সেই বাষট্টির কথা। তখন ঐ দিকটা কে গ্রামই বলা চলে। সন্ধ্যা হলেই শেয়াল ডাকতো পাশেই পুকুর, ডোবা এবং বিশাল ঝিল ছিল। বুড়িগঙ্গার পানিতে ভরে থাকতো। কত যে সাঁতার কেটেছি ঐ জলে, নৌকায় বেড়িয়েছি। পুকুরে মাছ ধরেছি। আজ আর ঐদিন কোথায়? ধান ক্ষেতগুলোর জায়গা জুড়ে এপার্টমেন্টের দৌরাত্ম্য।
আগের দিনে প্রতিটি বাড়িতে ফুল ফলের বাগান ছিল। আমাদেরও ছিল শেগুন, মেহেগনি, বকুল, কদম, শেফালি, হাসনাহেনা, গোলাপ, বেলী, পেয়ারু, আম, জাম--নিজের হাতে মায়ের সাথে আমরা সব বোনেরা কাজ করেছি। গাছের শখ এখনও রক্তে নেশা জাগায়। বাধ্য হয়ে আমাদের গাছ কাটতে হয়েছে। জীবনের প্রয়োজনে। বাসস'ানের
প্রয়োজনে। এপার্টমেন্ট তৈরি করেছি আমরাও। আমরা ভীষণ কষ্ট পেয়েছি। আমার মা আরো বেশি। এই টুকু সান-্বনা মা তার সেগুন গাছটির একটি পালঙ্ক তৈরি করেছেন। ওটাতেই মা ঘুমান।

জীবনকে কিভাবে দেখেন? জীবনে চড়াই উৎরাই তো আছেই। সেই বাঁকগুলো সার্থকভাবে চলতে পেরেছি । অল্পে ভেঙ্গে পড়িনি কখনও। সোনা পুড়ে খাঁটি হয়, সম্পর্ক পুড়ে রয়ে যায় কিছু ব্যথা। তবুও ওতে সুখ আছে। জীবন কঠিন পাথুরে রাস-া পথ কেটে কেটে নিজেই তৈরি করেছে পথ। এতে আনন্দ অনেক বেশি। যতটুকু অর্জন নিজেদের ঘামে, শ্রমে। কেউ হাতে তুলে দেয়নি কিছু।

আপনি বলেছিলেন আপনার স্বামী একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমার স্বামী একজন মুক্তিযোদ্ধা। দুই নম্বর সেক্টরের খালেদ মোশারফের আন্ডারে ছিলেন। ওর বন্ধু মানিক মুক্তযুদ্ধে শহীদ হয়েছে। যখন ওরা মেলঘর ক্যাম্পে ছিল তখন বেশ মন খারাপ করতো বেশির ভাগ ছেলেরাই। মানিক ভাইকে ও ক্ষেপাতো কি মা মা করিস! মায়ের জন্য কাঁদিস। আমি তো মা কাকে বলে কিছুই বুঝি না। ওর চার বছর বয়সে মা মারা গেছে ১২ বছরে বাবা। ওমর কোরাইশী এখনও একটা সবুজ মনের মানুষ।

কোথায়ও অপূর্ণতা আছে কি? জীবনের ঘাত-প্রতিঘাতে উৎরে গেছি। তিন ছেলেকে মানুষ করতে পেরেছি। বড় দুটোকে বিয়ে করিয়েছি। একটা নাতি আছে সাড়ে চার বছরের। বড় ছেলে ওর বাবার সাথে ব্যবসা শিখে গেছে। দ্বিতীয় ছেলে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে আছে। তৃতীয়টা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে।
অপূর্ণতা একটু তো আছেই। যতটুকু লেখকসত্তার বিকাশ ঘটার কথা ছিল ততটা হয়নি। ইচ্ছে তো আকাশ ছোঁয়ার। নিজের অবস'ান দৃঢ় করার। অতৃপ্ত মন আমাকে করেছে কাঙালি। চেষ্টা করে যাবো কিছু ভালো লেখা লিখবার। সময়ের সাথে পাল্লায় হেরে গেছি। ৬০/৭০টি বই হয়নি ঠিকই কিন' চেষ্টা করবো ভালো লেখার।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।