Pages

Monday, September 15, 2014

ফেলুদার ডায়রি-৪

ফেলুদার ডায়রি-৪


ছবি আঁকার কোন শখ ছিল না। কখনো চিন্তাও করেনি ফেলুদা ছবি আঁকবে। তখন ক্লাস সেভেনে পড়ে ফেলুদা। তবে ছোট বেলা থেকেই পড়ার প্রতি প্রচণ্ড নেশা ছিল তার। এই বয়সেই ( বয়স ১২/১৩) পত্রিকা, ম্যাগাজিন, বিভিন্ন লেখকের বই পড়ত সে।

একদিন শিল্পচার্য জয়নুল আবেদনীরে একটা ছবি দেখে মুগ্ধ ফেলুদা। মনের অজান্তেই কাগজে এঁকে ফেলল সেই ছবিটা। ফেলুদা তার চাচাকে দেখাল। চাচাতো অবাক। ফেলুদা দারুণ এঁকেছিল। মজার ব্যাপার হলো, ফেলুদার জীবনে এটাই প্রথম এবং এটাই শেষ আঁকা ছবি।

চোখ ওঠা ফেলুদার একটা নিয়মিত রোগ ছিল। প্রাইমারী স্কুল জীনটায় প্রায়ই এ রোগে ভুগত ফেলুদা। অনেক ক্লাসও মিছ করেছে ফেলুদা এই রোগের জন্য। একদিন, চোখ ওঠা নিয়েই মারবেল খেলছে। এসময় চাচা এসে ফেলুদাকে বলল, ক্লাসে যাচ্ছোনা কেন?

ফেলুদার উত্তর, চোখ ওঠেছে।

চাচাতো আর কিছু না বলে চলে গেল।

ফেলুদা ছোট বয়সে ফুফুদের বাড়ীতে বেড়াত অনেক। প্রতি মাসেই প্রত্যেক ফুফুর বাড়ীতে যেত। ফেলুদার ফুফাতো ভাইয়ের একটা সাইকেল (বাইসাইকেল) ছিল। সাইকেলটার নাম ছিল ফোনিস্ক সাইকেল। এই সাইকেল দিয়েই ফুফুদের বাড়ীতে যেত ফেলুদা। ফুফুরাও অনেক আদার করত। তবে মজার ব্যাপার হল, নানু বাড়ীতে ফেলুদার একদমই মন বসতনা।

একদিন ফেলুদার বাবা-মা নানা বাড়ীতে বেড়াতে গেছে। তখন বর্ষাকাল। চারদিকে থৈ থৈ পানি। সেই দিন ফেলুদা নানা বাড়ী থেকে নিজের বাড়ীতে ফেরার জন্য কয়েক ঘন্টা কেঁদেছিল। তবে ফেলুদা কখনো নানা বাড়ীতে গেলেও নানুর ঘর ছাড়া অন্য কোন ঘরে যেতনা।
--
with Best regards

Saif BARKATULLAH

ফেলুদার ডায়রি-৩

ফেলুদার ডায়রি-৩


এক সময় প্রচুর গান শুনতাম।

স্কুল থেকে এসেই দুপুরেই খেয়েই গান শুনা শুরু করতাম।

আমাদের বাড়ীতে বড় একটা কালো জামের গাছ ছিল।

এই গাছের নিচে প্রায়ই অংক কষতাম আর রেডিও-তে গান শুনতাম। বলা যায় আশির দশক, নব্বই দশকের প্রায় সবগুলো বাংলা গানই আমি শুনেছি।

কয়েকদিন ধরে একটা গান বার বার গুনগুনিয়ে গাচ্ছি।

গান যদি হয় মধুর এমন হোক না ভুল।- গানটি আমার ভীষণ প্রিয়।

যাক সেসব কথা। 

ফেলুদার ডায়রি শুরু করি।

ইন্টারমিডিয়েট এ ম্যাথ প্রাইভেট পড়তাম। পড়তাম কয়েকজন বন্ধু একসাথে। ওই ম্যাথ স্যারের বাসায় আমার কাজিন থাকতো। একই কলেজে আমরা পড়তাম। কাজিন পড়তো ডিগ্রিতে। আমি সপ্তাহে চার দিন যেতাম ওই বাসায়। মাঝে মাঝে পড়া শেষে কাজিনের সাথে দেখা করতাম। ও আমাকে নিয়ে ছাদে যেত। সাথে ওর মামাতো ভাই-বোন। অনেক গল্প হতো। আমি একটু লাজুক টাইপের ছিলাম। মেয়েদের সাথে কথা বলতে লজ্জা পেতাম।

তো ওরা প্রায়ই আমাকে এসব বিষয়ে বলত,

তুই যে কী হইসস, মেয়েদের সাথে কথা বলতে পারিসনা।

তুই তো আনস্মার্ট। আমার তখন এসব নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই।

ওরা বলত, ফেলুদা, তুই কলেজে প্রত্যেক ছাত্রীর সাথে কথা বলবে। প্রেম করবিনা বাট কথা বলবি। এতে ওরা বলবে, ফেলুদা অনেক স্মার্ট একটা ছেলে। 

আমি তখন ম্যাচে ( ব্যাচেলর) থাকতাম। রুমে এসে হাসতাম ওদের কথা মনে করে। কলেজে নিয়মিত যেতাম। এরপরও ওইসময়ে মেয়েদের সাথে কথা বলিনি। এভাবেই চলে গেছে ওই সময়কার লাইফটা। 

--
with Best regards

Saif BARKATULLAH

ফেলুদার ডায়রি-২

ফেলুদার ডায়রি-২


মায়ের কথাগুলি খুব মনে পড়ছে।

কত দীর্ঘদিন!

তুমি কী হিসেব করেছো দিনগুলি!

স্কুলের ফার্স্টবয় ছিলাম। এলাকার মধ্যে ভালছেলে বলে সুপরিচিত ছিলাম। স্কুলের সহপাঠীর বাবা-মারা আমার উপর অনেক ভরসা পেত। সহপাঠীদের কোনো সমস্য হলেই আমাকে ডাকত। এই সহপাঠীরাই দুষ্টামী করে মা-তোমাকে বিচার দিত-

" আন্টি, ফেলুদা সিগারেট খাইছে।'

মা হেসে হেসে উত্তর দিত-

ছোটো মানুষ, খেতেই পারে। কোনোদিন কোন শাসন করত না। কোনোদিন শিউরে ওঠেনি মা। মা। কতদিন দেখিনা তোমায়।

মা কেমন আছ তুমি?

কোথায় আছ?

বাবা কত তুমাকে বকা দিত, আচ্ছা বাবা এতো নিষ্ঠুর ছিল কেন? তুমাকে বকলেই আমার গা জ্বালা ধরতো।

মা। তোমার গলায় কতদিন গান শুনিনা।

ওইয়ে গানটা-

আমার গলার হার..........।

মা। আজ নিস্তব্ধতার মাঝে আছি। 

খা খা করে বুকটা। বড় ফাপুর ফাপুর লাগে।

সেদিনও তোমাকে মনে করে ডুকরে ডুকরে কাঁদলাম।

পান খাওয়া মিস্টি হিসি মার,

দেশি মুরগীর রান্নার কী ঘ্রান,

তরকারী রান্না করলেই মাছের মাথাটা আমার প্লেটে,

মা এখন নেই

তুমি নেই বলে

বড় ফাপুর ফাপুর লাগে ।

--
with Best regards

Saif BARKATULLAH

ফেলুদার ডায়রি-১

ফেলুদার ডায়রি-১
 
আমি প্রতিদিনের ডায়রি লিখছি। তবে খাতা আর কলম দিয়ে নয়। কম্পিউটারে বসে। আমার দাদা আমাকে পেন্সিল দিয়ে লেখা শিখিয়েছিল। সে আমার শিশুকালের কথা। তখন আমার বয়স তিন কিংবা চার।

মা ডায়রি লিখে না। বাবাও না। তবে আম্মা ( মা) গান গাইত। লোকসংগীত। আর ছোট মামা নজরুল সংগীত। মামার একটা হারমোনিয়াম আছে। নানী বাড়ী গেলেই সব খালা, মামা, কাজিনদের নিয়ে গানের আড্ডা হতো। সিনেমা দেখা হতো। আজ আর এসব নেই।

এখন মা নেই। দাদা, দাদী, নানী, নানা কেউ নেই। বাবা আছেন। তাও আমার সাথে নেই।

চলবে.....

--
with Best regards

Saif BARKATULLAH