Pages

Thursday, April 2, 2009

পিলখানা নৃশংসতা: স্বপ্নের বন্দরে রক্তক্ষরণ

স্বপ্নের বন্দরে রক্তক্ষরণ:
কীযে বিষণœ লাগছে। সমস্ত চরাচরে যেন ঢেকে আছে বিষাদে। কয়েকদিন থেকে আমার মনটা ভাল নেই। আমি গিয়েছিলাম ঢাকা মেডিকেলের মর্গে। সেনা অফিসারদের লাশ দেখেই আর বাঁধ মানলনা অশ্র“ধারা। গত কয়েকদিন আগেওতো এরা প্রত্যেকে ছিলেন একেকজন ব্যক্তি। প্রত্যেকের ছিল একেকটা আকাশ। এঁদের প্রত্যেকের জন্মের পরে আজান দেওয়া হয়েছে। বাবা-মা ভাইবোন আত্মীয় পরিজন নিয়ে প্রত্যেকের আছে বেড়ে ওঠার ইতিহাস। স্কুলে গিয়ে দুষ্টুমি কিংবা অসাধারণ কোনো কৃতিত্বের গল্প। মেধাবি একেকজন মানুষ ছিলেন এঁরা। অনেকেই ক্যাডেট কলেজের চৌকস ছাত্র। বিতর্ক, লেখালেখি, সংস্কৃতি চর্চায় ছিলেন উজ্জ্বল। অথচ মাত্র ৩৩ ঘন্টার মধ্যেই হলিখেলায় স্তব্ধ বাতাস।
\ দুই \
২৫ ফেব্র“য়ারি, বুধবার। সকাল থেকেই দাবি আদায়ের নামে বিডিআর জওয়ানেরা সদর দপ্তরে ভয়াবহ তান্ডব চালায়। তারা দরবার হলে গুলি করে পদস্থ কর্মকর্তাদের হত্যা করে। অনেকের মরদেহ নর্দমায় ফেলে দেয়। এঁদের মরদেহ পরে নদীতে ভাসতে দেখা যায়। পদস্থ কর্মকর্তার স্ত্রী ও সন্তানদের ভেতর জিম্মি করে নির্যাতন চালানো হয় বলে জানা যায়। দীর্ঘ সময় তাদের অভূক্ত অবস্থায় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখে উচ্ছৃঙ্খল জওয়ানেরা। অনেক বাড়িঘর ও যানবাহনেও আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। তাদের গুলিতে সদর দপ্তরের বাইরেও অনেক হতাহত হয়।
\ তিন \
২৬ ফেব্র“য়ারি, বৃহস্পতিবার। ৩৩ ঘন্টার শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার পর বিডিআর জওয়ানদের আত্মসমর্পনের মধ্যদিয়ে তাদের রক্তক্ষয়ী বিদ্রোহের অবসান হয়েছে। কয়েক দফায় দীর্ঘ আলোচনার পর ২৬ ফেব্র“য়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টায় বিডিআর সদর দপ্তরের সব জওয়ান তাদের অস্ত্র পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এর পরই পুলিশ আলো নিভিয়ে সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।
\ চার \
বাতাস ভারি হয় কান্নায়
ছবির মতো মানুষ। টেলিফোন করেছিল তার প্রিয়তমা স্ত্রী সাথীকে। বলেছিল, সাথী দেখা হলেতো ভালো, না হলে ক্ষমা করে দিও। আর হুইল চেয়ার থেকে যেন তোমার হাত না সরে! আমৃত্যু এই কথাটা রাখবে তুমি সাথী! মেজর হুমায়ুন হায়দার পাবলো। তাঁর ছেলের নাম রেখেছিল ঋত্বিক। ঋত্বিক হুইল চেয়ারে দিন কাটায়। রাতে শুধু বিছানাতে ঘুমায়। আর আছে রূপন্তি। পাবলোর রাজকন্যা। ছয়মাসের মতো বয়স। সাথী এখন কী করবে ? ফরেন মিশনসহ সব ধরনের ইনকাম জড়ো করে পাবলো ঋত্বিকের পেছনেই খরচ করত। দারুনভাবে অসুস্থ ছেলেটা যদি একটু ভালো থাকে। আজ পাবলো নেই। ছোট্র রূপন্তিকে নিয়ে দূর্গম সংসার যাত্রায় হুইল চেয়ারের পেছনে কীভাবে থাকবে এখন সাথীর শক্ত হাত ?


\ পাঁচ \
“ওরা আমাদের ডিজি স্যার শাকিল আহমেদকে হত্যা করেছে। আমি দরবার হলে ভয়ানক বিপদে আছি। তোমরা ভালো থেকো।“ এই ছিল বিডিআর সদর দপ্তর পিলখানায় নিহত মেজর আহমেদ আজিজুল হাকিম পলাশের জীবনের শেষ কথা। স্ত্রী আকলিমা খাতুন রেবার সঙ্গে ২৫ ফেব্র“য়ারি সকালে বিডিআরদের হাতে জিম্মি অবস্থায় ফোন করে কথা বলেন মেজর পলাশ। কিন্তু ফোনের কথা শেষ না হতেই স্তব্ধ হয়ে যায় তার কÚ। শতবার চেষ্টা করেও পলাশের কÚ আর শোনা যায়নি। হয়ত সে সময়েই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। মোবাইল ফোনটি চালু থাকায় রেবা শুনেছেন সেখানকার অন্যদের আর্তনাদ আর প্রচন্ড গোলাগুলির শব্দ। প্রায় ৫ মিনিট পর মেজর পলাশের মোবাইল ফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকার পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরের দরবার হলের ভেতরে কথিত বিডিআর বিদ্রোহের নারকীয় শিকার হয়ে প্রাণ দিতে হয় সদা হাস্যোজ্জল মেজর পলাশকে।
\ ছয় \
২৫ ফেব্র“য়ারি অফিসে যাবার কিছুক্ষণ পরেই স্ত্রীর মোবাইলে ফোন দেন মেজর মোশাররফ। স্ত্রী লিপি রিসিভ করতেই শুনতে পান গুলির শব্দ। মোশাররফ লিপিকে জানান, দরবার হলে জওয়ানরা এ্যাটাক করেছে। তুমি একটু সাবধানে থেক। ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে রেখ। এই বলে ফোনটি রেখে দেন মোশাররফ। এরপর মোশাররফ ফোন করেন ছোট ভাই মোবারক হোসেনকে। মোবারক বলেছেন, পিলখানায় যুদ্ধাবস্থা, তুই তোর ভাবি আর আকিবকে বাঁচা। এরপর আর শত চেষ্টা করেও মোবারক ও লিপি মোশাররফের ফোনে সংযোগ পাননি। সন্তান সম্ভবা লিপি নিজের অসুস্থতার কথা বলে কোনো মতে রেহাই পান সেদিন। পরেরদিন পিলখানা থেকে বেরিয়ে এলেও স্বামীর আর কোন খোঁজ পাননি। ২৭ ফেব্র“য়ারি সকাল সাড়ে দশটার দিকে পিলখানার ১৩ ব্যাটালিয়নের কাছ থেকে যে দশটি লাশ পাওয়া যায় সেখান থেকে শনাক্ত করা হয় মেজর মোশাররফের মৃতদেহ। পরেরদিন গ্রামের বাড়িতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে দাফন করা হয়।
\ সাত \
২৫ ফেব্র“য়ারি সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ছেলে লে. কর্ণেল রবি রহমানের ফোন পেয়েছিল বাবা ফয়জুর রহমান। ফোনে সন্তানের ভয়ার্ত কÚ বিচলিত করে তোলে তাকে। বাবাকে রবি বলেন, পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ করেছে। সেনা কর্মকর্তাদের জিম্মি করা হয়েছে। সন্তানের এ খবরে চিন্তিত হয়ে পড়েন তিনি। পাঁচ মিনিট পর আবারও ফোন আসে। লে. কর্ণেল রবি বাবাকে বললেন, বাবা আর মনে হয় তোমাদের সঙ্গে দেখা হবে না। তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিও। যদি বেঁচে না থাকি তাহলে মায়ের পাশে আমাকে কবর দিও। তারপর রবির সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়নি বাবার। বারবার চেষ্টা করেও তার পরিবারের সদস্যরা কর্ণেল রবি রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। সেনাবাহিনী পিলখানায় ঢুকে যে গণকবর আবিস্কার করে তার মধ্যে পাওয়া যায় লে. কর্ণেল রবির মৃতদেহ।
\ আট \
নীড়ে আর ফেরা হলো না
নীড়-বিয়ানীবাজার উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের টিকরপাড়ার কাউদিয়া গ্রামের একটি বাড়ীর নাম। এলাকার লোকজন বলত সুখের নীড়। এই পরিবারের ছেলে মেয়েরা উচ্চ শিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত। অথচ এই সুখের নীড় থেকেই এখন ভেসে আসছে শুধুই কান্নার শব্দ। প্রায় দুই বছর আগে ৩৬ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের সিও হিসেবে এনায়েত বিডিআরে যোগদান করেন। বাবা মরহুম মুশফিকুর রহমান চৌধুরী ঢাকায় ব্যবসা করার সুবাদে এনায়েতরা সব ভাই-ই উচ্চ শিক্ষা অর্জনে ঢাকার বাসিন্দা হয়ে যান। তবু ছুটি পেলেই বিয়ানী বাজারের আপন নীড়ে মায়ের কোলে ছুটে আসতেন এনায়েত। মায়ের প্রতি এত যার টান তার মুখটা শেষবারের মতো দেখা হলো না মায়ের। এনায়েতের মরদেহটাও আনা গেল না নীড়ে। গত ১ মার্চ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
\ নয় \
আমরা মারত্মক বিপদে আছি
২৫ ফেব্র“য়ারি সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে বিডিআর সদর দপ্তরের দরবার হলে গুলিবর্ষণ শুরু হওয়ার পর শেষবারের মতো লে. কর্ণেল এলাহী মঞ্জুরের সঙ্গে কথা হয় তার স্ত্রী তান্নি মঞ্জুর চৌধুরীর। এ সময় মঞ্জুর ফোন করে স্ত্রীকে জানান, আমরা মারাত্মক বিপদে আছি। আমরা পাঁচজন অফিসার একটি বাথরুমে লুকিয়ে আছি। ছেলেমেয়েদের তুমি সাবধানে ও নিরাপদে থেক। এই ছিল একান্ত স্বজনদের সঙ্গে শেষ কথা। এরপর এলাহী মঞ্জুরের মোবাইল ফোনে বার বার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে পারেননি স্বজনেরা। গত ৪ মার্চ ক্ষতবিক্ষত দেহের আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে যে মৃতদেহগুলো পড়ে আছে সেগুলোর একটি মঞ্জুরের।
\ দশ \
কোথাও গেলে তো আব্বু আবার ফিরে আসে,
মারা গেলে কেন ফিরে আসবেন না ?
আমি ভালো আছি, চিন্তা করনা। ২৫ ফেব্র“য়ারি ১১ টা ৪৫মিনিটে পিলখানায় আটকা অবস্থা থেকে স্ত্রী উর্মিকে মোবাইল ফোনে এই কথাটা বলেছিলেন লে. কর্ণেল সাজ্জাদুর রহমান। কিন্তু উর্মির চিন্তা তো আর এসব নিষেধাজ্ঞা মানতে চায়না। তার দুশ্চিন্তাগুলো সেদিনের বিডিআর জওয়ানদের মতোই উচ্ছৃঙ্খল হয়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত শারমিন নিশাত উর্মির দুশ্চিন্তাই সত্যি হল। লে. কর্ণেল সাজ্জাদ স্ত্রীকে দেয়া শেষ কথাটা আর রাখতে পারলেন না। ভালো আর থাকা হলো না সাজ্জাদের। বিভ্রান্ত জওয়ানদের বীভৎসতায় পিলখানার গণকবরের ঘটনার প্রায় ৫৮ ঘন্টা পর খোঁজ মেলে সাজ্জাদুর রহমান দোলনের মরদেহের। দোলন আর উর্মি দম্পতির দুই ছেলে ইত্তেশাদ (১১) ও ইশাদ (৭) এর দিন কাটছে বাবার পথ চেয়ে। ইত্তেশাদ রাইফেল পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। ইশাদকে তার মা বলেছেন বাবা মারা গেছেন। ইশাদ জিজ্ঞেস করেছে-মারা যাওয়া থেকে কখন আসবেন ? আব্বু তো প্রায়ই অনেক জায়গায় যান। শান্তি মিশনে, যুদ্ধে, বাজারে-সব জায়গা থেকেই তো ফিরে আসেন। মারা যাওয়া থেকে আসবেন না কেন ? সরল শিশুটির জিজ্ঞাসা।
\ এগার \
বইমেলায় যাওয়া হলো না সাইতী ও সুহার
“দেখ, তোমাদের সময় দিতে পারি। চাকরিজীবনে কাটিয়েছি বিদেশে। আর এখন চলছে বিডিআর সপ্তাহ। সেজন্য এই কয়টা দিন ব্যস্ত থাকব। তারপরও কথা দিচ্ছি আগামী ২৮ ফেব্র“য়ারি সময় দেব। সুহা এবং তোমাকে নিয়ে যাব বই মেলায়।“ কথাগুলো বলেছিলেন সেনা কর্মকর্তা মেজর আসাদুজ্জামানের স্ত্রী সাইয়ারা সুলতানা সাইতীকে গত ২৫ ফেব্র“য়ারি। কিন্তু মেলায় আর যাওয়া হয়নি। ঘাতক বিডিআর জওয়ানদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন মেজর আসাদ। গত ২৮ ফেব্র“য়ারি ছিল তার ৬ষ্ঠ বিবাহ বার্ষিকী। তার আগেই তিনি প্রাণ হারান। রেখে যান স্ত্রী এবং কন্যাকে। গত ২৭ ফেব্র“য়ারি রাতে পিলখানায় গণকবর থেকে মেজর আসাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
\ বার \
দেখার কেউ নেই
“বাবা বলেছিলেন এখন লেখাপড়া কর, দরবার থেকে ফিরে খেলা দেখাতে নিয়ে যাব, বাসায় অনেক আঙ্কেল এসেছিলেন কিন্তু বাবা আর আসেননি।“ এভাবে কাদতে কাদতে কথাগুলো বলছিল ঢাকার পিলখানার ঘটনায় নিহত দরবার হলের ক্লার্ক নায়েক বসির উদ্দিন বিশ্বাসের চার বছর বয়সী শিশুপুত্র অপু। গত ২৭ ফেব্র“য়ারি রাতে বসিরের (ব্যাচ নং-৬০৮৩৫) লাশ ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মতনেজা গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এখন তার স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে দেখার কেউ নেই।
\ তের \
বিপ্লবের মোড়কে
মানবতার অপমান
সিডরের মতো হঠাৎ আসা এ ঝড় সামাল দেওয়ার মতো সাহস ও শক্তি হারিয়ে গেছে এ পরিবারগুলোর। আমরা স্তব্ধ, শোকাহত, হতবাক। কোনও সামরিক যুদ্ধ নয়, কোনও সেনা অভ্যুত্থান নয়, তথাকথিত বিপ্লবের রঙচঙে মোড়কে স্রেফ খুন করা হয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় সেনা কর্মকর্তা আর তাদের পরিবার পরিজনকে। সাধারণ ক্ষোভকে পুঁজি করে কূটকৌশল এবং ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে ডিজি শাকিল আহমেদ সহ বিডিআরে কর্মরত সেনা অফিসারদের। ক্ষোভের কারণ থাকতে পারে, অসন্তোষ থাকতে পারে, কিন্তু তা ইন্ধন যোগাবে একটি গণহত্যার- এটি মেনে নেওয়া যায়না।

শেষ কথা
অশ্র“ মুছে তাকাতে হবে সামনে ...
এত এত সফল উজ্জ্বল মেধাবী চৌকস মানুষ হারিয়ে সত্যি সত্যি কাঁদছি। আজকের আকাশটা যেন ভারি হয়ে আছে, প্রকৃতিও যেন কাঁদছে। কিন্তু বুঝি, শুধু কাঁদার সময় এটা নয়, কান্না মুছে জাতিকে আবার সামনের দিকে তাকাতে হবে। সরকারের সামনে, নেতাদের সামনে, সেনাবাহিনীর সামনে, বিডিআরের সামনে কত যে করণীয়। গণতন্ত্র নস্যাৎ, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিঘœ করা আরও কত যে গভীর সুদূর প্রসারী অসদুদ্দেশ্য থেকে এই হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে ! তদন্তের মাধ্যমেই সেটা উদ্ঘাটন করা সম্ভব। আর গণতন্ত্রকে রক্ষা করে যেতে হবে চোখের মণির মতো। এ ব্যাপারে আমাদের সরকার ও সামরিক বাহিনীর ভূমিকা দেশবাসী ও বিশ্ববাসীর কাছে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে।
বাংলাদেশের মানুষের একটা বৈশিষ্ট হলো আমরা অপরাজেয়। দুর্যোগে দুর্বিপাকের আঘাতে খানিকক্ষণের জন্য হয়তো হেলে পড়ি, কিন্তু আবার উঠে দাঁড়াই আমরা। পরাজয় মেনে নিই না। আমাদের জাতীয় জীবনের একটা বড় বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি বটে কিন্তু এবারও বাংলাদেশের মানুষ হেরে যাবে না। আমরা আমাদের শোককে শক্তিতে পরিণত করে সামনের দিকে এগিয়ে যাব। শুধু পরিবারগুলো তাদের স্বজনদের আর ফিরে পাবে না, এই কথা ভাবলেই আবার আমার চোখটা জলে ভেসে যায়।

সম্ভাবনার বাংলাদেশ

"আমারও দেশেরও মাটিরও গন্ধে
ভরে আছে সারা মন
সবুজও শ্যামলও পরসও ছাড়া
যে নেই কিছু প্রয়োজন"




শিল্পীর এই গানের সাথে কন্ঠ মিলিয়ে বলতে হয়, আমাদের এই প্রিয় দেশ বাংলাদেশের রয়েছে সোনলী অতীত। ইবনে বতুতা এই দেশটিকে পৃথিবীর ধনী অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করেন। সম্রাট হুমায়ুন প্রথম পদার্পণেই অবাক বিস্ময়ে এর নাম দেন জান্নাতাবাদ। কিন্তু ঐতিহাসিক কাল থেকে উপর্যুপরি বিদেশীদের লুন্ঠন, ইংরেজদের সাম্রাজ্যবাদী ষড়যন্ত্র ও দুইশত বছরের শোষণ এবং পাকিস্তানী বৈষম্যের শিকারে এদেশ হয়েছে পিষ্ট। বঞ্চিত এই মানুষগুলো সীমাহীন ত্যাগের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে অর্জিত ¯^vaxbZv নিয়ে আশায় বেঁধেছিল বুক। কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ¯^‡cœi সোনারবাংলা ¯^cœB থেকে যায়- দুর্নীতি, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও রাষ্ট্রনায়কদের সিদ্ধান্ত হীনতার ফলে। তবুও থেমে নেই এ দেশের পরিশ্রমী জনগণ; শত ঝড়-ঝঞ্ঝার মাঝেও সর্বস্ব ঢেলে দিয়েছেন দেশের কল্যাণে। তাইতো বিশ্ব প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশও এগুচ্ছে মাথা উঁচিয়ে।

একবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে এসে যখন কোটামুক্ত বিশ্বে বাংলাদেশের পোশাকশিল্প পাশ্চাত্যের বাজার জয় করছে, যখন প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স উত্তরোত্তর বাড়ছে, আসছে বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগ, যখন ড. মুহাম্মদ ইউনুস শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান, তখন অমিত সম্ভাবনার এই প্রিয় মাতৃভুমিকে নিয়ে ¯^‡cœ উদ্বেলিত হই। ঠিক এই মুহুর্তে দরকার এক দল দেশপ্রেমিক, ন্যায়পরায়ণ, সৎ ও যোগ্য মানুষের, যাদের নেতৃত্বে ১৫ কোটি জনগণ সম্ভাবনাগুলোকে বাস্তবে রূপ দেবে।

২.সম্ভাবনার বাংলাদেশ...! শব্দটি আমার কাছে খুব পরিচিতি। বিভিন্ন গোষ্ঠী, মহল ও ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায়ই শব্দ দু’টি আমরা শুনে থাকি। সত্যিকার অর্থে প্রতিটি জনগোষ্ঠী প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধির জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু' বাস্তবতা হচ্ছে, কেউ সমৃদ্ধি, কেউ সমৃদ্ধির কাছাকাছি, কেউ আবার সমৃদ্ধি থেকে অনেক দূরে। সমৃদ্ধি অর্জনের কৌশল, পদ্ধতি নিয়ে প্রচুর গবেষণা, সেমিনার, লেখালেখি ও বক্তৃতা হচ্ছে। আসুন সম্ভাবনার বাংলাদেশের একটি প্রতিচ্ছবি কল্পনা করা যাক।



৩. মানব উন্নয়ন
দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থিক ও ভৌত উভয় প্রকার উৎপাদনশীল সম্পদ সৃষ্টি করতে প্রয়োজন সামাজিক খাতে ব্যাপক ব্যয়। এ লক্ষ্যে সরকার শিক্ষা, বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি খাতে বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দিয়ে আসছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা অনুযায়ী নার্স ও তথ্য প্রযুক্তিবিদ পাঠাতে পারলে বাংলাদেশ বছরে কয়েক বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে।





৪. সমাজকল্যাণ
দুস্থ্য, দরিদ্র ও অসহায় এবং অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর সার্বিক অবস্থার উন্নয়ন দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির একটি শুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক। তাই সরকার সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতায় বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধিদের শিক্ষা ও প্রশিন, কিশোর অপরাধ দুরীকরণ ইত্যাদি ব্যাপক কর্মসূচী পরিচালনা করছে। অধিক বয়স্ক-দরিদ্র ব্যক্তিদের জন্য ভাতা নিশ্চিত করতে সরকার বয়স্কদের বয়সসীমা প্রথমে ৫৭ হতে ৬০ এবং সমপ্রতি ৬৫-তে উন্নীত করে। ২০০১-০২ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দকৃত ৫০ কোটি টাকা বিপরীতে মাসিক ১০০ টাকা হারে ৪১৫১৭০ জন বয়স্ক লোক উপকৃত হয়, যা ২০০৪-০৫ অর্থবছরে বৃদ্ধি পেয়ে ২৬০ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা হয় এবং এতে উপকৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৩ লক্ষ ১৫ হাজার জন। সংখ্যা দাঁড়ায় ১৩ ল ১৫ হাজার জন।



৫. কৃষি
বিশেষজ্ঞগণ আশা করছেন-২০২০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ প্রায় সকল প্রকার কৃষি পণ্য বা কৃষি শস্য উৎপাদনে সম হবে এবং খাদ্যে ¯^qsm¤ú~Y©Zv অর্জন করবে। জিডিপিতে (২০০৫-২০০৬) কৃষির বিভিন্ন উপখাতের mgwš^Z অবদান ২১.৭৭%।
BBS Labour Force Survey; ২০০২-০৩ অনুযায়ী দেশের মোট শ্রমশক্তির শতকরা ৫১.৭ ভাগ কৃষিখাতে নিয়োজিত। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর মতে, মার্চ ২০০৬ পর্যন- দেশের মোট রপ্তানিতে কৃষিজাত পণ্যের অবদান শতকরা ৬.২৭ ভাগ। কৃষিখাতে ভর্তুকি ও সহায়তা হিসেব ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ১২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ এবং ২০০৪-০৫ অর্থবছরের ৪৯৫৬৭৮ কোটি টাকা কৃষি ঋণ বিতরণ করা হয়।


৬. শিা
শিা মন্ত্রণালয়ের ব্যানবেইসের ২০০৬ সালের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে ১৯৭৬৬টি মাধ্যমিক ও উ"চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৩০২টি সাধারণ কলেজ, ৯০৫১টি মাদ্রাসা, ১১৭টি পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউট, ৬৪টি ভোকেশনাল ইনষ্টিটিউট, ২২টি পাবলিক ইউনিভার্সিটি ও ৫৪টি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি রয়েছে। ২০০৬ সনের সাময়িক তথ্য অনুযায়ী নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিার্থী সংখ্যা ৮,০৮, ১৯৫৬ জন, কলেজ পর্যায়ে ১,০০৭, ২৪১ জন এবং মাদ্রাসা শিায় ২৯,৪৫,৮২৪ জন। নারী শিায় ব্যাপক প্রসার ঘটিয়ে নারীর মতায়ন ও আর্থ-সামাজিক অবস'ার উন্নয়নের ল্যে সরকার দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন- মেয়েদেরকে উপব"ত্তি প্রাপ্ত বেতন মওকুফ সুবিধা প্রদান করেছে। বর্তমানে মাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীর অনুপাত ৪৭.৫৩। উল্লেখ্য, ব্যানবেইসের তথ্যানুযায়ী বর্তমানে দেশে শিার হার ৬৫.৫%।




৭. তথ্যপ্রযুক্তি
বাংলাদেশ আন-র্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস'া শুধু স্যাটেলাইট নির্ভর ছিল যা ব্যয়বহুল, ধির গতি ও ¯^í ব্যান্ড উইথ সম্পন্ন। wW‡m¤^i ২০০৫ এ ঝঊঅ-গঊ-ডঊ-৪ সাবমেরিনকেবল এর কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং ২০০৬ থেকে এর কার্যক্রম চালু হয়েছে। সাবমেরিন কেবল সিষ্টেমের সফল ব্যবহারের মাধ্যমে ¯^í সময়ের মধ্যে দেশে তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত নাানবিধ কর্মকান্ডের দ্র"ত বিকাশ লাভ করবে। দেশে অপটিক্যাল ফাইবার সুবিধার ফলে-ইগভর্নেন্স, ই-কমার্স, ই-এডুকেশন ও টেলিমেডিসিন সার্ভিস চালু করা যাবে এবং অন্যান্য দেশের সাথে ইন্টারন্যাশনাল ভয়েস সার্কিট বাড়ানোর উজ্জ্বল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

৮. প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদ
আয়তনে ুদ্র হলেও বাংলাদেশের ভূ-গর্ভে লুকায়িত রয়েছে চুনাপাথর, তামা, সিলিকা বালু, লবণ, কঠিন শিলা, চীনা মাটি ইত্যাদি অসংখ্য খনিজ সম্পদ। নেত্রকোনা জেলার অবসি'ত খনিতে চীনা মাটির পরিমাণ আনুমানিক ৪ ল ৬৪ হাজার টন।কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ও সেন্টমার্টিন দ্বীপে তেজস্ক্রিয় বালি- ইলমেনাইট, জিরকন, মোনাজাইট, রিওটাইল,ম্যাগনোটাইট, লিউকক্সিন ইতাদি পাওয়া গেছে যা (Black Gold) বা ‘কালো সোন’ হিসেবে খ্যাত।এছাড়া মৌলভীবাজার জেলারকুলাউড়া পাহাড়ে ইউরেনিয়াম পাওয়া গেছে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, হবিগঞ্জের শাহজীবাজার, জামালপুরের ঝালিঝুরিতে সিলিকা বালির সন্ধান পাওয়া গেছে।দিনাজপুরের মধ্যপাড়া কয়লা খনিতে সোনা এবং দীঘিপাড়া ও নওগাঁর পত্নীতলা কয়লা খনিতে রূপা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


৯. গ্যাস
গ্যাস দেশের মোট জ্বালানির প্রায় ৭০ ভাগ পূরণ করে। এ পর্যন- আবিস্কৃত ২৩টি গ্যাস েত্েরর ২২টিতে মোট প্রাক্কালিত গ্যাস মজুদের পরিমাণ ২৮.৪ ট্রিলিয়ন ঘনফুট এবং প্রাথমিক উত্তোলনযোগ্য মজুদের পরিমাণ ২০.৫১ ট্রিলিয়ন ঘনফুট।International Energy Outlook ২০০০ এর Worldwide look at Reserve and Production Journal-এ উল্লেখ করা হয়েছে-২০২০ সালে বাংলাদেশ হবে প্রাকৃতিক গ্যাসনির্ভর একক জ্বালানি দেশ।মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ ও পেট্রোবাংলা যৌথ সমীা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়- বাংলাদেশে অনাবিস্কৃত প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদের পরিমাণ প্রায় ৩২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট।


১০. ঔষধ শিল্প
বাংলাদেশ দণি এশিয়ার একটি ¯^‡ívbœZ দেশ হয়েও বিগত কয়েক বছরে ঔষধ শিল্পে প্রশংসনীয় উন্নতি লাভ করেছে। খুব উন্নত প্রযুক্তির কিছু ঔষধ ছাড়া প্রয়োজনীয় প্রায় সকল প্রকার (৯৬৫) ঔষধ বর্তমানে স'ানীয় ভাবে উৎপাদিত হ"েছ। সর্বমোট ২৩৭টি এ্যালোপ্যাথিক ঔষধ প্রস'তকারী প্রতিষ্ঠান বছরে প্রায় ১৪০০০ ব্রান্ডের ৪৭০০ কোটি টাকার ঔষধ ও ঔষধের কাঁচামাল উৎপাদন করছে। ঔষধ শিল্পে Good Medicine Paactive(GMP) অনুশীলনে অগ্রগতি ও উৎপাদিত ঔষধ আন-র্জাতিক মান সম্পন্ন বিধায় বর্তমানে ২৭টি কোম্পানির দেশে উৎপাদিত ১৮২টি ব্রান্ডের বিভিন্ন প্রকারের ঔষধ ও কাঁচামাল জাপান, কানাডা, ইতালি, কোরিয়া, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের প্রায় ৬৭টি দেশে রপ্তানি হ"েছ এবং এ প্রেতিে বাংলাদেশ ঔষধ শিল্পে আমদানিকারক দেশের পরিবর্তে রপ্তানিকারক দেশের গৌরব অর্জন করেছে। বাংলাদেশই খউঈ ভুক্ত একমাত্র দেশ যা অভ্যন-রীণ প্রয়োজন মেটানোর পর রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। দেশের ঔষধ শিল্পই আগামীতে বস্ত্র শিল্পের সম্ভাবনার সমান কাতারে অবস'ান করবে।




১১. কুটির শিল্পনক্‌শী কাঁথা, পটচিত্র, শখের হাঁড়ি, পুতুলচিত্র, খেলনাচিত্র, বয়নশিল্প, চার" কার"শিল্প, হস-শিল্পে এই ¯^Zš¿ ভুবনে অমিত সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে।






১২. সম্ভাবনার বাংলাদেশ ঃ সমস্যার অন-রালে
আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি, সোনার বাংলাদেশ, যা অধিক জনসংখ্যার দোষে দুষ্ট আজ বেশ কিছু েত্ের ব্যাপক সাফল্য দেখিয়েছে যা আমাদেরকে সম"দ্ধ বাংলাদেশের ¯^cœ দেখতে সাহস জোগায়। নিন্মোক্ত সমস্যাবলিকে সম"দ্ধ বাংলাদেশের পথে অন-রায় হিসেবে দেখানো যেতে পারে। দারিদ্র্য, বেকারত্ব, যৌতুক, এসিড সন্ত্রাস, অপুষ্টি, মাত"ম"ত্যু শিশুম"ত্যু, পথশিশু, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি সমস্যাবলি বেশ প্রকট রূপ ধারণ করেছে। অন্য দিকে মনোসামাজিক সঙ্কট নানাবিধ জটিল সমস্যার জন্য দায়ী- মাদকাশক্তি, আত্মহত্যা, ইত্যাদি। সুশাসনের সূচকগুলোও ভালো যা"েছ বলে দাবি করা দুষ্কর। এখনো মানবাধিকার, দুর্নীতি, গণতন্ত্র ইত্যাদি ইস্যুতে বাংলাদেশ প্রশ্নবিদ্ধ।


১৩. একটি সম"দ্ধ বাংলাদেশ
সার্বজনীন শিা, সচেতনতা, শিল্পায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ইত্যাদি েত্ের কাড়িখত উন্নয়নের মাধ্যমে একটি সম"দ্ধ বাংলাদেশ গড়া যেতে পারে। যেখানে ¯^v¯'¨ সেবা-চিকিৎসা, মাতৃম"ত্যু, শিশুম"ত্যু, প্রজনন ¯^v¯'¨, শিাব্যবস'া, সার্বজনীন কাড়িখত শিা, নৈতিক শিা, সামাজিক শিাসহ অন্যান্য সূচকগুলোও সম"দ্ধ বাংলাদেশের চেতনাকে প্রভাবিত করবে। সম্পদের সুষ্ঠু বন্টন, ব্যাপক কর্মসংস'ান স"ষ্টি, জাকাতের সঠিক চর্চা ইত্যাদি পদেেপর মাধ্যমে দারিদ্র্যকে দূরীভূত করা হবে। পাশাপাশি পরমতে শ্রদ্ধা, ভ্রাতৃত্ববোধ, কমিটমেন্ট ¯^"QZv ইত্যাদি পূর্বশর্ত নিশ্চিত করার মাধ্যমে সুশাসেনর কাড়িখত অর্জন বাংলাদেশকে ঠিকই সম"দ্ধ করে তুলবে।সবচেয়ে আশার দিক হলো বাংলাদেশে ঈর্ষা করার মতো একটি যুবসমাজ রয়েছে। যাদের দায়িত্বের প্রতি কমিটমেন্ট এ ল্য অর্জনে গতি সঞ্চার করবে।



১৪. পনের কোটি মানুষের ত্রিশ কোটি হাত
বাংলাদেশে রয়েছে পনের কোটি হাত। আজ পনের কোটি মানুষ ত্রিশ কোটি হাত বাংলাদেশের জন্য ফাস নয়, অভিসম্পাদ নয় বরং সেরা সম্পদ এবং আশির্বাদ। শুধু এ জন্যেই প"থিবীর মানচিত্রে ছোট্ট বাংলাদেশ সবার কাছে বিশাল বাংলাদেশ। কোন প্রকার বিভাজন নয় বরং ঐক্যবদ্ধ পনের কোটি মানুষ আজ আকাশ ছোয়ার ¯^cœ দেখে। আমরা যদি প্রতিটি মানুষকে মানুষ করি, ত্রিশ কোটি হাতকে যোগ্যতাসম্পন্ন দ কর্মীর হাতে পরিণত করি, তাহলে বাংলাদেশের বর্তমান অবস'ান থেকে বিশাল উত্তরণ সম্ভব। এমনকি বাংলাদেশের বর্তমান আয় বেড়ে দাড়াতে পারে দ্বিগুণ, দশগুণ, বিশগুণ, পঞ্চাশগুণ, একশতগুণ এমনটি একহাজারগুণের বেশী। আমরা কি পারি না বিষয়গুলি নিয়ে গভীর চিন-া করতে এবং তা বাস-বায়নের উদ্যোগ নিতে?