Pages

Thursday, November 5, 2009



এই লেখাটি মাসিক বিপরীত কাগজে
মার্চ-২০০৬ তম সংখ্যায় প্রকাশিত ।

Wednesday, October 28, 2009

Tuesday, October 6, 2009

জার্মানির নির্বাচন : এঙ্গেলা ম্যার্কেল এর বিজয় এবং পরবর্তী পরিস্থিতি


জার্মানির নির্বাচন : এঙ্গেলা ম্যার্কেল এর বিজয় এবং পরবর্তী পরিস্থিতি
সাইফ বরকতুল্লাহ

[ This Article published DOSHDIK october Issue]

ম্যার্কেল লক্ষ্যে ঁেপৗছলেন
২৭ †m‡Þ¤^i সংসদীয় নির্বাচনে এঙ্গেলা ম্যার্কেল বিজয়ী হলেন । ম্যার্কেলের জন্ম ১৯৫৪ সালে। বাবা ছিলেন লুথেরিয়ান যাজক। এককালের মেধাবী ছাত্রী এঙ্গেলা পদার্থ বিজ্ঞানে ডক্টরেট করছেন। কিছুকাল অধ্যাপনাও করেছেন। দ্বিতীয়বারের মতো চ্যান্সেলর হয়ে জামার্নীর ইতিহাসে সাথান করে নিচ্ছেন ফরবিস ম্যাগাজিনের মতে পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর এই নারী। এ নতুন এই সরকারের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে।

নতুন সরকার
অর্থনৈতিক মন্দা, বেকারত্ব, কর্মী ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা, সামাজিক নিরাপত্তার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা-জার্মানির এই বর্তমান গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলি যে আগামী সরকারের সামনে বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে, নির্বাচনের আগেও এ বিষয়ে কোন সন্দেহ ছিল না। প্রশ্ন ছিল, কে বা কারা এই সব সমস্যার মোকাবিলার ক্ষেত্রে সবচেয়ে উপযুক্ত। ভোটাররা তাঁদের রায় দিয়েছেন। তাঁরা আপাতত খ্রীষ্টিয় গণতন্ত্রী ও মুক্ত উদারপন্থী দলের জোটের প্রতি আস্থা দেখিয়েছেন। আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও গিড়ো ভেস্টারভেলেকে এবার দেখাতে হবে, যে ভোটের আগে তাঁরা যে দাওয়াইয়ের কথা বলেছেন, তা সত্যি রোগ সারাতে সক্ষম কি না এবং তাঁরাই এই কাজটা করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত কি না। আগামী ৯ই b‡f¤^i- বার্লিন প্রাচীর পতনের ২০তম বার্ষিকী পালনের আগেই তাঁরা সরকার গঠনের কাজ সেরে ফেলতে চান।

নতুন এই প্রস্তাবিত সরকারের আদর্শগত অবস্থান এরকম। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি Zivwš^Z করতে প্রথমে বোঝা কমাতে হবে। এর জন্য সরকারি ঋণের বিশাল আপাতত অবশ্যই কিছুটা বাড়াতে হবে, তবে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হলে এছাড়া অন্য কোন পথ নেই। এই পদক্ষেপের ফলে অর্থনীতি চাঙা উঠলে সরকারি কোষাগারেও আয় বাড়বে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি তাদের নির্বাচনী প্রচারভিযানে দাবি করেছিল, যে এমন সঙ্কটের সময়ে কর কমানো মোটেই দায়িত্বজ্ঞানের পরিচয় হবে না। এর পরিণতি হবে ভয়াবহ। তাদের সেই আশঙ্কা অমূলক ছিল কি না, এবার তা প্রমাণ হয়ে যাবে।,

ম্যার্কেলের নতুন জোটসঙ্গী

সামাজিক গণতন্ত্রী দলের সঙ্গে মহাজোট সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার সময় আঙ্গেলা ম্যার্কেল যেভাবে ‘ধরি মাছ, না ছুঁই পানি’ নীতি Aej¤^b করে এসেছেন, মুক্ত উদারপন্থীদের সঙ্গে জোট গড়ার পর তাঁর পক্ষে এমন উদাসীন থাকা সম্ভব হবে না বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। কারণ, তাঁর জোটসঙ্গী ও ভবিষ্যৎ ভাইস চ্যান্সেলার মুক্ত উদারপন্থী দলের নেতা গিডো ভেষ্টারভেলে তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পালন করতে বদ্ধপরিকর। গত কয়েক বছর ধরেও তিনি নিজের নীতি অবস্থানে অবিচল ছিলেন বলেই ভোটাররা এবার তাঁকে পুরস্কৃত করেছে বলে তাঁর বিশ্বাস।

নতুন এই সরকার সবার জন্য সামাজিক সুরক্ষার কাঠামো মজবুত করার বদলে নব্য-উদারপন্থী নীতি বাস্তবায়ন করবে বলে অনেক মহল আশঙ্কা করছে। ভেষ্টারভেলে কিন্তু এই আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বলে আসছেন, যে তিনি মধ্যবিত্তদের ¯^v‡_©B শিল্প-বাণিজ্য মহলকে আরও চাঙ্গা করে তুলতে চান।


বিরোধী পক্ষের গুরুত্ব

নতুন সরকার বিভিন্ন মহলের ¯^v‡_©i মধ্যে কতটা ভারসাম্য বজায় রাখতে পারবে, তা দেখার জন্য সবাই অপেক্ষা করে রয়েছে কিন্তু একটি বিষয় নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। বিগত মহাজোট সরকারের আমলে দুই বড় দল একই সরকারে থাকায় বিরোধী পক্ষের ভূমিকা অনেকটাই খর্ব হয়ে গিয়েছিল। তাছাড়া বিরোধী আসনে উদারপন্থী ও বাম দলের মত পরস্পর-বিরোধী শক্তি থাকায় বিরোধী ঐক্যের তেমন দুষ্টান্ত দেখা যায় নি। এবাারের নির্বাচনের পর বিরোধী আসনে বসতে চলেছে এমন ৩টি দল, যারা বাম-ঘেষা মতাদর্শের সূত্রে বাঁধা রয়েছে। সামাজিক গণতন্ত্রী, সবুজ দল ও বাম দল ‘ডি লিঙ্কে’র মধ্যে বহু প্রশ্নেই যে ঐক্যমত দেখা যাবে, সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। বিশেষ করে সরকার যদি সত্যি নব্য উদারপন্থার পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নেয়, সেক্ষেত্রে বিরোধীদের জোরালো প্রতিরোধ পদে পদে বাধার সৃষ্টি করবে। গণতন্ত্রের জন্য সেটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। এমনটা ঘটলে সব দলেরই চরিত্রগত ¯^iƒc আবার স্পষ্ট হয়ে যাবে। নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছিল, তা কেটে যাবে।

শুভেচ্ছা বার্তা এলো প্যারিস, লন্ডন এবং ওয়াশিংটন থেকে
দ্বিতীয়বারের মতো জার্মানির চ্যান্সেলর হিসেবে ফিরে এলেন ম্যার্কেল । এলো শুভেচ্ছা বার্তা বিভিন্ন দেশ থেকে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সঙ্গে সঙ্গে টেলিফোন করে বসলেন। ম্যার্কেল হ্যালো বলতেই সরাসরি তাকে অভিনন্দন জানালেন ওবামা।
এদিকে, ফরাসী প্রেসিডেন্ট নিকোলো সার্কোজি নির্বাচন ফলাফল ঘোষণার পরই রাতেই পাঠিয়েছেন তার শুভেচ্ছা বার্তা।

লন্ডনের ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট থেকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনও পাঠাতে ভোলেনি তার শুভেচ্ছাঘন বার্তা। এমনকি অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণশীল ভাইস-চ্যান্সেলর ইয়োসেফ প্রোয়েল-ও অভিনন্দন জানিয়েছেন সিডিইউ নেত্রী ম্যার্কেল কে।

Sunday, September 27, 2009

সংকট থেকে মুক্তি চাই

[ লেখাটি ২০০৮ জুন,যায়যায়দিন প্রকাশিত ]
সাইফ বরকতুল্লাহএক.
বর্তমানে একটি অনির্বাচিত অস্থায়ী সরকার দেশ চালাচ্ছে। দেশে কোন পার্লামেন্ট নেই। ফলে সমাজের সকলস্তরের মানুষের ব্যথা বেদনা ও অভাব অভিযোগ মূল্যায়ন করে জাতীয় বাজেট প্রণয়ন বা পণ্যমূল্য নির্ধারণের ব্যাপারে সরকারের উদাসীনতা ও অনভিজ্ঞতা সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক সংকটকে আরও তীব্র করে তুলতে পারে।
উল্লেখ্য, এ সরকারের আমলে চাল, ডালসহ প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ভারে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ। রফতানি বাণিজ্যের সংকোচন, গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিরতা এবং বৈদেশিক শ্রমবাজারে ধস নামার আশঙ্কায় বাংলাদেশের অর্থনীতি বড় ধরণের বিপর্যয়ের আতঙ্কে রয়েছে।
দুই.
খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে বাংলাদেশ ঝূঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। মানুষের মৌলিক প্রয়োজনের মধ্যে খাদ্যের স্থান সর্বোচ্চ। কেননা বেঁচে থাকার জন্য পানি বায়ুর মতো খাদ্যের Ab¯^xKvh© অপরিহার্যতা মানবসভ্যতার সূচনাকাল থেকেই ¯^xK…Z খাদ্য ব্যবস্থাপনাজনিত ত্রুটি এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে বাংলদেশ ¯^iYKv‡ji মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খাদ্য সংকট মোকাবিলা করছে।
তিন.
প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের খুচরা মূল্য যেখানে ছিল ৫টাকা ৩০পয়সা, সেখানে নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০টাকা ৭০ পয়সা। শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সাংবাদিক সম্মেলন করে এই অপ্রিয় সিদ্ধান্তটি জানিয়েছেন। উপদেষ্টার মতে, সারের দাম বাড়ানো সত্বেও এখানে কৃষকদের উৎপাদন ব্যয় বাড়বেনা। সঠিক মাত্রায় ইউরিয়া সারের প্রয়োগ ও অপচয় রোধের মাধ্যমে কৃষকরা সার খাতের mgš^q করতে পারবেন বলে উপদেষ্টা যুক্তি দেখিয়েছেন। তবে তার এই একতরফা কুযুক্তি মাঠ পর্যায়ে গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।
প্রতি ফসলী মওসুমেই কৃষকরা সারের জন্য হাহাকার করেন। অর্থাৎ সার বিপণন ও বন্টন ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে সময়মতো কৃষকদের হাতে সার পৌঁছে না। ফলে প্রতিবছরই সারের জন্য কৃষকদের বিক্ষোভ প্রতিবাদ ঘেরাও পর্যন্ত করতে হয়। সে অবস্থা এবারও অপেক্ষমান।
চার.
দেশের সার্বিক পরিস্থিতি এখন স্থবিরতা বিরাজ করছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কমে যাওয়ার কর্মসংস্থানের পথ রুদ্ধ হচ্ছে। অনেক কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকার সমস্যা বাড়ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ব্যাংক ঋণের সুদের হার বেশি হওয়ায় এবং ঋণ পাওয়ার জটিলতার কারণে তারা নতুন কোনো শিল্পকারখানা গড়ে তুলতে পারছেন না। বিনিয়োগ বোর্ডের বরাত দিয়ে সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হয়েছে, গত বছরের প্রথম ছয় মাসে আগের বছরের ছয় মাসের তুলনায় দেশী বিনিয়োগ নিবন্ধন অর্ধেকে নেমে এসেছে। মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে প্রায় ৬ হাজার ২৯৩ কোটি টাকার বিনিয়োগ নিবন্ধন কমেছে। এর আগের ছয় মাসে অর্থাৎ জুলাই থেকে wW‡m¤^i ’০৬ পর্যন্ত দেশী উদ্যোক্তারা প্রায় ১২ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিনিয়োগ বোর্ডে।
দেশী উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ যখন এই পরিস্থিতি, তখন বিদেশী বিনিয়োগের চিত্রও আশাব্যঞ্জক নয়। মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি ব্যাপকভাবে কমে যাওয়াই প্রমাণ করে শিল্প খাতে বিনিয়োগ কতটা কমে যাচ্ছে। এরমধ্যে কয়েকদিন যাবৎ শেয়ার বাজারে অব্যাহত দরপতনের কারণে বিনিয়োগকারী মাঝারি ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা আতঙ্কে রয়েছেন। ইতোমধ্যে তারা বিক্ষোভ প্রদশনও করেছেন।
এদিকে দেশে মূল্যস্ফীতির হারও অব্যাহতভাবে বাড়ছে। মূলম্ফীতি দুই অংকের ঘর অনেক আগেই অতিক্রম করে এখন এর হার ১১ শতাংশের বেশি। মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে।
পাঁচ.
¯^ivóª উপদেষ্টা এক ভয়ঙ্কর ও উদ্বেগজনক তথ্য দিয়েছেন। স্থানীয় একটি হোটেলে আয়োজিত “মানব পাচার” রোধে বাংলাদেশ পুলিশের একটি বিশেষ বিভাগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেছেন, প্রতিদিন অন্ততঃ অর্ধশত নারী ও শিশু ভারতে পাচার হয়। এক পরিসংখ্যানে জানা যায়, এই সংখ্যা কয়েক লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এসব পাচার হওয়া শিশু ও নারী ভারতের কলকাতা, †ev‡¤^mn বিভিন্ন শহরে যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে এক লজ্জাজনক তথ্য পাওয়া গেছে।
চারলাখ বাংলাদেশী নারী পাচার হয়ে ভারতে গিয়ে দেহ ব্যবসায় জড়িত হয়ে পড়েছে বা এ ধরণের অভিশপ্ত পেশা গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছে বলে মহা উদ্বেগজনক ও লজ্জাজনক তথ্য সরকারিভাবে প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে নারী-শিশুদের পাচার হওয়া এবং তাদের ভারতের বিভিন্ন যৌনপল্লীতে দেহ ব্যবসায় লিপ্ত হবার তথ্যটি A¯^xKvi করার কোন সুযোগ নেই। এ কারণেই বিষয়টি ভঙ্কর ভাবে উদ্বেগজনক।


ছয়.
বাংলাদেশ আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেন একই সূত্রে গাঁথা। একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের রেশ না কাটতেই চলে আসে আরেকটি। গত বছর দু’দফা ভয়াবহ বন্যার পরপরই আমরা শিকার হলাম সিডর নামের ঘূর্ণিঝড়ের মরণ কামাড়ের। সে ক্ষত কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আমাদের জাপটে ধরে উচ্চ দ্রব্যমূল্য। ভরা মৌসুমে চালের দাম কিছুটা কমবে এমন আশায় সবাই বুক বাঁধলেও সে আশায় শুধু গুড়ে বালি। ইতোমধ্যে দেখা গেছে বন্যার অশনি সঙ্কেত। নতুন করে আঘাত হানছে নদীভাঙ্গন। গত কয়েকদিনে নদী ভাঙ্গনে দেশের বিভিন্ন স্থানে শতশত ঘরবাড়ি, বিস্তীর্ণ ফসলি জমি , বহু গাছপালাসমেত বিপুল সহায়সম্পত্তি নদীতে বিলীন হয়েছে। এর ফলে গৃহহীন হয়ে হাজার হাজার লোক মানবেতর জীবনযাপন করছে। একই সাথে নদীতীরবর্তী মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে আহাজারি আর আতঙ্ক।
পদ্মা ও তিস্তার ভাঙ্গনে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং এবং কুড়িগ্রামের উলিলপুর উপজেলার কয়েকটি গ্রামের কয়েশ ঘরবাড়ি, অনেক ফসলী জমি ও বৃক্ষসম্পদ নদীতে বিলীন হয়েছে। গৃহহীন হয়ে বহু লোক মানবেতর জীবনযাপন করছে। গত কয়েকদিনে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙ্গনে বেশ কিছু বসতবাড়ি এবং প্রায় ২০-২৫ বিঘা ফসলি জমিসহ বহু গাছপালা নদীতে চলে গেছে। বর্তমানে নদীতীরে ৩ শতাধিক পরিবার চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। নিশ্চিহ্ন হয়ে মাওয়া থেকে শ্রীনগর উপজেলার ৪ কিলোমিটার এলাকার পদ্মা তীরবর্তী ফসলি জমি। অন্য দিকে প্রতিদিনই তিস্তা নদীর করাল স্‌্েরাত ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। বসতভিটা। ফসলের ক্ষেত। কলার বাগান ও বাঁশঝাড়।
কিন্তু দুঃখজনক যে, নদীভাঙ্গনের শিকার হয়ে যারা নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন, এখন তাদের পাশে কেউ নেই।
সাত.
গত ২৬ জুন০৮ দেশের নয়টি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত ২০০৮ সালের এস এস সি ও সমমানের পরীক্ষার ফল একযোগে প্রকাশিত হয়েছে। সারাদেশে ৭টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭০ দশমিক ৮১। গ্রেডিং পদ্ধতিতে ফল প্রকাশের অষ্টম বছরে এবারে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। বেড়েছে গড় পাসের হারও। গতবারের চেয়ে এবার পাসের হার বেড়েছে ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। সার্বিক বিবেচনায় এবারের ফল অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে।
কিন্তু এটা দুঃখজনক খবর হলো, সারা দেশের ৯১ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কেউ উত্তীর্ণ হয়নি। এর মধ্যে ৩৪ টি স্কুল, ৪০ টি মাদ্রাসা এবং ১৭ টি ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠান।[সূত্রঃ ইত্তেফাক,২৭.০৬.০৮]
আট.
বাংলাদেশকে নিয়ে বিশ্বমিডিয়া উদ্বিগ্ন। দি ইকোনমিষ্ট, ওয়াশিংটন পোষ্ট, ওয়ালষ্ট্রিট জার্নাল, টাইম ম্যাগাজিনের মতো বিশ্বমিডিয়ায় প্রতিদিন কোনো না কোনো ভাবেই উঠে আসছে বাংলাদেশের খবর। এসব মিডিয়ার বাইরে এফপি, রয়টার্স, এপির মতো বার্তাসংস্থাগুলোও ঐসব প্রশ্নের অবতারণা করছে। সংবাদ মাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে নানা সন্দেহ সংশয় উদ্বেগ-উৎকন্ঠার প্রকাশ ঘটছে।
নয়.
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শুধু জটিল নয়, অষ্পষ্টও। একদিকে সরকার দেশের প্রধান দু’টি রাজনৈতিক দল বি এন পি ও আওয়ামীলীগের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতার ঘোষণা দিয়েছে। সে জন্য সরকার কিছু প্রাথমিক ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছে। অপর দিকে জাতীয় নির্বাচনের আগেই স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের ৪টি সিটি কর্পোরেশন ও ৯টি পৌরসভা নির্বাচনের ঘোষণার মধ্য দিয়ে ষ্পষ্ট হলো, সরকার তার পুরানো অবস্থানেই রয়ে গেছে।
বর্তমান সরকারের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কে কারো মনে কোনো সংশয় নেই। কিন্তু একথা সত্য যে, রাজনীতি মোকাবেলা করার মতো দক্ষ উপদেষ্টা বা ব্যক্তি বর্তমানে সরকারের সঙ্গে যুক্ত নেই। তাই সরকারকে নানা ভুল পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে। বর্তমানে সরকারের আরেকটি দুর্বলতা, উপদেষ্টা পরিষদের বাইরেও নানা ক্ষমতা কেন্দ্রের পরামর্শ তাদের শুনতে হয়। যে সব ক্ষমতা কেন্দ্রও যে রাজনীতি মোকাবেলা দক্ষ তা ভাবার কোনো কারণ নেই। রাজনীতি দূরে থাক, সাধারণ মানুষ মোকাবেলা করার মতো অভিজ্ঞতা বা শিক্ষা কোনটাই তাদের নেই।
কাজেই দুই অনভিক্ত শক্তির mgš^‡q সরকার নানা ভুল পদক্ষেপ নিতে নিতে অগ্রসর হচ্ছে। এখন এর সমাপ্তী কেমন হয় সেটাই প্রশ্ন।
দশ.
সামগ্রিকভাবে দেশের এই যখন অবস্থা তখন মনে রাখা দরকার, প্রয়োজন স্থিতিশীলতা। আমাদের বিশ্বাস, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, আদর্শগত এবং অন্য বহুবিধ সমস্যা আমাদের দেশের জনগণের বিশেষ করে রাজনৈতিক দল, ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি সমাজ, বুদ্ধিজীবি শ্রেণী ও সুশীল সমাজসহ বিভিন্ন স্তরে সকলে মিলে এই সংকট থেকে মুক্তির পথ বের করে নিয়ে আসবে।
লেখকঃ কবি, কথাশিল্পী ও কলাম লেখক

Sunday, September 6, 2009

DREAM





picture : My reading Table [saif Brakat]
চারদিক অন্ধকার। কোথাও আলোর স্পর্শ নেই। আমার সময় গুলো পার হচ্ছে এর মধ্যেই। রাত্রী কেটে যায় বন্ধ চোখে চেয়ে চেয়ে। মনে হয় কোন অজানা কষ্টগুলো আমার সাথে খেলা করে। sleep ভেঙে যায় প্রতিনিয়ত। মনের চাপাকান্না আর কতো কাঁদবে?-নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করি। উত্তরের কোন সম্ভাবনা খুঁজে পাইনা। কম্পিউটারের সামনে বসে নিজেই নিজের মনের কথাগুলো কিবোর্ডে টাইপ করতে থাকি-দেহটাকে হালকা করার জন্য। এভাবেই দিনের পর দিন
কাটছে।ভার্সিটিতে ক্লাশ ষ্টার্ট হয়েছে। কিন্তু এটেন্ড করার কোন ইচ্ছেই মনে চায়না। সারাক্ষণ কি যেন অজানা না পাওয়ার বেদনা আমায় গ্রাস করে রাখে।মনে পড়ে আগুনের গান......
আমার dream কেন এমন dream হয়/এই মনটা কেন বারে বারে ভেঙে যায়/আমার কবিতা গুলো প্রতিদিন ছন্দ হারায়.....।
তবুও নতুন কোন ड्रीम-er আশায় পথ চলছি প্রতিনিয়ত। জানিনা সে dream আমায়
ধরা দিবে কিনা। আশাই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। মূলত এ সত্যের উপর ভর
করেই চলছি..চলবো আরো অনেকদূর.............।

সাক্ষাৎকার


ইন্দ্র মোহন রাজবংশী একনিষ্ঠ লোকসঙ্গীত গবেষক, সাংস্কৃতিক কর্মী, সংগঠক, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, লেখক, গীতিকবি, সুরকার, সংগীত পরিচালক, উপস্থাপক ও শিশুগীতি কবি, বিভিন্ন বোর্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষক। শিল্পী জীবনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সরকারি-বেসরকারি স্কুল ও কলেজে বিভিন্ন স্তরে সুদীর্ঘ প্রায় সাড়ে চার দশককাল নিষ্ঠার সাথে শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করে তিনি অধ্যক্ষ হিসেবে সরকারি চাকরিজীবনের একেবারে শেষপ্রান্তে অবসর প্রস্তুতিকালীন ছুটিতে আসেন ২০০৯ এর ১লা জুন থেকে। লোকসংগীত বিষয়ে গবেষণা করছেন বিগত তিন যুগ ধরে, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে আছেন দীর্ঘদিন; পুনরুদ্ধার, সংগ্রহ, সংরক্ষণ, চর্চা, গবেষণা ও বিকাশের মূলমন্ত্র নিয়ে ১৯৯৮ সালে দেশব্যাপী গড়ে তোলেন ‘বাংলাদেশ লোকসংগীত পরিষদ’। সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ (¯^vaxbevsjv বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা হিসেবে), সরকারি চাকরিতে যোগদানের আগে দেশের সর্বপ্রথম সংগীত বিষয়ক পত্রিকা ‘মাসিক সংগীত’ (মুক্তিযোদ্ধা-সাংবাদিক প্রয়াত তরুণ রায় প্রতিষ্ঠিত) সম্পাদনা করেছেন, প্রণয়ন করেছেন বাংলাদেশ স্কুল টেক্‌স্ট বোর্ড কর্তৃক প্রকাশিত উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তক ‘তত্ত্বীয় সংগীত’ (দ্বিতীয় পত্র), ত্রিশ বৎসরাধিককাল যাবৎ পালন করে আসছেন দেশের বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত উচ্চ মাধ্যমিক, ডিগ্রী ও মাস্টার্স পর্যায়ের পরীক্ষকের দায়িত্ব (বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সংগীত বিষয়ে ডিগ্রী ও মাস্টার্স পর্যায়ের পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান)। পত্র পত্রিকাসহ বিভিন্ন সাময়িকী ও স্মরণিকায় লিখেছেন অনেক প্রবন্ধ, বেতার, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে রচনা করেছেন অনেক গান, তাছাড়াও বিভিন্ন ধরনের প্রায় এক হাজার গান লিখে, সুর দিয়ে নিজের সংগীত পরিচালনায় গেয়েছেন ও অন্যদের কণ্ঠে রেকর্ড করিয়েছেন বহু গান, উপস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন চ্যানেলে, রচনা করেছেন ও করে যাচ্ছেন শিশুদের জন্য পল্লীগীতিসহ বিভিন্ন ধরনের প্রচুর শিশুতোষ গান।

¯^‡`‡k এবং বিশ্বের বহু দেশে সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি হিসেবে সফলভাবে আপন ঐতিহ্যবাহী লোকসংগীতকে তুলে ধরার জন্য সংগীত শিল্পী হিসেবে তিনি যেমন দেশে বহু প্রতিষ্ঠানের ¯^xK…wZ সহ লাভ করেছেন, তেমনি উল্লেখিত বিভিন্ন কর্মের জন্য ¯^xK…wZ ও সম্মাননা পেয়েছেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। দেশীয় বিভিন্ন ¯^xK…wZi মধ্যে চলচ্চিত্রে কণ্ঠদানের জন্য বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) পুরস্কার (১৯৭৬), বছরের সেরা লোকসংগীত শিল্পী হিসেবে ‘যায় যায় দিন, প্রথম আলো পাঠক জরিপ পুরস্কার (১৯৯৫); লোকসঙ্গীত শিল্পী হিসেবে ‘আবদুল আলীম স্মৃতি পদক ২০০৬’ এবং লোকসংগীত গবেষণার ¯^xK…wZ হিসেবে ‘শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন স্মৃতি পদক ২০০৭’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কোরিয়ার রাজধানী সিউল থেকে শিল্পী, গবেষক ও সংগঠক হিসেবে বহুমুখী কর্মের ¯^xK…wZ হিসেবে ÔWorld Master Certificate 2007Õ প্রাপ্তি তাঁকে দিয়েছে সৃজনশীলতায় বহুমাত্রিক অনুপ্রেরণা। যা দেশ ও জাতির জন্যও গৌরবের বিষয়। তাঁর সম্পর্কে এ সব তথ্য জানার পর কেন যেন মনে হল যে, তিনি তাঁর নানামুখী কর্ম অনুযায়ী প্রচারমাধ্যমে তেমন করে উঠে আসেননি। তবে কি তিনি নিজেকে আড়াল করে রাখতে চান? গত ২৮ আগষ্ট তার বেইলী রোডের বাসায় সাইফ বরকতুল্লাহ এই প্রচারবিমুখ, নিভৃতচারী ও কাজপাগল মানুষটির একটি অন্তরঙ্গ সাক্ষাৎকার নেন মাসিক দশদিক পত্রিকার জন্য।

জাপানের নির্বাচন : বিরোধী দলের বিপুল


জাপানের নির্বাচন : বিরোধী দলের বিপুল জয়
[ লেখাটি দশদিক september সংখ্যায় মারুফ আনাম ছদ্দনামে প্রকাশিত ]

জাপানের নির্বাচনে অভূতপূর্ব বিজয় লাভ করেছে বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি অব জাপান। ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির দীর্ঘদিনের আধিপত্য খর্ব করে তারা এবার ক্ষমতা নিতে যাচ্ছে।

এদিকে নিজ দলের পরাজয় ¯^xKvi করে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তারো আসো। ৩০আগষ্ট রোববার জাপানের সংসদীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণের শেষে এক্সিট পোলের হিসাবে দেখা গেছে যে, বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি অব জাপান বা ডিপিজে বিপুল ব্যবধানে জয়ী হতে চলেছে। জাপানের নিম্নকক্ষের আসনের সংখ্যা ৪৮০টি। এক্সিট পোলের হিসাবে দেখা গেছে যে ক্ষমতাসীন এলডিপি মাত্র একশটির মতো আসনে জয়লাভ করতে যাচ্ছে। তাদের জোটসঙ্গী কোমেইতো পার্টি পাচ্ছে মাত্র ২০টি আসন। অপরদিকে তিনশর বেশি আসনে জয়ী হতে যাচ্ছে বিরোধী দল ডিপিজে। উল্লেখ্য, বর্তমানে তাদের আসন মাত্র ১১৫টি। অব্যাহত আর্থিক মন্দার মুখে পড়া জাপানের নাগরিকরা এবার পরিবর্তনের পক্ষে রায় দিয়েছে।
নির্বাচনের ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশের আগেই পরাজয় আঁচ করতে শুরু করেন ক্ষমতাসীন এলডিপির নেতারা। দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে জাপানের ক্ষমতায় ছিল রক্ষণশীল বলে পরিচিত এলডিপি। এবার তাদের সেই আধিপত্য খর্ব হতে চললো। এদিকে নির্বাচনে পরাজয় ¯^xKvi করে নিয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং এলডিপির প্রধান তারো আসো। তিনি পরাজয়ের দায়িত্ব ¯^xKvi করে নিয়ে দলীয় প্রধানের পদ থেকেও পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন। নির্বাচনের ফলাফলকে ভয়াবহ বলে মন্তব্য করেছেন তারো আসো। এর আগে এলডিপির সেক্রেটারি জেনারেল হিরোইউকি হোসোদাও পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন।

এদিকে, নির্বাচনে বিজয়ী ডিপিজের প্রধান এবং সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী ইউকিও হাতোয়ামা ফলাফলের জন্য জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ৬২ বছর বয়স্ক এই নেতা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞবোধ করছি। জনগণ বর্তমান রাজনীতির প্রতি অত্যন্ত অসন্তুষ্ট।

বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতি হিসাবে পরিচিত জাপানের ক্রমবর্ধমান মন্দা এবারের নির্বাচনে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে। নির্বাচনের আগে থেকেই বিরোধী নেতা ইউকি হাতোয়ামা পরিবর্তনের পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন। বিগত নির্বাচনে জুনিচিরো কোইজুমির নেতৃত্বে এলডিপি বিপুল বিজয় লাভ করলেও পরবর্তীতে নানা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে এবং বয়স্কদের সমস্যা সমাধানের কোন উপায় বের করতে না পেরে সমর্থন হারায় এলডিপি। উল্লেখ্য, জাপানে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। উদারপন্থী বলে পরিচিত ডিপিজের প্রচারণা এসব বয়স্ক মানুসের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনার কথা জানিয়েছেন ডিপিজে নেতা ইউকি হাতোয়ামা। তিনি বলেছেন, যে তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসলে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এশিয়ার দেশগুলোর দিকেই তারা বেশি নজর দেবেন। উল্লেখ্য, প্রতিবেশি চীনের সঙ্গে আগে থেকেই বেশ ভালো সম্পর্ক ডিপিজের। আমরাও আশা করবো,দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের সাথে যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রয়েছে তা বর্তমান এই নতুন সরকারের সাথেও একই থাকবে।

Saturday, August 8, 2009

কাশ্মীর সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান কী আসন্ন?


কাশ্মীর সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান কী আসন্ন?
[লেখাটি দশদিক আগষ্ট সংখ্যায় মারুফ আনাম ছদ্দনামে প্রকাশিত ]

কাশ্মীর সমস্যা ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার এক অন্যতম সমস্যা। এ সমস্যার কারণে গত দুই দশকে ৭০ হাজারেরও বেশি কাশ্মীরি নিহত হয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তার নির্বাচনী প্রজারাভিযানের সময় থেকে বলে এসেছেন, কাশ্মীরে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে চলেছে। তার নির্বাচনের পরপর তিনি সাংবাদিকদের কাছে বলেছিলেন- চলতি বছরের প্রথম দিকে তিনি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনকে নিয়োগ করবেন বিশেষ দূত হিসেবে, যিনি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুগ যুগ ধরে চলে আসা কাশ্মীর সমস্যার একটা শান্তিপূর্ণ সমাধানের ব্যাপারে কাজ করবেন।
টাইম সাময়িকীকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওবামা বলেছিলেন, ভারত ও পাকিস্তানের সাথে এক যুগ কাজ করা হচ্ছে আমার প্রশাসনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ। ওবামার মতো বিল ক্লিনটন একই মনোভাব নিয়ে ১৯৯৯ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন ভারত পাকিস্তানের মধ্যকার কারগিল যুদ্ধের অবসানের ব্যাপারে। কাশ্মীর বিরোধ নিয়ে সংঘটিত এই ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে ভারত কমপক্ষে ৫০০ সৈন্য হারিয়ে অবশেষে পাকিস্তানিদের কাছ থেকে কারগিল উদ্ধার করে। এরপর ক্লিনটন ভারত সফরে এসেছিলেন।
তখন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ভারতীয় পার্লামেন্টে ভাষণ দিয়ে বলেন, তিনি নওযাজ শরিফকে কারগিল থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের মাধ্যমে কারগিল সমস্যা সমাধানের কথা বলে তাকে এ ব্যাপারে রাজি করিয়েছিলেন।
এদিকে গত ২৯ জুলাই পাকিস্তান ভারতের অবস্থান সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন ভারতের পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের সাথে আলোচনায় বসা ছাড়া ভারতের হাতে আর কোন বিকল্প নেই ... এ ছাড়া একমাত্র বিকল্প হচ্ছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামা।
তার এ বক্তব্য বিবিসিসহ অন্য সব গণমাধ্যমে যথারীতি প্রচারিত হয়েছে। তার এ বক্তব্য থেকে মনে হচ্ছে, ভারত তার মুখোমুখি শত্রু পাকিস্তানের প্রতি অবস্থানের পরিবর্তন ঘটিয়েছে। আর মাত্র এক সপ্তাহ আগে ড. মনমোহন সিং তার পাকিস্তানি সমকক্ষ ইউসুফ রাজা গিলানীর সাথে বৈঠক করে এক যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে তার নিজের দেশে প্রচুর সমালোচনার মুখে পড়েন।
উল্লেখ্য, মিসরে অনুষ্ঠিত জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে এই দুই প্রধানমন্ত্রী আলাদা বৈঠক করেন এবং বেঠক শেষে এই যৌথ বিবৃতি দেন। বিবৃতিতে তারা শান্তি প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার জন্য প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেন।
মনমোহন সিংহ এখন পাকিস্তানের ব্যাপারে জোরালো অভিমত রাখছেন। আর এই পথ ধরেই ঘটতে পারে দীর্ঘদিনের কাশ্মীর সমস্যার এক শান্তিপূর্ণ সমাধান। বিশ্বের শান্তিকামী মানুষরা চায় কাশ্মীর সমস্যার এক শান্তিপূর্ণ সমাধান হোক। কাশ্মীরি জনগণ তাদের আত্ননিয়ন্ত্রাধিকার ফিরে পাক- এটাই এখন বিশ্ববাসীর প্রত্যাশা।

কোরাজন আকিনো : গৃহবধূ থেকে গণতন্ত্রের নেত্রী


কোরাজন আকিনো : গৃহবধূ থেকে গণতন্ত্রের নেত্রী
[ লেখাটি দশদিক আগষ্ট সংখ্যায় প্রকাশিত ]

কোরাজন আকিনো। ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট তিনি। অনেকটা সিনেমার মতোই। কোরাজন আকিনো, ফিলিপিন্স এর জনগণের কাছে যিনি কোরি আকিইনো,নিভৃতচারী এক গৃহবধূ থেকে গণতন্ত্রের নেত্রীতে পরিণত হওয়ার জীবননাট্য।

১৯৩৩ সালের ২৫ জুলাই ফিলিপিন্স এর টারলাক প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট মারিয়া কোরাজন সুমুলং কোজুয়াংকো। সোনার চামচ মুখে দিয়েই পৃথিবীতে এসেছিলেন কোরি। কারণ বাবা ছিলেন ১৫ হাজার একরের চিনি ক্ষেতের মালিক এবং বিশাল ব্যাংক ব্যবসায়ী । মাত্র ১৩ বছর বয়সে ধনকুবের পরিবারে মেয়ে কোরি যান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে। সেখানে ফিলাডেলফিয়া এবং নিউইয়র্কের ক্যাথলিক স্কুলে পড়াশোনা করেন। এ

এরপর দেশে ফিরে আসেন এবং ফার ইস্ট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন আইনের উপর পড়াশোনা করার জন্য। ১৯৫৪ সালে বিয়ে করেন তখনকার নামকরা তরুণ সাংবাদিক বেনিগনো নিনয় আকুইনোকে যিনি কোরির মতই টারলাক প্রদেশের ধনী পরিবারের সন্তান ছিলেন। পরবর্তী দুই দশক ধরে পেছন থেকে সহায়তা করে গেছেন কোরি। কিন্তু আসলে তিনি ছিলেন নিভৃতচারী এক গৃহিনী।

এদিকে রাজনীতিতে পা দিয়ে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকেন কোরির husbend বেনিনো। তখনকার ˆ¯^ikvmK ফার্নান্দো মার্কোসের জন্য হুমকি হয়ে উঠে তিনি। ফিলিপিন্সে সবচেয়ে কম বয়সে মেয়র,গভর্নর এবং সিনেটর নির্বাচিত হন তিনি। পরবর্তী সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁকে ভাবতে শুরু করেন অনেকে। আকিনো পরিবারের এক বন্ধুর মন্তব্য, বেনিনো ছিল এক যোদ্ধা যার তলোয়ার এবং ঘোড়ার দেখাশোনা করত তার স্ত্রী কোরি। কিন্তু এরপরেও রাজনীতির ময়দানে আসার কোন ইচ্ছা ছিল না কোরির।

১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট মার্কোস সামরিক আইন জারি করেন। এর পরের বছর অন্যান্য রাজনীতিবিদদের মত বেনিনোও গ্রেফতার হন। পরবর্তী সাতটি বছর বর্হিবিশ্বের সঙ্গে বেনিনোর যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিলেন তার স্ত্রী কোরাজন আকিনো। ১৯৮০ সালে মার্কিন সরকারের চাপের কারণে বেনিনোকে মুক্তি দিতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট মার্কোস। এরপর যুক্তরাস্ট্রের বোষ্টনে স্ত্রীকে সাথে নিয়ে চলে যান বেনিনো আকিনো। তবে বেশিদিন থাকেননি সেখানে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করার জন্য ১৯৮৩ সালে ফিরে আসেন দেশে। কিন্তু বিমান থেকে দেশের মাটিতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই আততায়ীর গুলিতে জীবন দেন বেনিনো।

মূলত এরপরই শুরু হয় কোরাজন আকিনোর রাজনৈতিক অধ্যায়। ¯^vgx হত্যার বিচার চেয়ে দেশে ফিরে আসলে রীতিমত জনগণের নেত্রীতে পরিণত হন তিনি। ১৯৮৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মার্কোসের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দিতা করেন কোরাজন আকিনো। নির্বাচনে উভয়পক্ষেই বিজয়ের দাবি করে। এসময় লাখ লাখ জনতাকে নিয়ে রাজপথে নামেন গণতন্ত্রের নেত্রী কোরাজন আকিনো। দেশি বিদেশি চাপ সইতে না পেরে কেবল পদত্যাগই করেননি তৎকালীন ˆ¯^ikvmK মার্কোস। দেশও ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। পরবর্তী ছয়টি বছর দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন কোরাজন আকুইনো। কিন্তু খব একটা সুবিধা করতে পারেন নি তিনি। অন্তত ছয়টি সেনা অভ্যুত্থান তাঁকে মোকাবেলা করতে হয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে। ১৯৯২ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার ঘোষণা দেন। তবে রাজনীতির মাঠে ঠিকই সক্রিয় ছিলেন আরো কয়েক বছর। ২০০১ সালে প্রেসিডেন্ট জোসেফ এস্ত্রাদার বিরুদ্ধে আ্‌ন্েদালনে ভূমিকা রাখেন তিনি। অন্ত্রে ক্যান্সার ধরা পড়ার পর হাসপাতালেই কাটিয়ে দেন বাকিটা সময়। এমনকি শেষ দিকে চিকিৎসা নিতেও A¯^xKvi করেন। অবশেষে ১ আগষ্ট ২০০৯ শুক্রবার ৭৬ বছর বয়সে এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার আন্দোলনের জোরালো Kɯ^i কোরাজন আকুইনে ওরফে কোরি আকুইনো।

Tuesday, August 4, 2009

আমার এক নতুন অনুভূতি


আমার এক নতুন অনুভূতি
২৫ জুলাই ২০০৯। অফিসে কাজ করতে ছিলাম। হঠাৎ আমার সেলফোনে রিং বেজে উঠল। মোবাইলের স্ক্রীনে দেখি আমার রুমমেট ফয়সালের mobail রিসিভ করতেই কানে আওয়াজ.....বরকত তোমার রক্তের গ্রুপ কী ?? আমি অকপটেই বলে ফেললাম বি পজিটিভ। ও বলল,আমি লাঞ্চের পর আসছি-তুমি রেডি থেকো। বিকেল ৪টায় ফয়সালের মোটর সাইকেলের পেছনে চড়ে যাচ্ছি ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে জীবনের প্রথম রক্ত দিতে।
দীর্ঘ যানযট পেরিয়ে পৌঁছলাম ল্যাবএইডে। প্রথমেই একটা ডোনার ফরম পূরণ করতে হল। তারপর আমার রক্ত পরীক্ষার জন্য নিল। অবশেষে এক ঘন্টা পর রক্ত দিলাম একজন মুমূর্ষ বাইপাস সার্জারী অপারেশন রোগীর জন্য।

সাক্ষাৎকার


গত ২৮.০৭.০৯ সোমবার বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী,সাহিত্যিক ও শিক্ষাবীদ
ড. মীজানুর রহমান শেলীর সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন সাইফ বরকতুল্লাহ

Saturday, July 25, 2009

বর্ষার রাত এবং আমি


বিভাগ ঃ কবিতা

বর্ষার রাত এবং আমি
সাইফ বরকতুল্লাহ

বর্ষার রাত এবং আমি
বিছানায় শুয়েছি নিঃশব্দ রাত
কখনো কখনো পাখিদের কিচিরমিচির
নরম ছায়ায় আমার দুচোখ ঘুম আসেনা
বাইরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি বর্ষার ছবি এঁকে যায়

আমি অবিরাম শুয়ে আছি
যতবার ঘুমোতে চোখ বুজো দেই
অথচ দুচোখ অবিরাম কান্নায় নীরব
শোকাচ্ছন্ন স্মৃতিময় অর্ন্তলোকে কষ্টময় বাতাবরণ
নিঃশব্দের মধ্যরাতে আমি শুধুই চেয়ে আছি
জ্যোর্তিময় আলোর অপেক্ষায়।

Saturday, July 18, 2009

dream


আমার dream কেন
এমন dream হয়
এই মনটা কেন
বারে বারে ভেঙ্গে যায়
আমার কবিতাগুলো
প্রতিদিন ছন্দ হারায় ????

Wednesday, July 15, 2009

Friday, July 3, 2009

মাহমুদ আহমাদিনেজাদঃ টুইটার রেভলিউশন এবং বিশ্বরাজনীতির নতুন ঢেউ


ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানে গত ১২ জুন শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ঐ নির্বাচনে ড· আহমাদিনেজাদ এক কোটি দশ লক্ষাধিক ভোট বেশি পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী মীর হুসেইন মুসাভি পেয়েছেন মোট বত্রিশ লাখ ভোট। অপর দুই প্রার্থী একজন ৩ শতাংশ এবং আরেকজন ১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী মুসাভি ও তার সমর্থকরা নির্বাচনী ফল মেনে নেননি। শুধু তাই নয় নতুন নির্বাচনের দাবী জানিয়েছেন তারা। তারা রাজধানী তেহরানে ব্যাপক বিক্ষোভ, অগ্নিসয়যোগ, লুটপাট ও সহিংসতা চালিয়েছেন । ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন মারাও গেছেন । পাশ্চাত্যের মিডিয়াগুলোও মুসাভির দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন । নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট, সিএনএন, আমেরিকার ইহুদি সংগঠনগুলো এবং ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একযোগে মুসাভির পুননির্বাচনের দাবির প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে। মুসাভির সহিংস আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ইরানের সব্বোর্চ ধর্মীয় নেতা ইমাম আয়াতুল্লাহ খামেনী গত ১৯ জুন শুক্রবার তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে জুমার নামাজে এক ব্যতিক্রমী ভাষণে বলেছেন , জনগণ তাকেই নির্বাচিত করেছে যাকে তারা চায় । তিনি আরো বলেছেন, আহমাদিনেজাদের পুনঃনির্বাচনের ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই । ১ কোটি ১০ লাখ ভোটের বিষয়টি কিভাবে কারচুপি করা যায় । তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেন,নির্বাচনে কোন কারচুপি হয়নি। তিনি আন্দোলনকারীদের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন,এরপর কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তার দায় বিরোধীদের নিতে হবে।
দুই
ইরানের সামপ্রতিক ভোট গ্রহণের আগে দেশটির নির্বাচনী ফলাফলের উপর জরিপ চালায় বেশ কিছু পশ্চিমা গণমাধ্যম। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাবিদার যুক্তরাষ্ট্রের টেরর ফ্রি টুমরো, ওয়াশিংটন পোস্ট ও ব্রিটিশ পত্রিকা টাইমস । সব জরিপের ফল ছিল কাছাকাছি। টেরর ফ্রি টুমরো ও ওয়াশিংটন পোস্ট-এর জরিপে বলা হয় , মাহমুদ আহমাদিনেজাদ ২:১ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হবেন। টাইমস পত্রিকাও আহমাদিনেজাদের বিজয়ের ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণী করেন। ইরানের এবারের নির্বাচন নানা কারণেই ছিল পশ্চিমা বিশ্বের আলোচনার বিষয়বস্তু।
বিশেষ করে ইহুদি নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া এ নির্বাচন নিয়ে ছিল অসম্ভব রকম তৎপর। কারণ দেশটির পারমাণবিক সক্ষমতা অর্জনে অনেকদূর এগিয়ে যাবে, নাকি ইহুদি-খ্রিস্টানবলয়ের ইচ্ছা পূরণ করে এখানেই ক্ষান্ত দেবে পথ চলা-এ প্রশ্নের উপর অনেকটা নির্ভর করছে নির্বাচনের ফলাফলের উপর। ফলে পশ্চিমা মিডিয়া যেমন আহমাদিনেজাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় । আবার অন্যদিকে মুসাভিকে বর্হিবিশ্বে তুলে ধরা হয় জনপ্রিয়, সংস্কারপন্থী হিসেবে। এ প্রচারণার গুণে বহির্বিশ্বে একটি উজ্জল ভাব মর্যাদা তৈরি হয় মুসাভির । মুসাভির সমর্থকরাও প্রায় ক্ষমতায় চলে গেছেন এমন স্বপ্ন দেখা শুরু করেন। কিন্তু নির্বাচনী ফল ঘোষণার পর সে স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলে অনেকটা হতাশা ও ক্ষোভ থেকে রাস্তায় নেমে আসে তারা ।
তিন
ইরানের নির্বাচনী ঘটনা প্রবাহের দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যাবে,ভোট গ্রহণের কাছাকাছি সময় হঠাৎ করেই যেন সরব হয়ে উঠে পশ্চিমা গণমাধ্যম। এ প্রচারণায় মুসাভির গুণগান আর আহমাদিনেজাদের ভুলত্রুটি ফলাও করে প্রচার করা হয় । ব্রিটেনের গার্ডিয়ান পত্রিকার আর্ন্তজাতিক বিশ্লেষক সিউমাস মিলনে সমপ্রতি লিখেছে, পশ্চিমা গণমাধ্যমে তেহরানের তরুণদের বিক্ষোভের দৃশ্য প্রচার করেছে। তাদের চোখে আহমাদিনেজাদ নিতান্তই এক ইহুদি বিদ্বেষী ব্যাক্তিত্ব। কিন্তু আহমাদিনেজাদের অন্যরূপ, যিনি তার দেশের স্বাধীনতার রক্ষক, যিনি টিভি ভাষণে অভিযাত মহলের দূর্নীতি ফাঁস করে দেন এবং যিনি তেল সম্পদ ব্যবহার করে সংখ্যাগরিষ্ট গরিব মানুষের অবস্থার উন্নতির জন্য সচেষ্ট,পশ্চিমা গণমাধ্যমে এই ইরানী প্রেসিডেন্টের ভাব মর্যাদা দেখানো হয়না।
চার
সাবেক প্রেসিডেন্ট মুসাভির আন্দোলনকে অনেক বিশ্লেষক নাম দিয়েছেন টুইটার রেভলিউশন। অর্থøাৎ বাস্তব অবস্থা ভুলে গিয়ে হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলা বা পাখির মতো কিচিরমিচির করা। মুসাভির সমর্থকরা সে পথই বেছে নিয়েছেন।
পাচ
ইরানের এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে বিশ্বব্যাপী নতুন রাজনীতি শুরু হয়েছে। নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকরা মনে ,করেন,সিআইএ এবং ইসরেল দীর্ঘদিনের নীল নকশার আলোকে ইরানে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির সুযোগ করে দিয়েছে । মার্কিন ইলেকট্রনিক মিডিয়া জানাচ্ছে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশ ইরানে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সিআইএকে ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ দিয়েেছল। ২৭ মে ২০০৭ তারিখে লন্ডন ডেইলি টেলিগ্রাফ এক রিপোর্টে জানায় , প্রেসিডেন্ট বুশ ইরানে অস্থিতিশীলতা তৈরির পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে মোল্লাদের শাসনের অবসান ঘটানোর লক্ষে অপপ্রচার চালানোর জন্য এক সরকারি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেেছন। Information clearing house news ওয়েবসাইটের মতে,মুসাভির সমর্থনে যারা বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে তাদের অনেকেই হয়তো আন্তরিক ,কিন্তু তারা হয়তো বুঝতে পারছেন না যে,এর পেছনে কারা ইন্ধন দিচ্ছে।
ছয়
সামপ্রতিক সময়ে এশিয়ার কয়েকটি দেশে নির্বাচন এবং পশ্চিমা মিডিয়াগুলোর প্রচারণা লক্ষণীয়। নেপালে মাওবাদীদের ক্ষমতায় আসা, ভারতে ৩য় বা ৪র্থ ফ্রন্টের ভরাডুবি, লেবাননে পশ্চিমাপন্থিদের জয় এবং ইরানের আহমাদিনেজাদের বিজয়ে একই চিত্র দেখা গেছে। নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর গুণগান গাওয়া ও তাকে বড় করে দেখানের চেষ্টা । সেই সাথে সংশ্লিষ্ট দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট উপেক্ষা করা যেন পশ্চিমা মিডিয়ার মূল বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাত
প্রকৃতপক্ষে ইরানে কী ঘটছে বা কেন ঘটছে? বিশ্ব রাজনীতিতে স্বৈরাচারকে বিপ্লবের মাধ্যমে হটিয়ে দেয়ার ঘটনা বিরল না হলেও পরাশক্তিকে টেক্কা দিয়ে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নেই বললেই চলে। এ ক্ষেত্রে ইরানের ইসলামী বিপ্লব সংগঠন এবং যাতে তার ত্রিশটি বছর টিকে থাকা এক ব্যতিক্রমী ইতিহাস।সামপ্রতিককালে ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট আহমাদিনেজাদের বলিষ্ট নেতৃত্ব সারা বিশ্বে তাকে আলোচিত করে তুলেছে। আর এটাই পশ্চিমাদের মাথা ব্যাথা। ইরানের প্রধান শত্রু রাষ্ট্রগুলো যখন ইরানের নির্বাচনোত্তর সহিংসতার উসকানি দিচ্ছে,তখন এটা বুঝতে কারো বাকি নয় যে,তারা উত্তেজনা সৃষ্টির পেছনে আছে কি নেই। মার্কিন বুদ্ধিজীবি মহলে ইরানের নির্বাচন নিয়ে এই নতুন উপলদ্ধি এখন বিশ্লেষকরা। শুধু তাই নয় বিশ্ব রাজনীতিতেও এক নতুন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে এবারের ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।

Wednesday, May 20, 2009

দক্ষিণ এশিয়া মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে!


পৃথিবীজুড়ে এখন এক নতুন অস্থিরতা। যুদ্ধ, বিগ্রহ, নিগ্রহ তো চলছেই, তার ওপর হাজির হয়েছে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির মন্দাদশা।
ইতোমধ্যে ‘আফগানিস্তান’ সেই রণক্ষেত্রের রূপ নিয়েছে। ইউরোপ ও আমেরিকার যুদ্ধরাজনীতি, অস্ত্র অর্থনীতি এখন আফগানিস্তানকে কেন্দ্র করেই। সুতরাং পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভারত, বাংলাদেশ প্রায় সবাই আমরা এই রণক্ষেত্রের আওতাধীন। বড় দেশ ভারত, তার অর্থনীতির জোরেই, রাজনীতির মতায় মার্কিন-ইউরোপের বড় মিত্র বনেছে। তাহলে এই অঞ্চলের ছোট দেশগুলোর কি হবে? এ প্রশ্ন জাগলেই পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপালের বর্তমান চেহারা ভেসে ওঠে। বাংলাদেশও সেই বিবেচনায় বড় ঝুঁকির মুখে।



২·
ওয়ান ইলেভেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রজীবনে এক ঐতিহাসিত ট্র্যাজেডি। দুই রাজনৈতিক দলের অসহিষ্ণুতা ও অবিশ্বাস এবং সরকারি দল ও বিরোধী দলের প্রতিহিংসার রাজনীতি বাংলাদেশকে ১/১১-এর মতো ঘটনার জন্ম দিয়েছিল। রাজনৈতিক শুদ্ধতা আর অবিবেচনা দুই বড় রাজনৈতিক দলকে পরস্পরের মুখে দাঁড় করিয়ে ক্রমাগত বাংলাদেশের রাষ্ট্র কাঠামোর অংশ প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে। কয়েক দশক ধরে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির মোড়কে বেসামরিক নেতৃত্ব তৈরির সূতিকাগার ছাত্ররাজনীতিকে ধ্বংস করা হয়েছে। পাবলিক সার্ভিস কমিশন পুলিশ প্রশাসন ইত্যাদি অফিসে-আদালতে দলীয়করণ এমনভাবে ঘটেছে যাতে অভ্যন্তরীণ সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যোগ্য, নিরপে মানুষ সামনের দিনে পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে। এরই ধারাবাহিকতায় নানান প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আঘাত হানা হয়েছে রাজনৈতিক দল নামের প্রতিষ্ঠানে। দল ভাঙা, সংস্কারের নামে বিদ্রোহ- একের পর এক ঘটনাচক্রে রাজনৈতিক দলগুলোতে তৈরি হয়েছে অবিশ্বাস আর সন্দেহ। ছাত্র-শিক্ষক সেনাবাহিনী সংঘর্ষ ঘটিয়ে ক্ষেপিয়ে তোলা হয়েছে পরস্পরকে। মিডিয়া এবং সেনাবাহিনীকে প্রতিপ হিসেবে দাঁড় করানোর পুরনো চেষ্টা বারবার ফিরে এসেছে।
৩·
২৬ নভেম্বর ২০০৮ ঘটল মুম্বাই হামলা। সন্ত্রাসীদের তাণ্ডব দেখল গোটা পৃথিবী। উদার গণতান্ত্রিক দেশ ভারত রাজনৈতিক বিবেচনায় সামরিক সমাধানের আওতায় এ হামলার মোকাবেলা করলেও পাকিস্তান ভারতে সামরিক ও রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়ে যায় বহুলাংশে।
৪·
এর সমাপ্তি ঘটতে না ঘটতেই শ্রীলঙ্কা জুড়ে হঠাত করেই দ্রুত পতন ঘটতে শুরু করল শক্তিমান তামিল গেরিলাদের।
৫·
এ কৌতূহলের সুরাহা না হতেই আক্রান্ত হলো বাংলাদেশ। ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ রক্তাক্ত হলো বাংলাদেশ। কথিত বিডিআর সেনাদের বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে হত্যা এবং পৈশাচিকতার মাধ্যমে যে রক্তক্ষয়, পারস্পারিক অবিশ্বাস আর জিঘাংসার উদ্‌ভব হলো তার খেসারত কতকাল চলবে কে জানে?
৬·
পাকিস্তান মানবিক বিপর্যয়ের মুখেঃ
পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকায় কয়েক লাখ লোক ঘর ছেড়ে পালানোর পর দেশটিতে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। শরণার্থী শিবিরগুলোতে আশ্রয় নেওয়া লোকজন প্রচণ্ড গরম ও খাদ্য-পানির অভাবে দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছে। নিজ বাগিঘর ছেড়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ছয় লাখ মানুষ শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।
১০ মে নতুন করে প্রায় এক লাখ লোক সোয়াত ছেড়েছে। শরণার্থীদের থাকা ও খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আবেদন জানিয়েছে পাকিস্তানের মন্ত্রিপরিষদ। গত মাসের শেষ সপ্তাহে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তালেবান জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। দেশটির প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি বলেছেন, সোয়াত উপত্যকায় অবস্থান করা তিন হাজার তালেবান জঙ্গির সবাইকে হত্যা করা হবে।
৭·
তালেবান দমনে নিরীহ মানুষের মৃত্যু নিয়ে আফগানিস্তানে ক্ষোভ
আফগানিস্তানে তালেবান ও অন্যান্য উগ্রবাদী শক্তির বিরুদ্ধে হামলার সময় সাধারণ নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ও ভোগান্তি বেড়ে চলার ফলে চরম সমস্যায় পড়ছে দেশটির সরকার। ফারাহ প্রদেশে হামলার প্রতিবাদে রোববার কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শ শিক্ষার্থীমার্কিনবিরোধীশ্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন।
আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর ওপরও চাপ বাড়ছে। সম্প্রতি আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে যৌথ বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। গত সপ্তাহে আফগানিস্তানের ফারাহ প্রদেশে দুটি গ্রামে মার্কিন বিমান হামলায় প্রায় ১৩০ জন নিরহি মানুষের মৃত্যু হয়। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
৮·
শ্রীলঙ্কায় সেনাবাহিনী গোলাবর্ষণঃ বেসামরিক লোক নিহত
শ্রীলঙ্কায় গত সপ্তাহের শুরুতে সেনাবাহিনীর গোলার আঘাতে অন্তত ৩৭৮ জন বেসামরিক লোকের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে এক হাজার ১২২ জন। রণাঙ্গনের একটি হাসপাতালে কর্তব্যরত একজন সরকারি চিকিঃসক এ দাবি করেছেন।
তবে তামিল গেরিলাদের দাবি, ৯ মে রাত থেকে শুরু হওয়া সেনাবাহিনীর গোলাবর্ষণে দুই হাজার বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। সেনাবাহিনী এ গোলাবর্ষণের কথা অস্বীকার করেছে।
রণাঙ্গনের একটি সরকারি হাসপাতাল পরিচালনাকারী চিকিঃসক ভি শানমুগারাজা জানান, শনিবার এক রাতের সেনা অভিযানেই এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তিনি এ ঘটনাকে তামিল গেরিলাবিরোধী সেনা অভিযানের ‘সবচেয়ে রক্তাক্ত’ দিন হিসেবে অভিহিত করেছে।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী যে এলাকায় অবস্থান করেছে সেখান থেকেই এ গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। গেরিলাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট ‘তামিলনেট’ দাবি করেছে, এ অভিযানে প্রায় দুই হাজার নির্দোষ লোক নিহত হয়েছে। তবে নিরপে কোনো সূত্র থেকে এ হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত করা যায়নি। এলাকাটি সাংবাদিকদের জন্য প্রবেশ নিষিদ্ধ। এটি শ্রীলঙ্কা সরকারঘোষিত বেসামরিক নাগরিকদের জন্য নিরাপদ এলাকা।
৯·
নেপালি পার্লামেন্টের অধিবেশন অচল মাওবাদী বিক্ষোভ
রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় সরকার গঠনে সমঝোতায় পৌঁছতে ব্যর্থ হওয়ায় নেপালের প্রেসিডেন্ট রামবরণ যাদব গতকাল পার্লামেন্টকেই নতুন সরকার গঠন করতে বলেছেন। তবে মাওবাদী এমপিদের বিক্ষোভের মুখে পার্লামেন্টের অধিবেশনই বসতে পারছে না। গত রোববারও অধিবেশন মুলতবি করতে বাধ্য হন স্পিকার। মাওবাদী নেতা পুষ্প কমল দহল প্রচণ্ডের পদত্যাগের পর শনিবার পর্যন্ত সময় দিয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি সরকার গঠনের জন্য দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট যাদব। কিন্তু তা না হওয়ায় রোববার তিনি নতুন আবেদন রাখেন পার্লামেন্টের কাছে। পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোকে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে নতুন সরকার গঠনের তাগিদ দেন তিনি।
১০·
যুদ্ধ, সন্ত্রাস আর জঙ্গি হামলায় দণি এশিয়া এখন বিপর্যস্ত। একদিকে শ্রীলঙ্কায় তামিলদের সঙ্গে সরকারি বাহিনী যুদ্ধে বিপুলসংখ্যক বেসামরিক লোক মারা যাচ্ছে। অন্যদিকে পাকিস্তানে জঙ্গি ও সেনাবাহিনীর সংঘর্ষেও প্রাণ হারাচ্ছে নিরিহ জনতা। আফগানিস্তানে জঙ্গি হামলার পাশাপাশি চলছে যুক্তরাষ্ট্রের বোমাবর্ষণ এবং যথারীতি মারা যাচ্ছে সাধারণ মানুষ । নেপালে সেনাবাহিনীর সঙ্গে নবনির্বাচিত মাওবাদী নেতার দ্বন্দ্বে সদ্য পাওয়া গণতন্ত্রের স্বাদ বিস্বাদ হতে চলেছে। সব মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ বেশ কিছুদিন থেকেই শান্তিতে ঘুমোতে পারছে না। তাই অকপটেই বলা যায় দণি এশিয়া এখন মৃত্যর দিকে ধাবিত হচ্ছে।

Wednesday, May 6, 2009

সম্ভাবনার বাংলাদেশ

সুজলা সুফলা শষ্য শ্যামল আমাদের এই প্রিয় বাংলাদেশ। এ দেশে রয়েছে অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদ। এ সম্পদ সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক সমৃদ্ধশালী দেশ। এসব সম্ভাবনার কথা নিয়ে পাঠকদের জন্য এই বিশেষ রচনাটি লিখেছেন সাইফ বরকতুল্লাহ। আজ প্রকাশিত হলো ২য় পর্ব।


১৫·পাথরকুচি থেকে বিদ্যুত
এবার পাথর কুচি থেকে বিদ্যুত।অসাধারণ এক আবিষ্কার।আবিষ্কারক হলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌরশক্তি গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড· কামরুল আলম খান।এক একরে পাথরকুচি চাষ করে তা দিয়ে মাত্র ১কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা যাবে বিদ্যুত প্লান্ট।৫০মেগাওয়াটের এই প্লান্ট থেকে প্রতিদিন উতপন্ন হবে ৩১ লাখ ২০হাজার টাকার বিদ্যুত।৫০থেকে ৬০ বছর স্থায়ী হবে এই প্লান্ট ।এক বছরে প্লান্ট থেকে বিদ্যুত পাওয়া যাবে ১১৪কোটি টাকার।এই বিষ্কর উদ্‌ভাবনকে কাজে লাগানো গেলে বিদ্যুতের আর কোন সঙ্কট থাকবেনা। গ্যাসের জন্য কমে যাবে উদ্বেগ।আর এ পাথরকুচি পাতা চাষ করে কৃষকের ঘরেও আসবে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা।এক একর জমিতে পাথরকুচি আবাদ করে বছরে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উতপাদন করা যাবে। এর ফলে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে প্লান্ট তৈরি করে বিদ্যুতের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি অনেক লোকের কর্মসংস্থানও করা সম্ভব হবে।

১৬·পর্যটন
বিশ্ব পর্যটন শিল্পের মহাসচিব ফ্রান্সিকো ফ্রাংগিউলি বাংলাদেশ সফরে এসে বলেন, বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পের বিপুল সম্ভাবনার অসাধারণ সৌন্দর্যমন্ডিত দেশ। এখানে পর্যটন শিল্প বিকাশের জন্য উন্নত প্রযুক্তি বা মূলধনের প্রয়োযন নেই। বরং দেশের বিদ্যমান প্রাকৃতিক সম্পদ ও মানব সৃষ্ট সুবিধাদি দ্বারাই এ শিল্পকে উন্নত করা যায়।
পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার আর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট সুন্দরবন রয়েছে বাংলাদেশে।রয়েল বেঙ্গল টাইগার আমাদের গর্ব। রয়েছে নওগাঁর পাহাড়পুরে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধবিহার। ঢাকার লালবাগ কেল্লা,বাগের হাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ,সিলেটের চা বাগান ছাড়াও দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য পর্যটন ষ্পট।

১৭·সম্ভাবনার দুগ্ধশিল্প
দুগ্ধশিল্প। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর ২০০৮ দৈনিক প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছিল,৩৬৬ কোটি টাকা উতপাদন মুখী পশু স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ করা হলে এবং উন্নত মানের গোখাদ্যের নিশ্চয়তা দিতে পারলে দেশি দুধের উতপাদন দ্বিগুন করা সম্ভব। অর্থাত ২১ লাখ ৫৬ হাজার টন তরল দুধ বাজারে যোগ করা যাবে।

১৮·চা
বাংলাদেশ তৃতীয় বৃহত্তম চা রপ্তানিকারক দেশ। উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়ের মাটি চা উতপাদনের জন্য খুবই উপযোগী। চা উতপাদনে সিলেটের মাটিতে যেসব গুণাবলী রয়েছে পঞ্চগড়েও সেসব গুণাবলী রয়েছে। দিনাজপুর, ঠাঁকুরগাঁও এবং রংপুর অঞ্চলে ভারতের বিখ্যাত দার্জিলিং প্রজাপতির চা উতপাদন করতে পারলে অন্যন্য কৃষি পণ্যেও তুলনায় তিনগুণ লাভবান হওয়া সম্ভব।
১৯·কয়লা
বিশেষজ্ঞগণ বলেন,বাংলাদেশে যে পরিমান কয়লা মজুদ আছে তা উত্তোলন করতে পারলে ২০০ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা সম্ভব।বড়পুকুরিয়ায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত উতপাদন ২০৫-৩০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করা সম্ভব।

Thursday, April 2, 2009

পিলখানা নৃশংসতা: স্বপ্নের বন্দরে রক্তক্ষরণ

স্বপ্নের বন্দরে রক্তক্ষরণ:
কীযে বিষণœ লাগছে। সমস্ত চরাচরে যেন ঢেকে আছে বিষাদে। কয়েকদিন থেকে আমার মনটা ভাল নেই। আমি গিয়েছিলাম ঢাকা মেডিকেলের মর্গে। সেনা অফিসারদের লাশ দেখেই আর বাঁধ মানলনা অশ্র“ধারা। গত কয়েকদিন আগেওতো এরা প্রত্যেকে ছিলেন একেকজন ব্যক্তি। প্রত্যেকের ছিল একেকটা আকাশ। এঁদের প্রত্যেকের জন্মের পরে আজান দেওয়া হয়েছে। বাবা-মা ভাইবোন আত্মীয় পরিজন নিয়ে প্রত্যেকের আছে বেড়ে ওঠার ইতিহাস। স্কুলে গিয়ে দুষ্টুমি কিংবা অসাধারণ কোনো কৃতিত্বের গল্প। মেধাবি একেকজন মানুষ ছিলেন এঁরা। অনেকেই ক্যাডেট কলেজের চৌকস ছাত্র। বিতর্ক, লেখালেখি, সংস্কৃতি চর্চায় ছিলেন উজ্জ্বল। অথচ মাত্র ৩৩ ঘন্টার মধ্যেই হলিখেলায় স্তব্ধ বাতাস।
\ দুই \
২৫ ফেব্র“য়ারি, বুধবার। সকাল থেকেই দাবি আদায়ের নামে বিডিআর জওয়ানেরা সদর দপ্তরে ভয়াবহ তান্ডব চালায়। তারা দরবার হলে গুলি করে পদস্থ কর্মকর্তাদের হত্যা করে। অনেকের মরদেহ নর্দমায় ফেলে দেয়। এঁদের মরদেহ পরে নদীতে ভাসতে দেখা যায়। পদস্থ কর্মকর্তার স্ত্রী ও সন্তানদের ভেতর জিম্মি করে নির্যাতন চালানো হয় বলে জানা যায়। দীর্ঘ সময় তাদের অভূক্ত অবস্থায় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখে উচ্ছৃঙ্খল জওয়ানেরা। অনেক বাড়িঘর ও যানবাহনেও আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। তাদের গুলিতে সদর দপ্তরের বাইরেও অনেক হতাহত হয়।
\ তিন \
২৬ ফেব্র“য়ারি, বৃহস্পতিবার। ৩৩ ঘন্টার শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার পর বিডিআর জওয়ানদের আত্মসমর্পনের মধ্যদিয়ে তাদের রক্তক্ষয়ী বিদ্রোহের অবসান হয়েছে। কয়েক দফায় দীর্ঘ আলোচনার পর ২৬ ফেব্র“য়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টায় বিডিআর সদর দপ্তরের সব জওয়ান তাদের অস্ত্র পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এর পরই পুলিশ আলো নিভিয়ে সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।
\ চার \
বাতাস ভারি হয় কান্নায়
ছবির মতো মানুষ। টেলিফোন করেছিল তার প্রিয়তমা স্ত্রী সাথীকে। বলেছিল, সাথী দেখা হলেতো ভালো, না হলে ক্ষমা করে দিও। আর হুইল চেয়ার থেকে যেন তোমার হাত না সরে! আমৃত্যু এই কথাটা রাখবে তুমি সাথী! মেজর হুমায়ুন হায়দার পাবলো। তাঁর ছেলের নাম রেখেছিল ঋত্বিক। ঋত্বিক হুইল চেয়ারে দিন কাটায়। রাতে শুধু বিছানাতে ঘুমায়। আর আছে রূপন্তি। পাবলোর রাজকন্যা। ছয়মাসের মতো বয়স। সাথী এখন কী করবে ? ফরেন মিশনসহ সব ধরনের ইনকাম জড়ো করে পাবলো ঋত্বিকের পেছনেই খরচ করত। দারুনভাবে অসুস্থ ছেলেটা যদি একটু ভালো থাকে। আজ পাবলো নেই। ছোট্র রূপন্তিকে নিয়ে দূর্গম সংসার যাত্রায় হুইল চেয়ারের পেছনে কীভাবে থাকবে এখন সাথীর শক্ত হাত ?


\ পাঁচ \
“ওরা আমাদের ডিজি স্যার শাকিল আহমেদকে হত্যা করেছে। আমি দরবার হলে ভয়ানক বিপদে আছি। তোমরা ভালো থেকো।“ এই ছিল বিডিআর সদর দপ্তর পিলখানায় নিহত মেজর আহমেদ আজিজুল হাকিম পলাশের জীবনের শেষ কথা। স্ত্রী আকলিমা খাতুন রেবার সঙ্গে ২৫ ফেব্র“য়ারি সকালে বিডিআরদের হাতে জিম্মি অবস্থায় ফোন করে কথা বলেন মেজর পলাশ। কিন্তু ফোনের কথা শেষ না হতেই স্তব্ধ হয়ে যায় তার কÚ। শতবার চেষ্টা করেও পলাশের কÚ আর শোনা যায়নি। হয়ত সে সময়েই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। মোবাইল ফোনটি চালু থাকায় রেবা শুনেছেন সেখানকার অন্যদের আর্তনাদ আর প্রচন্ড গোলাগুলির শব্দ। প্রায় ৫ মিনিট পর মেজর পলাশের মোবাইল ফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকার পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরের দরবার হলের ভেতরে কথিত বিডিআর বিদ্রোহের নারকীয় শিকার হয়ে প্রাণ দিতে হয় সদা হাস্যোজ্জল মেজর পলাশকে।
\ ছয় \
২৫ ফেব্র“য়ারি অফিসে যাবার কিছুক্ষণ পরেই স্ত্রীর মোবাইলে ফোন দেন মেজর মোশাররফ। স্ত্রী লিপি রিসিভ করতেই শুনতে পান গুলির শব্দ। মোশাররফ লিপিকে জানান, দরবার হলে জওয়ানরা এ্যাটাক করেছে। তুমি একটু সাবধানে থেক। ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে রেখ। এই বলে ফোনটি রেখে দেন মোশাররফ। এরপর মোশাররফ ফোন করেন ছোট ভাই মোবারক হোসেনকে। মোবারক বলেছেন, পিলখানায় যুদ্ধাবস্থা, তুই তোর ভাবি আর আকিবকে বাঁচা। এরপর আর শত চেষ্টা করেও মোবারক ও লিপি মোশাররফের ফোনে সংযোগ পাননি। সন্তান সম্ভবা লিপি নিজের অসুস্থতার কথা বলে কোনো মতে রেহাই পান সেদিন। পরেরদিন পিলখানা থেকে বেরিয়ে এলেও স্বামীর আর কোন খোঁজ পাননি। ২৭ ফেব্র“য়ারি সকাল সাড়ে দশটার দিকে পিলখানার ১৩ ব্যাটালিয়নের কাছ থেকে যে দশটি লাশ পাওয়া যায় সেখান থেকে শনাক্ত করা হয় মেজর মোশাররফের মৃতদেহ। পরেরদিন গ্রামের বাড়িতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে দাফন করা হয়।
\ সাত \
২৫ ফেব্র“য়ারি সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ছেলে লে. কর্ণেল রবি রহমানের ফোন পেয়েছিল বাবা ফয়জুর রহমান। ফোনে সন্তানের ভয়ার্ত কÚ বিচলিত করে তোলে তাকে। বাবাকে রবি বলেন, পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ করেছে। সেনা কর্মকর্তাদের জিম্মি করা হয়েছে। সন্তানের এ খবরে চিন্তিত হয়ে পড়েন তিনি। পাঁচ মিনিট পর আবারও ফোন আসে। লে. কর্ণেল রবি বাবাকে বললেন, বাবা আর মনে হয় তোমাদের সঙ্গে দেখা হবে না। তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিও। যদি বেঁচে না থাকি তাহলে মায়ের পাশে আমাকে কবর দিও। তারপর রবির সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়নি বাবার। বারবার চেষ্টা করেও তার পরিবারের সদস্যরা কর্ণেল রবি রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। সেনাবাহিনী পিলখানায় ঢুকে যে গণকবর আবিস্কার করে তার মধ্যে পাওয়া যায় লে. কর্ণেল রবির মৃতদেহ।
\ আট \
নীড়ে আর ফেরা হলো না
নীড়-বিয়ানীবাজার উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের টিকরপাড়ার কাউদিয়া গ্রামের একটি বাড়ীর নাম। এলাকার লোকজন বলত সুখের নীড়। এই পরিবারের ছেলে মেয়েরা উচ্চ শিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত। অথচ এই সুখের নীড় থেকেই এখন ভেসে আসছে শুধুই কান্নার শব্দ। প্রায় দুই বছর আগে ৩৬ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের সিও হিসেবে এনায়েত বিডিআরে যোগদান করেন। বাবা মরহুম মুশফিকুর রহমান চৌধুরী ঢাকায় ব্যবসা করার সুবাদে এনায়েতরা সব ভাই-ই উচ্চ শিক্ষা অর্জনে ঢাকার বাসিন্দা হয়ে যান। তবু ছুটি পেলেই বিয়ানী বাজারের আপন নীড়ে মায়ের কোলে ছুটে আসতেন এনায়েত। মায়ের প্রতি এত যার টান তার মুখটা শেষবারের মতো দেখা হলো না মায়ের। এনায়েতের মরদেহটাও আনা গেল না নীড়ে। গত ১ মার্চ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
\ নয় \
আমরা মারত্মক বিপদে আছি
২৫ ফেব্র“য়ারি সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে বিডিআর সদর দপ্তরের দরবার হলে গুলিবর্ষণ শুরু হওয়ার পর শেষবারের মতো লে. কর্ণেল এলাহী মঞ্জুরের সঙ্গে কথা হয় তার স্ত্রী তান্নি মঞ্জুর চৌধুরীর। এ সময় মঞ্জুর ফোন করে স্ত্রীকে জানান, আমরা মারাত্মক বিপদে আছি। আমরা পাঁচজন অফিসার একটি বাথরুমে লুকিয়ে আছি। ছেলেমেয়েদের তুমি সাবধানে ও নিরাপদে থেক। এই ছিল একান্ত স্বজনদের সঙ্গে শেষ কথা। এরপর এলাহী মঞ্জুরের মোবাইল ফোনে বার বার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে পারেননি স্বজনেরা। গত ৪ মার্চ ক্ষতবিক্ষত দেহের আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে যে মৃতদেহগুলো পড়ে আছে সেগুলোর একটি মঞ্জুরের।
\ দশ \
কোথাও গেলে তো আব্বু আবার ফিরে আসে,
মারা গেলে কেন ফিরে আসবেন না ?
আমি ভালো আছি, চিন্তা করনা। ২৫ ফেব্র“য়ারি ১১ টা ৪৫মিনিটে পিলখানায় আটকা অবস্থা থেকে স্ত্রী উর্মিকে মোবাইল ফোনে এই কথাটা বলেছিলেন লে. কর্ণেল সাজ্জাদুর রহমান। কিন্তু উর্মির চিন্তা তো আর এসব নিষেধাজ্ঞা মানতে চায়না। তার দুশ্চিন্তাগুলো সেদিনের বিডিআর জওয়ানদের মতোই উচ্ছৃঙ্খল হয়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত শারমিন নিশাত উর্মির দুশ্চিন্তাই সত্যি হল। লে. কর্ণেল সাজ্জাদ স্ত্রীকে দেয়া শেষ কথাটা আর রাখতে পারলেন না। ভালো আর থাকা হলো না সাজ্জাদের। বিভ্রান্ত জওয়ানদের বীভৎসতায় পিলখানার গণকবরের ঘটনার প্রায় ৫৮ ঘন্টা পর খোঁজ মেলে সাজ্জাদুর রহমান দোলনের মরদেহের। দোলন আর উর্মি দম্পতির দুই ছেলে ইত্তেশাদ (১১) ও ইশাদ (৭) এর দিন কাটছে বাবার পথ চেয়ে। ইত্তেশাদ রাইফেল পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। ইশাদকে তার মা বলেছেন বাবা মারা গেছেন। ইশাদ জিজ্ঞেস করেছে-মারা যাওয়া থেকে কখন আসবেন ? আব্বু তো প্রায়ই অনেক জায়গায় যান। শান্তি মিশনে, যুদ্ধে, বাজারে-সব জায়গা থেকেই তো ফিরে আসেন। মারা যাওয়া থেকে আসবেন না কেন ? সরল শিশুটির জিজ্ঞাসা।
\ এগার \
বইমেলায় যাওয়া হলো না সাইতী ও সুহার
“দেখ, তোমাদের সময় দিতে পারি। চাকরিজীবনে কাটিয়েছি বিদেশে। আর এখন চলছে বিডিআর সপ্তাহ। সেজন্য এই কয়টা দিন ব্যস্ত থাকব। তারপরও কথা দিচ্ছি আগামী ২৮ ফেব্র“য়ারি সময় দেব। সুহা এবং তোমাকে নিয়ে যাব বই মেলায়।“ কথাগুলো বলেছিলেন সেনা কর্মকর্তা মেজর আসাদুজ্জামানের স্ত্রী সাইয়ারা সুলতানা সাইতীকে গত ২৫ ফেব্র“য়ারি। কিন্তু মেলায় আর যাওয়া হয়নি। ঘাতক বিডিআর জওয়ানদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন মেজর আসাদ। গত ২৮ ফেব্র“য়ারি ছিল তার ৬ষ্ঠ বিবাহ বার্ষিকী। তার আগেই তিনি প্রাণ হারান। রেখে যান স্ত্রী এবং কন্যাকে। গত ২৭ ফেব্র“য়ারি রাতে পিলখানায় গণকবর থেকে মেজর আসাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
\ বার \
দেখার কেউ নেই
“বাবা বলেছিলেন এখন লেখাপড়া কর, দরবার থেকে ফিরে খেলা দেখাতে নিয়ে যাব, বাসায় অনেক আঙ্কেল এসেছিলেন কিন্তু বাবা আর আসেননি।“ এভাবে কাদতে কাদতে কথাগুলো বলছিল ঢাকার পিলখানার ঘটনায় নিহত দরবার হলের ক্লার্ক নায়েক বসির উদ্দিন বিশ্বাসের চার বছর বয়সী শিশুপুত্র অপু। গত ২৭ ফেব্র“য়ারি রাতে বসিরের (ব্যাচ নং-৬০৮৩৫) লাশ ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মতনেজা গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এখন তার স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে দেখার কেউ নেই।
\ তের \
বিপ্লবের মোড়কে
মানবতার অপমান
সিডরের মতো হঠাৎ আসা এ ঝড় সামাল দেওয়ার মতো সাহস ও শক্তি হারিয়ে গেছে এ পরিবারগুলোর। আমরা স্তব্ধ, শোকাহত, হতবাক। কোনও সামরিক যুদ্ধ নয়, কোনও সেনা অভ্যুত্থান নয়, তথাকথিত বিপ্লবের রঙচঙে মোড়কে স্রেফ খুন করা হয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় সেনা কর্মকর্তা আর তাদের পরিবার পরিজনকে। সাধারণ ক্ষোভকে পুঁজি করে কূটকৌশল এবং ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে ডিজি শাকিল আহমেদ সহ বিডিআরে কর্মরত সেনা অফিসারদের। ক্ষোভের কারণ থাকতে পারে, অসন্তোষ থাকতে পারে, কিন্তু তা ইন্ধন যোগাবে একটি গণহত্যার- এটি মেনে নেওয়া যায়না।

শেষ কথা
অশ্র“ মুছে তাকাতে হবে সামনে ...
এত এত সফল উজ্জ্বল মেধাবী চৌকস মানুষ হারিয়ে সত্যি সত্যি কাঁদছি। আজকের আকাশটা যেন ভারি হয়ে আছে, প্রকৃতিও যেন কাঁদছে। কিন্তু বুঝি, শুধু কাঁদার সময় এটা নয়, কান্না মুছে জাতিকে আবার সামনের দিকে তাকাতে হবে। সরকারের সামনে, নেতাদের সামনে, সেনাবাহিনীর সামনে, বিডিআরের সামনে কত যে করণীয়। গণতন্ত্র নস্যাৎ, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিঘœ করা আরও কত যে গভীর সুদূর প্রসারী অসদুদ্দেশ্য থেকে এই হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে ! তদন্তের মাধ্যমেই সেটা উদ্ঘাটন করা সম্ভব। আর গণতন্ত্রকে রক্ষা করে যেতে হবে চোখের মণির মতো। এ ব্যাপারে আমাদের সরকার ও সামরিক বাহিনীর ভূমিকা দেশবাসী ও বিশ্ববাসীর কাছে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে।
বাংলাদেশের মানুষের একটা বৈশিষ্ট হলো আমরা অপরাজেয়। দুর্যোগে দুর্বিপাকের আঘাতে খানিকক্ষণের জন্য হয়তো হেলে পড়ি, কিন্তু আবার উঠে দাঁড়াই আমরা। পরাজয় মেনে নিই না। আমাদের জাতীয় জীবনের একটা বড় বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি বটে কিন্তু এবারও বাংলাদেশের মানুষ হেরে যাবে না। আমরা আমাদের শোককে শক্তিতে পরিণত করে সামনের দিকে এগিয়ে যাব। শুধু পরিবারগুলো তাদের স্বজনদের আর ফিরে পাবে না, এই কথা ভাবলেই আবার আমার চোখটা জলে ভেসে যায়।

সম্ভাবনার বাংলাদেশ

"আমারও দেশেরও মাটিরও গন্ধে
ভরে আছে সারা মন
সবুজও শ্যামলও পরসও ছাড়া
যে নেই কিছু প্রয়োজন"




শিল্পীর এই গানের সাথে কন্ঠ মিলিয়ে বলতে হয়, আমাদের এই প্রিয় দেশ বাংলাদেশের রয়েছে সোনলী অতীত। ইবনে বতুতা এই দেশটিকে পৃথিবীর ধনী অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করেন। সম্রাট হুমায়ুন প্রথম পদার্পণেই অবাক বিস্ময়ে এর নাম দেন জান্নাতাবাদ। কিন্তু ঐতিহাসিক কাল থেকে উপর্যুপরি বিদেশীদের লুন্ঠন, ইংরেজদের সাম্রাজ্যবাদী ষড়যন্ত্র ও দুইশত বছরের শোষণ এবং পাকিস্তানী বৈষম্যের শিকারে এদেশ হয়েছে পিষ্ট। বঞ্চিত এই মানুষগুলো সীমাহীন ত্যাগের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে অর্জিত ¯^vaxbZv নিয়ে আশায় বেঁধেছিল বুক। কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ¯^‡cœi সোনারবাংলা ¯^cœB থেকে যায়- দুর্নীতি, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও রাষ্ট্রনায়কদের সিদ্ধান্ত হীনতার ফলে। তবুও থেমে নেই এ দেশের পরিশ্রমী জনগণ; শত ঝড়-ঝঞ্ঝার মাঝেও সর্বস্ব ঢেলে দিয়েছেন দেশের কল্যাণে। তাইতো বিশ্ব প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশও এগুচ্ছে মাথা উঁচিয়ে।

একবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে এসে যখন কোটামুক্ত বিশ্বে বাংলাদেশের পোশাকশিল্প পাশ্চাত্যের বাজার জয় করছে, যখন প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স উত্তরোত্তর বাড়ছে, আসছে বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগ, যখন ড. মুহাম্মদ ইউনুস শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান, তখন অমিত সম্ভাবনার এই প্রিয় মাতৃভুমিকে নিয়ে ¯^‡cœ উদ্বেলিত হই। ঠিক এই মুহুর্তে দরকার এক দল দেশপ্রেমিক, ন্যায়পরায়ণ, সৎ ও যোগ্য মানুষের, যাদের নেতৃত্বে ১৫ কোটি জনগণ সম্ভাবনাগুলোকে বাস্তবে রূপ দেবে।

২.সম্ভাবনার বাংলাদেশ...! শব্দটি আমার কাছে খুব পরিচিতি। বিভিন্ন গোষ্ঠী, মহল ও ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায়ই শব্দ দু’টি আমরা শুনে থাকি। সত্যিকার অর্থে প্রতিটি জনগোষ্ঠী প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধির জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু' বাস্তবতা হচ্ছে, কেউ সমৃদ্ধি, কেউ সমৃদ্ধির কাছাকাছি, কেউ আবার সমৃদ্ধি থেকে অনেক দূরে। সমৃদ্ধি অর্জনের কৌশল, পদ্ধতি নিয়ে প্রচুর গবেষণা, সেমিনার, লেখালেখি ও বক্তৃতা হচ্ছে। আসুন সম্ভাবনার বাংলাদেশের একটি প্রতিচ্ছবি কল্পনা করা যাক।



৩. মানব উন্নয়ন
দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থিক ও ভৌত উভয় প্রকার উৎপাদনশীল সম্পদ সৃষ্টি করতে প্রয়োজন সামাজিক খাতে ব্যাপক ব্যয়। এ লক্ষ্যে সরকার শিক্ষা, বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি খাতে বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দিয়ে আসছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা অনুযায়ী নার্স ও তথ্য প্রযুক্তিবিদ পাঠাতে পারলে বাংলাদেশ বছরে কয়েক বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে।





৪. সমাজকল্যাণ
দুস্থ্য, দরিদ্র ও অসহায় এবং অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর সার্বিক অবস্থার উন্নয়ন দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির একটি শুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক। তাই সরকার সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতায় বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধিদের শিক্ষা ও প্রশিন, কিশোর অপরাধ দুরীকরণ ইত্যাদি ব্যাপক কর্মসূচী পরিচালনা করছে। অধিক বয়স্ক-দরিদ্র ব্যক্তিদের জন্য ভাতা নিশ্চিত করতে সরকার বয়স্কদের বয়সসীমা প্রথমে ৫৭ হতে ৬০ এবং সমপ্রতি ৬৫-তে উন্নীত করে। ২০০১-০২ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দকৃত ৫০ কোটি টাকা বিপরীতে মাসিক ১০০ টাকা হারে ৪১৫১৭০ জন বয়স্ক লোক উপকৃত হয়, যা ২০০৪-০৫ অর্থবছরে বৃদ্ধি পেয়ে ২৬০ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা হয় এবং এতে উপকৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৩ লক্ষ ১৫ হাজার জন। সংখ্যা দাঁড়ায় ১৩ ল ১৫ হাজার জন।



৫. কৃষি
বিশেষজ্ঞগণ আশা করছেন-২০২০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ প্রায় সকল প্রকার কৃষি পণ্য বা কৃষি শস্য উৎপাদনে সম হবে এবং খাদ্যে ¯^qsm¤ú~Y©Zv অর্জন করবে। জিডিপিতে (২০০৫-২০০৬) কৃষির বিভিন্ন উপখাতের mgwš^Z অবদান ২১.৭৭%।
BBS Labour Force Survey; ২০০২-০৩ অনুযায়ী দেশের মোট শ্রমশক্তির শতকরা ৫১.৭ ভাগ কৃষিখাতে নিয়োজিত। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর মতে, মার্চ ২০০৬ পর্যন- দেশের মোট রপ্তানিতে কৃষিজাত পণ্যের অবদান শতকরা ৬.২৭ ভাগ। কৃষিখাতে ভর্তুকি ও সহায়তা হিসেব ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ১২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ এবং ২০০৪-০৫ অর্থবছরের ৪৯৫৬৭৮ কোটি টাকা কৃষি ঋণ বিতরণ করা হয়।


৬. শিা
শিা মন্ত্রণালয়ের ব্যানবেইসের ২০০৬ সালের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে ১৯৭৬৬টি মাধ্যমিক ও উ"চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৩০২টি সাধারণ কলেজ, ৯০৫১টি মাদ্রাসা, ১১৭টি পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউট, ৬৪টি ভোকেশনাল ইনষ্টিটিউট, ২২টি পাবলিক ইউনিভার্সিটি ও ৫৪টি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি রয়েছে। ২০০৬ সনের সাময়িক তথ্য অনুযায়ী নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিার্থী সংখ্যা ৮,০৮, ১৯৫৬ জন, কলেজ পর্যায়ে ১,০০৭, ২৪১ জন এবং মাদ্রাসা শিায় ২৯,৪৫,৮২৪ জন। নারী শিায় ব্যাপক প্রসার ঘটিয়ে নারীর মতায়ন ও আর্থ-সামাজিক অবস'ার উন্নয়নের ল্যে সরকার দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন- মেয়েদেরকে উপব"ত্তি প্রাপ্ত বেতন মওকুফ সুবিধা প্রদান করেছে। বর্তমানে মাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীর অনুপাত ৪৭.৫৩। উল্লেখ্য, ব্যানবেইসের তথ্যানুযায়ী বর্তমানে দেশে শিার হার ৬৫.৫%।




৭. তথ্যপ্রযুক্তি
বাংলাদেশ আন-র্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস'া শুধু স্যাটেলাইট নির্ভর ছিল যা ব্যয়বহুল, ধির গতি ও ¯^í ব্যান্ড উইথ সম্পন্ন। wW‡m¤^i ২০০৫ এ ঝঊঅ-গঊ-ডঊ-৪ সাবমেরিনকেবল এর কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং ২০০৬ থেকে এর কার্যক্রম চালু হয়েছে। সাবমেরিন কেবল সিষ্টেমের সফল ব্যবহারের মাধ্যমে ¯^í সময়ের মধ্যে দেশে তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত নাানবিধ কর্মকান্ডের দ্র"ত বিকাশ লাভ করবে। দেশে অপটিক্যাল ফাইবার সুবিধার ফলে-ইগভর্নেন্স, ই-কমার্স, ই-এডুকেশন ও টেলিমেডিসিন সার্ভিস চালু করা যাবে এবং অন্যান্য দেশের সাথে ইন্টারন্যাশনাল ভয়েস সার্কিট বাড়ানোর উজ্জ্বল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

৮. প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদ
আয়তনে ুদ্র হলেও বাংলাদেশের ভূ-গর্ভে লুকায়িত রয়েছে চুনাপাথর, তামা, সিলিকা বালু, লবণ, কঠিন শিলা, চীনা মাটি ইত্যাদি অসংখ্য খনিজ সম্পদ। নেত্রকোনা জেলার অবসি'ত খনিতে চীনা মাটির পরিমাণ আনুমানিক ৪ ল ৬৪ হাজার টন।কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ও সেন্টমার্টিন দ্বীপে তেজস্ক্রিয় বালি- ইলমেনাইট, জিরকন, মোনাজাইট, রিওটাইল,ম্যাগনোটাইট, লিউকক্সিন ইতাদি পাওয়া গেছে যা (Black Gold) বা ‘কালো সোন’ হিসেবে খ্যাত।এছাড়া মৌলভীবাজার জেলারকুলাউড়া পাহাড়ে ইউরেনিয়াম পাওয়া গেছে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, হবিগঞ্জের শাহজীবাজার, জামালপুরের ঝালিঝুরিতে সিলিকা বালির সন্ধান পাওয়া গেছে।দিনাজপুরের মধ্যপাড়া কয়লা খনিতে সোনা এবং দীঘিপাড়া ও নওগাঁর পত্নীতলা কয়লা খনিতে রূপা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


৯. গ্যাস
গ্যাস দেশের মোট জ্বালানির প্রায় ৭০ ভাগ পূরণ করে। এ পর্যন- আবিস্কৃত ২৩টি গ্যাস েত্েরর ২২টিতে মোট প্রাক্কালিত গ্যাস মজুদের পরিমাণ ২৮.৪ ট্রিলিয়ন ঘনফুট এবং প্রাথমিক উত্তোলনযোগ্য মজুদের পরিমাণ ২০.৫১ ট্রিলিয়ন ঘনফুট।International Energy Outlook ২০০০ এর Worldwide look at Reserve and Production Journal-এ উল্লেখ করা হয়েছে-২০২০ সালে বাংলাদেশ হবে প্রাকৃতিক গ্যাসনির্ভর একক জ্বালানি দেশ।মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ ও পেট্রোবাংলা যৌথ সমীা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়- বাংলাদেশে অনাবিস্কৃত প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদের পরিমাণ প্রায় ৩২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট।


১০. ঔষধ শিল্প
বাংলাদেশ দণি এশিয়ার একটি ¯^‡ívbœZ দেশ হয়েও বিগত কয়েক বছরে ঔষধ শিল্পে প্রশংসনীয় উন্নতি লাভ করেছে। খুব উন্নত প্রযুক্তির কিছু ঔষধ ছাড়া প্রয়োজনীয় প্রায় সকল প্রকার (৯৬৫) ঔষধ বর্তমানে স'ানীয় ভাবে উৎপাদিত হ"েছ। সর্বমোট ২৩৭টি এ্যালোপ্যাথিক ঔষধ প্রস'তকারী প্রতিষ্ঠান বছরে প্রায় ১৪০০০ ব্রান্ডের ৪৭০০ কোটি টাকার ঔষধ ও ঔষধের কাঁচামাল উৎপাদন করছে। ঔষধ শিল্পে Good Medicine Paactive(GMP) অনুশীলনে অগ্রগতি ও উৎপাদিত ঔষধ আন-র্জাতিক মান সম্পন্ন বিধায় বর্তমানে ২৭টি কোম্পানির দেশে উৎপাদিত ১৮২টি ব্রান্ডের বিভিন্ন প্রকারের ঔষধ ও কাঁচামাল জাপান, কানাডা, ইতালি, কোরিয়া, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের প্রায় ৬৭টি দেশে রপ্তানি হ"েছ এবং এ প্রেতিে বাংলাদেশ ঔষধ শিল্পে আমদানিকারক দেশের পরিবর্তে রপ্তানিকারক দেশের গৌরব অর্জন করেছে। বাংলাদেশই খউঈ ভুক্ত একমাত্র দেশ যা অভ্যন-রীণ প্রয়োজন মেটানোর পর রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। দেশের ঔষধ শিল্পই আগামীতে বস্ত্র শিল্পের সম্ভাবনার সমান কাতারে অবস'ান করবে।




১১. কুটির শিল্পনক্‌শী কাঁথা, পটচিত্র, শখের হাঁড়ি, পুতুলচিত্র, খেলনাচিত্র, বয়নশিল্প, চার" কার"শিল্প, হস-শিল্পে এই ¯^Zš¿ ভুবনে অমিত সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে।






১২. সম্ভাবনার বাংলাদেশ ঃ সমস্যার অন-রালে
আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি, সোনার বাংলাদেশ, যা অধিক জনসংখ্যার দোষে দুষ্ট আজ বেশ কিছু েত্ের ব্যাপক সাফল্য দেখিয়েছে যা আমাদেরকে সম"দ্ধ বাংলাদেশের ¯^cœ দেখতে সাহস জোগায়। নিন্মোক্ত সমস্যাবলিকে সম"দ্ধ বাংলাদেশের পথে অন-রায় হিসেবে দেখানো যেতে পারে। দারিদ্র্য, বেকারত্ব, যৌতুক, এসিড সন্ত্রাস, অপুষ্টি, মাত"ম"ত্যু শিশুম"ত্যু, পথশিশু, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি সমস্যাবলি বেশ প্রকট রূপ ধারণ করেছে। অন্য দিকে মনোসামাজিক সঙ্কট নানাবিধ জটিল সমস্যার জন্য দায়ী- মাদকাশক্তি, আত্মহত্যা, ইত্যাদি। সুশাসনের সূচকগুলোও ভালো যা"েছ বলে দাবি করা দুষ্কর। এখনো মানবাধিকার, দুর্নীতি, গণতন্ত্র ইত্যাদি ইস্যুতে বাংলাদেশ প্রশ্নবিদ্ধ।


১৩. একটি সম"দ্ধ বাংলাদেশ
সার্বজনীন শিা, সচেতনতা, শিল্পায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ইত্যাদি েত্ের কাড়িখত উন্নয়নের মাধ্যমে একটি সম"দ্ধ বাংলাদেশ গড়া যেতে পারে। যেখানে ¯^v¯'¨ সেবা-চিকিৎসা, মাতৃম"ত্যু, শিশুম"ত্যু, প্রজনন ¯^v¯'¨, শিাব্যবস'া, সার্বজনীন কাড়িখত শিা, নৈতিক শিা, সামাজিক শিাসহ অন্যান্য সূচকগুলোও সম"দ্ধ বাংলাদেশের চেতনাকে প্রভাবিত করবে। সম্পদের সুষ্ঠু বন্টন, ব্যাপক কর্মসংস'ান স"ষ্টি, জাকাতের সঠিক চর্চা ইত্যাদি পদেেপর মাধ্যমে দারিদ্র্যকে দূরীভূত করা হবে। পাশাপাশি পরমতে শ্রদ্ধা, ভ্রাতৃত্ববোধ, কমিটমেন্ট ¯^"QZv ইত্যাদি পূর্বশর্ত নিশ্চিত করার মাধ্যমে সুশাসেনর কাড়িখত অর্জন বাংলাদেশকে ঠিকই সম"দ্ধ করে তুলবে।সবচেয়ে আশার দিক হলো বাংলাদেশে ঈর্ষা করার মতো একটি যুবসমাজ রয়েছে। যাদের দায়িত্বের প্রতি কমিটমেন্ট এ ল্য অর্জনে গতি সঞ্চার করবে।



১৪. পনের কোটি মানুষের ত্রিশ কোটি হাত
বাংলাদেশে রয়েছে পনের কোটি হাত। আজ পনের কোটি মানুষ ত্রিশ কোটি হাত বাংলাদেশের জন্য ফাস নয়, অভিসম্পাদ নয় বরং সেরা সম্পদ এবং আশির্বাদ। শুধু এ জন্যেই প"থিবীর মানচিত্রে ছোট্ট বাংলাদেশ সবার কাছে বিশাল বাংলাদেশ। কোন প্রকার বিভাজন নয় বরং ঐক্যবদ্ধ পনের কোটি মানুষ আজ আকাশ ছোয়ার ¯^cœ দেখে। আমরা যদি প্রতিটি মানুষকে মানুষ করি, ত্রিশ কোটি হাতকে যোগ্যতাসম্পন্ন দ কর্মীর হাতে পরিণত করি, তাহলে বাংলাদেশের বর্তমান অবস'ান থেকে বিশাল উত্তরণ সম্ভব। এমনকি বাংলাদেশের বর্তমান আয় বেড়ে দাড়াতে পারে দ্বিগুণ, দশগুণ, বিশগুণ, পঞ্চাশগুণ, একশতগুণ এমনটি একহাজারগুণের বেশী। আমরা কি পারি না বিষয়গুলি নিয়ে গভীর চিন-া করতে এবং তা বাস-বায়নের উদ্যোগ নিতে?

Wednesday, March 4, 2009

My blog start

Dear all,
salam and welcome.
toady I start my blog.
so evrybodywishes
all are.

saif barkatullah