Pages

Monday, June 20, 2011

বয়স ২৫ এবং-01

অফিস থেকে বের হয়ে গ্যালারির দরজা পেরিয়ে সামনে যেতেই কানে আসল--- 
শুনতে পেলুম পোস্তা গিয়ে / তোমার নাকি মেয়ের বিয়ে ? / গঙ্গারামকে পাত্র পেলে / জানতে চাও সে কেমন ছেলে ? / মন্দ নয় সে পাত্র ভাল / রং যদি চাও বেজায় কালো
 / তার উপরে মুখের গঠন / অনেকটাই ঠিক পেঁচার মতন / বিদ্যে বুদ্ধি বলছি মশাই / ধন্যি ছেলের অধ্যবসায় ! / উনিশটিবার মেট্রিকে সে / ঘায়েল হয়ে থামলো শেষে......। 


রোজারিওর ভাবনার সাথে মিশে আছে সুকুমার রায়ের সৎপাত্র কবিতার এ লাইনগুলো। রোজারিও সামনে যাচ্ছে। মনটা আজ ফুরফুরে। হঠাৎ পেছন থেকে শিমুলের ডাক। রোজারিও.. রোজারিও...। 

রোজারিও পেছন ফিরে তাকাতেই শিমুলের প্রশ্ন-আচ্ছা, তোমার সাথে আমার বিয়ে ভেঙে গেছে। বিয়ে হলে কী হতো ? রোজারিও দাঁড়িয়ে গেল। চোখে মুখে রাগ আর শরীরটা কাঁপছে। পারলে এক্ষুণি শিমুলের দুই গালে চড় বসিয়ে দিতো। শিমুল আবার বলল, বিয়ে হলে কী হতো ? বলেই চলে গেল শিমুল। 

শিমুলের এ ধাক্কাটা আজও ভুলতে পারছেনা রোজারিও। বুক ধড়ফড়িয়ে উঠে। 

রোজারিও এখন আমেরিকায় নাসাতে পার্ট টাইম চাকুরি করছে। আমেরিকায় সে স্থায়ীভাবে বাস করার জন্য এসেছে। বয়স যখন চার, তখনি ওর বাবা, মা ওকে নিয়ে পাড়ি জমায় আমেরিকায়। এদেশেই শৈশব থেকে কৈশোর-এ পরিণত হয়। নিজের ইচ্ছায় আসেনি। তাকে আনা হয়েছে। 

যেদিন জন্মভূমি ছেড়ে আসতেছিল, সে দিন হতেই রোজারিও মন খারাপ করতে শিখেছে। ঢাকা ছেড়ে বিমান যখন আকাশে উড়ছিল, তখনই মাকে জিজ্ঞেস করেছিল, মা, আমরা কোথায় যাচ্ছি ? 

ঘুমপাড়ানি মায়ের গান শুনিয়ে সেদিন রোজারিওকে ভুলিয়ে দিয়েছিল সেই প্রশ্নের উত্তর। অথচ রোজারিওর চোখে গ্রামের উঠোনে পুতুল খেলার দৃশ্য তাড়া করে বেড়ায়। পুকুর ধারে বাঁশের বেঞ্চে বসে মাছ দেখার ছবি এখনো খুঁজে বেড়ায় মনে। 

চলবে...

No comments:

Post a Comment