Pages

Saturday, July 2, 2011

আমার জীবনে প্রথম সিনেমা দেখা

সময়টা নব্বই দশক। তখন ক্লাশ সেভেনে পড়ি। আমাদের সাথে আমাদের এলাকার সব প্রভাবশালী ঘরের সন্তানরা একসাথে পড়তাম। স্কুলেও আমাদের ব্যাচটা দাপট নিয়ে চলতাম। খেলাধুলা, পড়ালেখা, রাজনীতি সব বিষয়েই আমাদের ব্যাচটা অন্যরকম ছিল।

তখনও আমাদের এলাকায় সিনেমা হল ছিলনা। বাজারে ভিসিআরে ছবি দেখতো সবাই। লাইলী-মজনু, বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না, কেয়ামত থেকে কেয়ামত-এই ছবিগুলো জনপ্রিয় ছিল সেই সময়। এছাড়া সালমান শাহ-এর প্রায় সব ছবি ( স্বপ্নের পৃথিবী, দেনমোহর, অন্তরে অন্তরে, স্বপ্নের মৃত্যু নেই ) জনপ্রিয় ছিল।

আমি ছবি দেখতাম না। সেভেনে যখন পড়ি, তখন আমার সহপাঠিরা সবাই ধরল, সিনেমা দেখতে হবে। আমি ক্লাশ ক্যাপ্টেন সাথে ক্লাশের ফার্স্টবয়, আবার আমার জেঠা স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক। বাধ্য হয়েই দেখতে হলো সিনেমা।

আমাদের থানায় তখন নতুন একটা সিনেমা হল হয়েছে। বালিজুরি বাজারে অবস্থিত। নাম স্বজন সিনেমা হল। সেই সময় অবশ্য একটা ছবিও মুক্তি পেয়েছিল। স্বজন সিমেনার নাম। ইলিয়াস কাঞ্চন নায়ক আর মৌসুমি নায়িকা। আরেকজন নায়ক ছিল। নাম মনে নেই।

ক্লাশ শেষ করে দুপুরের পর আমরা একসাথে প্রায় বিশজন বাই সাইকেলে চলে গেলাম বালিজুরি বাজারে। আমাদের স্কুল থেকে সিনেমা হল তিন মাইল দূরে ছিল। তখন রাস্তারও পাকাকরনের কাজ চলছিল।

নতুন এক অভিজ্ঞতা । এই প্রথম পড়ালেখা, বাড়ি ছাড়া বাইরে যাচ্ছি। আমরা যথা সময়ে পৌঁছে গেলাম। নতুন সিনেমা হল স্বজন। সেই সাথে নতুন সিনেমাও নাম স্বজন। সিনেমার নামের সাথে হলের নামের কী সুন্দর মিল। আর আমার জীবনের প্রথম ছবি দেখা।

ছবিটাও দেখে খারাপ লাগেনি। গানগুলো সুন্দর ছিল। অশ্লীলতাও ছিলনা। মোটামুটি ভাল বলা চলে। এনিওয়ে সিনেমা শেষ করে যখন ফিরছিলাম। তখন রাস্তার কিছু দূর এসে ঘটে গেল আরেক মজার কাণ্ড। বলছিলাম  রাস্তা পাকাকরনের কাজ চলছিল।

আমরা বাইসাইকেলে আসতেছিলাম। হঠাৎ আমাদের সহপাঠি আসাদ সাইকেল উল্টে নিচে পড়ে যায়। যদিও ব্যাথা পায়নি তবুও পোলাপানের মজা নিতে সময় লাগেনি।

শেষে স্বজন সিনেমা হলে স্বজন ছবির মাধ্যমে অভিষেক হয়েছিল সেদিন সিনেমা জগতে প্রবেশ করার। যদিও এখন আর ছবি দেখা হয়না। তবুও মাঝে মাঝে ভাল হিন্তি বা ইংলিশ মুভি দেখতে ভুলিনা।