Pages

Saturday, July 25, 2009

বর্ষার রাত এবং আমি


বিভাগ ঃ কবিতা

বর্ষার রাত এবং আমি
সাইফ বরকতুল্লাহ

বর্ষার রাত এবং আমি
বিছানায় শুয়েছি নিঃশব্দ রাত
কখনো কখনো পাখিদের কিচিরমিচির
নরম ছায়ায় আমার দুচোখ ঘুম আসেনা
বাইরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি বর্ষার ছবি এঁকে যায়

আমি অবিরাম শুয়ে আছি
যতবার ঘুমোতে চোখ বুজো দেই
অথচ দুচোখ অবিরাম কান্নায় নীরব
শোকাচ্ছন্ন স্মৃতিময় অর্ন্তলোকে কষ্টময় বাতাবরণ
নিঃশব্দের মধ্যরাতে আমি শুধুই চেয়ে আছি
জ্যোর্তিময় আলোর অপেক্ষায়।

Saturday, July 18, 2009

dream


আমার dream কেন
এমন dream হয়
এই মনটা কেন
বারে বারে ভেঙ্গে যায়
আমার কবিতাগুলো
প্রতিদিন ছন্দ হারায় ????

Wednesday, July 15, 2009

Friday, July 3, 2009

মাহমুদ আহমাদিনেজাদঃ টুইটার রেভলিউশন এবং বিশ্বরাজনীতির নতুন ঢেউ


ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানে গত ১২ জুন শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ঐ নির্বাচনে ড· আহমাদিনেজাদ এক কোটি দশ লক্ষাধিক ভোট বেশি পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী মীর হুসেইন মুসাভি পেয়েছেন মোট বত্রিশ লাখ ভোট। অপর দুই প্রার্থী একজন ৩ শতাংশ এবং আরেকজন ১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী মুসাভি ও তার সমর্থকরা নির্বাচনী ফল মেনে নেননি। শুধু তাই নয় নতুন নির্বাচনের দাবী জানিয়েছেন তারা। তারা রাজধানী তেহরানে ব্যাপক বিক্ষোভ, অগ্নিসয়যোগ, লুটপাট ও সহিংসতা চালিয়েছেন । ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন মারাও গেছেন । পাশ্চাত্যের মিডিয়াগুলোও মুসাভির দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন । নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট, সিএনএন, আমেরিকার ইহুদি সংগঠনগুলো এবং ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একযোগে মুসাভির পুননির্বাচনের দাবির প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে। মুসাভির সহিংস আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ইরানের সব্বোর্চ ধর্মীয় নেতা ইমাম আয়াতুল্লাহ খামেনী গত ১৯ জুন শুক্রবার তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে জুমার নামাজে এক ব্যতিক্রমী ভাষণে বলেছেন , জনগণ তাকেই নির্বাচিত করেছে যাকে তারা চায় । তিনি আরো বলেছেন, আহমাদিনেজাদের পুনঃনির্বাচনের ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই । ১ কোটি ১০ লাখ ভোটের বিষয়টি কিভাবে কারচুপি করা যায় । তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেন,নির্বাচনে কোন কারচুপি হয়নি। তিনি আন্দোলনকারীদের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন,এরপর কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তার দায় বিরোধীদের নিতে হবে।
দুই
ইরানের সামপ্রতিক ভোট গ্রহণের আগে দেশটির নির্বাচনী ফলাফলের উপর জরিপ চালায় বেশ কিছু পশ্চিমা গণমাধ্যম। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাবিদার যুক্তরাষ্ট্রের টেরর ফ্রি টুমরো, ওয়াশিংটন পোস্ট ও ব্রিটিশ পত্রিকা টাইমস । সব জরিপের ফল ছিল কাছাকাছি। টেরর ফ্রি টুমরো ও ওয়াশিংটন পোস্ট-এর জরিপে বলা হয় , মাহমুদ আহমাদিনেজাদ ২:১ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হবেন। টাইমস পত্রিকাও আহমাদিনেজাদের বিজয়ের ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণী করেন। ইরানের এবারের নির্বাচন নানা কারণেই ছিল পশ্চিমা বিশ্বের আলোচনার বিষয়বস্তু।
বিশেষ করে ইহুদি নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া এ নির্বাচন নিয়ে ছিল অসম্ভব রকম তৎপর। কারণ দেশটির পারমাণবিক সক্ষমতা অর্জনে অনেকদূর এগিয়ে যাবে, নাকি ইহুদি-খ্রিস্টানবলয়ের ইচ্ছা পূরণ করে এখানেই ক্ষান্ত দেবে পথ চলা-এ প্রশ্নের উপর অনেকটা নির্ভর করছে নির্বাচনের ফলাফলের উপর। ফলে পশ্চিমা মিডিয়া যেমন আহমাদিনেজাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় । আবার অন্যদিকে মুসাভিকে বর্হিবিশ্বে তুলে ধরা হয় জনপ্রিয়, সংস্কারপন্থী হিসেবে। এ প্রচারণার গুণে বহির্বিশ্বে একটি উজ্জল ভাব মর্যাদা তৈরি হয় মুসাভির । মুসাভির সমর্থকরাও প্রায় ক্ষমতায় চলে গেছেন এমন স্বপ্ন দেখা শুরু করেন। কিন্তু নির্বাচনী ফল ঘোষণার পর সে স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলে অনেকটা হতাশা ও ক্ষোভ থেকে রাস্তায় নেমে আসে তারা ।
তিন
ইরানের নির্বাচনী ঘটনা প্রবাহের দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যাবে,ভোট গ্রহণের কাছাকাছি সময় হঠাৎ করেই যেন সরব হয়ে উঠে পশ্চিমা গণমাধ্যম। এ প্রচারণায় মুসাভির গুণগান আর আহমাদিনেজাদের ভুলত্রুটি ফলাও করে প্রচার করা হয় । ব্রিটেনের গার্ডিয়ান পত্রিকার আর্ন্তজাতিক বিশ্লেষক সিউমাস মিলনে সমপ্রতি লিখেছে, পশ্চিমা গণমাধ্যমে তেহরানের তরুণদের বিক্ষোভের দৃশ্য প্রচার করেছে। তাদের চোখে আহমাদিনেজাদ নিতান্তই এক ইহুদি বিদ্বেষী ব্যাক্তিত্ব। কিন্তু আহমাদিনেজাদের অন্যরূপ, যিনি তার দেশের স্বাধীনতার রক্ষক, যিনি টিভি ভাষণে অভিযাত মহলের দূর্নীতি ফাঁস করে দেন এবং যিনি তেল সম্পদ ব্যবহার করে সংখ্যাগরিষ্ট গরিব মানুষের অবস্থার উন্নতির জন্য সচেষ্ট,পশ্চিমা গণমাধ্যমে এই ইরানী প্রেসিডেন্টের ভাব মর্যাদা দেখানো হয়না।
চার
সাবেক প্রেসিডেন্ট মুসাভির আন্দোলনকে অনেক বিশ্লেষক নাম দিয়েছেন টুইটার রেভলিউশন। অর্থøাৎ বাস্তব অবস্থা ভুলে গিয়ে হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলা বা পাখির মতো কিচিরমিচির করা। মুসাভির সমর্থকরা সে পথই বেছে নিয়েছেন।
পাচ
ইরানের এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে বিশ্বব্যাপী নতুন রাজনীতি শুরু হয়েছে। নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকরা মনে ,করেন,সিআইএ এবং ইসরেল দীর্ঘদিনের নীল নকশার আলোকে ইরানে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির সুযোগ করে দিয়েছে । মার্কিন ইলেকট্রনিক মিডিয়া জানাচ্ছে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশ ইরানে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সিআইএকে ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ দিয়েেছল। ২৭ মে ২০০৭ তারিখে লন্ডন ডেইলি টেলিগ্রাফ এক রিপোর্টে জানায় , প্রেসিডেন্ট বুশ ইরানে অস্থিতিশীলতা তৈরির পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে মোল্লাদের শাসনের অবসান ঘটানোর লক্ষে অপপ্রচার চালানোর জন্য এক সরকারি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেেছন। Information clearing house news ওয়েবসাইটের মতে,মুসাভির সমর্থনে যারা বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে তাদের অনেকেই হয়তো আন্তরিক ,কিন্তু তারা হয়তো বুঝতে পারছেন না যে,এর পেছনে কারা ইন্ধন দিচ্ছে।
ছয়
সামপ্রতিক সময়ে এশিয়ার কয়েকটি দেশে নির্বাচন এবং পশ্চিমা মিডিয়াগুলোর প্রচারণা লক্ষণীয়। নেপালে মাওবাদীদের ক্ষমতায় আসা, ভারতে ৩য় বা ৪র্থ ফ্রন্টের ভরাডুবি, লেবাননে পশ্চিমাপন্থিদের জয় এবং ইরানের আহমাদিনেজাদের বিজয়ে একই চিত্র দেখা গেছে। নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর গুণগান গাওয়া ও তাকে বড় করে দেখানের চেষ্টা । সেই সাথে সংশ্লিষ্ট দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট উপেক্ষা করা যেন পশ্চিমা মিডিয়ার মূল বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাত
প্রকৃতপক্ষে ইরানে কী ঘটছে বা কেন ঘটছে? বিশ্ব রাজনীতিতে স্বৈরাচারকে বিপ্লবের মাধ্যমে হটিয়ে দেয়ার ঘটনা বিরল না হলেও পরাশক্তিকে টেক্কা দিয়ে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নেই বললেই চলে। এ ক্ষেত্রে ইরানের ইসলামী বিপ্লব সংগঠন এবং যাতে তার ত্রিশটি বছর টিকে থাকা এক ব্যতিক্রমী ইতিহাস।সামপ্রতিককালে ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট আহমাদিনেজাদের বলিষ্ট নেতৃত্ব সারা বিশ্বে তাকে আলোচিত করে তুলেছে। আর এটাই পশ্চিমাদের মাথা ব্যাথা। ইরানের প্রধান শত্রু রাষ্ট্রগুলো যখন ইরানের নির্বাচনোত্তর সহিংসতার উসকানি দিচ্ছে,তখন এটা বুঝতে কারো বাকি নয় যে,তারা উত্তেজনা সৃষ্টির পেছনে আছে কি নেই। মার্কিন বুদ্ধিজীবি মহলে ইরানের নির্বাচন নিয়ে এই নতুন উপলদ্ধি এখন বিশ্লেষকরা। শুধু তাই নয় বিশ্ব রাজনীতিতেও এক নতুন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে এবারের ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।