Pages

Thursday, February 24, 2011

বই মেলায় আমার ৩টি বই


বই মেলায় বেরিয়ে ২টি নতুন বই ও ১টি পুরোনো

০১ ) সম্ভাবনার বাংলাদেশ ( গবেষণা গ্রন্থ)
প্রকাশ : একুশে গ্রন্থ মেলা -২০১১
প্রকাশক : পারিজাত
স্টল নং # ২৮৫-২৮৬
প্রচ্ছদ : মাসুক হেলাল


০২) পারুল ( কিশোর উপন্যাস )
প্রকাশক : পরিলেখ
প্রকাশ : একুশে গ্রন্থমেলা ২০১১
স্টল : ৪৩৭
প্রচ্ছদ : কামরুল হাসান মিলন


০৩) জ্যোৎস্না রাতের গল্প ( কাব্যগ্রন্থ)
প্রকাশ : একুশে বইমেলা ২০১০
প্রকাশক : চয়ন
স্টল : ২৩০
প্রচ্ছদ : খলিল রহমান

Tuesday, February 22, 2011

একগুচ্ছ রোমান্টিক কবিতা

একগুচ্ছ রোমান্টিক কবিতা
উৎসর্গ : যাদের রোমান্টিক মন তাদের উদ্দেশ্যে


(০১)

তুমি আছো বলেই আমি যেন স্বপ্নপাখি
সবকিছুতেই উদ্দোম গতি যেন
বেঁচে উঠি প্রতিনিয়ত

তোমার স্পর্শতায়।

তুমি আছো বলেই ভাবনায় কাটে কত রাত
বর্নিল কামনায় চেপে থাকে শরীর

অনুভবে তোমায়।
তুমি আছো বলেই আমি যেন পাহাড়ী নদী
অবিরাম বেয়ে যাই সাগর সঙ্গমে
তোমার উষ্ণতায়।

তুমি আছো বলেই আমার কোন কষ্ট নেই
আমার আছে ভালবাসার অনন্ত আকাশ

ভালবেসে তোমায়।


(০২)

তুমি এসে কষ্টের আকাশটাকে
ভালবাসার আঁচলে জড়ালে
রোমাঞ্চ শিশিরে নেভালে
মনের অব্যক্ত দহন জ্বালা।

বুকের গহীন অন্ধকারে
উড়িয়ে দিলে
ভালবাসার প্রজাপতি
কষ্টগুলো পাপড়ি মেলে সুবাস ছড়ায়
ভাল লাগার অনুরণে।

তুমি এসে খুলে দিলে
যন্ত্রণার বন্ধ দুয়ার
ভরিয়ে দিলে মনের ভেতর
ভালবাসার মর্ম ফোয়ার।

(০৩)


তুমি আমার
শরৎ সকাল
ভালবাসার মিষ্টি রোদে
ভরিয়ে দাও মন।

গাছের ছায়ায়
সবুজ মায়ায়
হৃদয় দোলে
শীতের আমেজ
ভাল লাগায় এখন।

মরা নদীর বান ডেকে যায়
ঢেউ খেলে যায় ভালবাসার বুকে
তুমি আসো যখন।

ভালবাসার বর্ষা নামে
আমার চোখের কোনে
হঠাৎ যখন বলে উঠো
চলে যাবো এখন।

Sunday, February 13, 2011

প্রকৃতির বীণায় কে যেন গো সুর বেঁধেছে



প্রকৃতির বীণায় কে যেন গো সুর বেঁধেছে।
কেউবা কী নেশার টানে বনে বনে ফুলের আগুন ছড়িয়ে দিয়েছে।
বন-বনানী নব পল্লবের জয়গান আর কীট-পাখির গুঞ্জনে কাকলীতে মুখর হয়ে উঠেছে। কবির ভাষা-
‘পলাশ ফুটেছে' শিমুল ফুটেছে।
এসেছে দারুণ মাস।'

আর বাউলসম্রাট শাহ আবদুল করিমের ভাষায়--
‘বসন্ত বাতাসে•••সই গো
বসন্ত বাতাসে
বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ আমার বাড়ি আসে...।’

হ্যাঁ, আজ রোববার পহেলা ফাল্গুন। বাংলা বর্ষা বিদায়ী ঋতু বসন্তের সূচনা দিবস। তাই তো দিকে দিকে বলছে পার্থিব-অপার্থিব নানা আয়োজন।
এর কাব্যরূপ-
‘আহা আজি এ বসন্তে
কত ফুল ফোটে
কত বাঁশি বাজে/কত পাখি গায়....।'


পলাশ-শিমুলের ডালে ডালে রক্তিম উচ্ছলতা। বনের নিভৃত কোণে, মেঠোপথের ধারে কারও দেখার অপো না করেই ফুটেছে আরও কত নাম না-জানা ফুল। কোকিলের কুহুতান আর মৃদুমন্দ বাতাসও মনে করিয়ে দেয় বসন্তের কথা।
আজ পয়লা ফাগুন। মিলেমিশে একে অপরে একাকার হওয়ার দিন। প্রকৃতির পরিবর্তনে শোক-তাপ, হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে সবাই মেতে উঠুক বসন্তের আবাহনে।

কচি পাতায় আলোর নাচন, হৃদয়ের উচাটন আর ফুল ফোটার পুলকিত দিন বসন্ত। বন-বনান্তে, কাননে কাননে-পারিজাতের রঙের কোলাহল, আর বর্ণাঢ্য সমারোহে অশোক-কিংশুকে বিমোহিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায়,
‘এলো খুনমাখা তূণ নিয়ে
খুনেরা ফাগুন...।’

বসন্ত মানেই ফুলের স্ফুরণ। তার বন্দনায় সব অনুষঙ্গকে ছাপিয়ে যায় ফুলই। কবিগুরু গেয়েছেন,
‘আহা আজি এ বসন্তে কত ফুল ফোটে...।’


বাংলা প্রকৃতি এখন বসন্তী বাস পরা। শীতের জরাগ্রস্ততা কাটিয়ে নতুন পাতায় ঋদ্ধ হয়ে উঠছে রিক্ত বৃক্ষাদি। বেশুমার বনফুল হতে গুণ গুণ করে মৌ-রাগ আহরণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে মধুমক্ষিকা। বিচিত্র সব মুকুলের মদির সুবাসে মন-প্রাণ হিন্দোলিত হয়ে উঠছে। আদিগন্ত ফাগবেশ আর ব্যঞ্জনাময় উৎসব-আমেজ মানুষ মাত্রকেই আকৃষ্ট করে। এই জন্যই ধন্য বসন্তের মাথায় স্মরণাতীতকাল ধরে ঋতুরাজ্যের মুকুট।

ফাল্গুনের তিরিশ দিন, তিরিশ রাত পেরিয়ে বসন্ত তার যৌবনের চৌকাঠ মাড়িয়ে চৈত্রে পদার্পণ করবে। ফাল্গুন মাসের নাম ‘ফাল্গুনী' তারা আর চৈত্র মাস ‘চিত্রা' তারার নামের সঙ্গে মিল রেখে রাখা হয়েছে। এ সময় মহান আল্লাহপাকের অপার সৃষ্টি মহিমায় দক্ষিণ গোলার্ধ পরিভ্রমণ শেষে সূর্য তার কক্ষপথে উত্তর-অভিমুখে ধাবিত হতে থাকে। আপনা হতেই প্রকৃতিতে লাগে পরিবর্তনের হাওয়া। উত্তরী বায়ুর যাত্রাপথ রুদ্ধ হয়ে দখিনা মৃদুমন্দ সমীরণ লহর তোলে। তরুলতা পুরানো পাতা ঝেড়ে ফেলে নববধূরূপে মুকুলিত হয়। পত্রপল্লবে সুশোভিত হয় সবুজ উদ্যান। সত্যিই বসন্তের আমোদনে ফাল্গুনের ঝিরি ঝিরি হাওয়া, নির্মেঘ রোদ্দূর নতুন মাত্রা যোগ করে নিসর্গে। কোকিলের কুহুতান তো বসন্তেরই মর্মগান।

ফাল্গুন আসার আগেই অবশ্য আমমঞ্জরী কোষগুলো পরিণত হতে থাকে। কাঁঠাল গাছের শাখায় শাখায় ধরে মুছি (মুকুল)। লিচু গাছগুলোও ফলবতী হয়ে উঠেছে এর চেয়েও বেশি বসন্তকে উপলব্ধি করা যায় রক্তিম পলাশ, শিমুল, কাঞ্চন, পারিজাত, মাধবী, গামারী আর মৃদুগঞ্চের ছোট ছোট বরুণ ফুলে। এছাড়া গোলাপ, গাঁদা, ডালিয়াসহ হাজারো নামের বর্ণালী ফুল তো বসন্তের সাজ আভরণ হিসেবেই বিবেচ্য।

বসন্তকাল এলে গ্রাম থেকে নগর-আবহমান বাংলার সর্বত্রই মেলার মওসুমও শুরু হয়ে যায়। এর মধ্যে ফাল্গুনে ৭৩টি ও চেত্রে ২৪৯টি মেলা। এগুলোয় বসে দোলযাত্রা, চৈত্র তিথি, বারণী, চৈত্র সংক্রান্তি ইত্যাদি বিশেষ উপলক্ষে। মেলাকে ঘিরে প্রতিটি জনপদে উৎসবের জোয়ার বয়ে যায়। এসব মেলার মেয়াদকাল এক থেকে সাতদিন পর্যন্ত। লোক-কারুশিল্প পণ্য ছাড়াও এসব মেলায় বাহারী পসরা বসে। আধুনিক ব্যবহার্য ভোগপণ্য ও বাদ যায় না।

এর বাইরে ফাল্গুনের আরেক পরিচয় ভাষা শহীদদের তপ্তশোনিত্যাক্ত মাস। উনিশশ বায়ান্ন সালের একুশে ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ আটই ফাল্গুন মাতৃভাষা ‘বাংলা' প্রতিষ্ঠার জন্য রফিক, সালাম, জববার প্রমুখ বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল। বার বার ফিরে আসে ফাল্গুন, আসে বসন্ত। শোক নয়, সাম্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবাদী মোকাবিলার দুর্বিনীত সাহস আর অপরিমেয় শক্তি নিয়ে। নৈসর্গিক ক্যানভাসে রক্তাক্ত বর্ণমালা যেন এঁকে দেয় অনির্বচনীয় সুন্দর এক আল্পনা। প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে উদার সড়কের বুকে। দেয়ালগাত্র থেকে লোহিত ধারার মোহনা শহীদ মিনার পর্যন্ত।

বসন্তকে ঘিরে বাঙালির রয়েছে বেশ কয়েকটি উৎসব। এসবের মধ্যে ফাল্গুনী পূর্ণিমা, গাজন, চড়ক পূজা, দোলযাত্রা, চৈত্রসংক্রান্তি অন্যতম। তবে বর্তমানে নানা প্রতিকূলতা ও গ্রামেগঞ্জে নগরায়ণের বিস্তার ঘটায় এসব উৎসব আর আগের মতো ঘটা করে পালিত হয় না।