Pages

Saturday, June 5, 2010

জানালার পাশে ছোট্টো মেয়ে তোত্তো-ছান




জানালার পাশে ছোট্টো মেয়ে তোত্তো-ছান । এ বইয়ের লেখক কুরোয়ানাগি তেতসুকো হচ্ছেন জাপানের বিখ্যাত কথাশিল্পী, টিভি অনুষ্ঠানের উপস্থাপক এবং জাতিসংঘ শিশু তহবিলের বন্ধুত্বের দূত। তাঁর প্রথম প্রতিনিধিত্বকারী সাহিত্যকর্ম জানালার পাশে ছোট্টো মেয়ে তোত্তো-ছান ১৯৮১ সালে জাপানে প্রথম প্রকাশিত হয়। ২০০১ সাল পর্যন্ত এ বইয়ের জাপানী ভাষা সংস্করণের বিক্রির পরিমাণ ছিল ৯৩ লাখ ৮০ হাজার। জাপানে প্রতি তিনটি পরিবারে এ বইটি আছে।

বইটি ৩৩টি ভাষায় অনুবাদ করা হয়ছে। এ বইয়ের ইংরেজী সংস্করণ যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশের সময় নিউইয়র্ক ডেইলি পত্রিকায় বইটি প্রসঙ্গে গোটা দু'পাতার মন্তব্য প্রকাশিত হয়। আগে এ পত্রিকা কখনও এমন মন্তব্য প্রকাশ করেনি এবং পরেও করেনি। জাপানের ভেতরেই এ বইয়ের ইংরেজী সংস্করণের বিক্রীর পরিমাণ ৭ লাখে দাঁড়িয়েছে এবং এ পর্যন্ত এই সংখ্যা সর্বোচ্চ।

জানালার পাশে ছোট্টো মেয়ে তোত্তো-ছান নামে বইটিতে প্রাথমিক স্কুলে অর্জিত একটি বাস্তব অভিজ্ঞতা লেখক বর্ণনা করেছেন। ৭ বছর বয়সী তোত্তো-ছান বড় মানুষের চোখে অবশ্যই একজন ভালো শিশু নয়। তার দুষ্টুমির কারণে সে স্কুল ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। তার মা একজন বিনম্র নারী। তিনি তোত্তো-ছানকে একটি বিশেষ স্কুলে পাঠিয়েছেন। এ স্কুলে আবর্জনাবাহী রেলপথের গাড়িকে কাসরুম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। শিশুরা যার যার নিজের ইচ্ছা মতো স্বাধীনভাবে বিভিন্ন বিষয় এখানে শেখে। তাদের বসার আসন নেই এবং বিভিন্ন কাসের শিশুরাও একসাথে বসতে পারে। স্কুলের প্রিন্সিপাল সোসাকু কোবায়াশি শিশুদের প্রকৃতিদত্ত প্রশিণের ওপর গুরুত্ব দেন এবং তাদের পুরোপুরি স্বাধীনভাবে লেখাপড়ার অবকাশ যোগান। প্রিন্সিপাল শিশুদেরকে 'পাহাড়ের গন্ধ' এবং 'সাগরের গন্ধের' খাবার অনুরোধ জানায়। পাহাড়ের গন্ধের খাবার যেমন সবজি ও মাংশ এবং সাগরের গন্ধের খাবার তেমন মাছ ও সমুদ্র শেওলা। তিনি প্রত্যেক শিশুদের উত্কৃষ্টতা প্রদর্শনে নিয়মিত খেলাধুলার আয়োজন করেন। সকালে যদি সব বিষয়ের পড়া শেষ হয়ে যায় তাহলে বিকেলে সবাই মিলে বাইরে বেড়াতে গিয়ে ভূগোল ও প্রকৃতির কাছ থেকে শেখে। রাতে প্রিন্সিপাল শিশুদের নানা ধরনের গল্প শোনান। তাই তোত্তো-ছানের মতো অনেক শিশু মন থেকে সত্যিকারভাবেই মুগ্ধতার ভেতর বড় হয়ে উঠেছে। প্রিন্সিপাল মাঝে মাঝে তোত্তো-ছানকে বলেন, তুমি সত্যিই একটি ভালো শিশু। প্রিন্সিপালের যতেœ এবং সঠিক নির্দেশনায় সাধারণ মানুষের চোখে অবাঞ্ছিত শিশুরা ধীরে ধীরে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য শিশুতে পরিণত হয় এবং তাদের জন্য সারা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি গড়ে ওঠে। তোত্তো-ছান এ স্কুলে অন্যের প্রতি যতœ নিতে এবং জীবনকে ভালোবাসতে শিখেছে। ১৯৪৫ সালে এ স্কুলটি যুদ্ধের কারণে বিধ্বস্ত হয়। এ বইটিতে তোত্তো-ছানের মনের অনুভূতি গভীরভাবে প্রকাশ পেয়েছে। পাঠকরা তোত্তো-ছানের দৃষ্টি থেকে সে ধরণের বড় হওয়ার প্রক্রিয়া উপভোগ করতে পারেন।

রেডিও চায়না অবলম্বনে